ডেস্ক নিউজ : ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থেকে হাজিরহাট বাজার পর্যন্ত দুটি প্যাকেজে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫ হাজার মিটার সড়কে সংস্কারকাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কর্পেটিং করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সংস্কারের এক মাসেই কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুলারহাট বাজার থেকে আহাম্মদপুর ইউনিয়নের হাজিরহাট বাজার পর্যন্ত এক কোটি ৫৫ লাখ টাকায় ব্যয়ে দুটি প্যাকেজে পাঁচ হাজার মিটার রাস্তার সংস্কার করে কার্পেটিং করার কার্যাদেশ পান ভোলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তালুকদার এন্টারপ্রাইজ ও কামাল এন্টারপ্রাইজ। ওই দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি প্যাকেজের পাঁচ হাজার মিটার কাজ খরিদ করে ভোলার লাভু মিয়ার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই প্যাকেজের পাঁচ হাজার মিটারের মধ্যে ৩৫৪০ মিটার থেকে সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়।
অপর প্যাকেজের ২৮৪০ মিটারের কাজ চলমান রয়েছে। নিম্নমানের বিটুমিন, পাথর, সুড়কিসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে কার্পেটিং করায় কাজ সম্পন্ন হয়। তবে এর এক মাসের মধ্যে ওই প্যাকেজের প্রায় ১০০ মিটার সড়কের কার্পেটিং উঠতে শুরু করে। পাশাপাশি পুরো সড়ক জুড়েই দেখা দেয় ফাটল। স্থানীয় শিশুরা সদ্য সংস্কার করা সড়কের কার্পেটিং হাতে টেনে তুলতে দেখা যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কটি সংস্কার করেছেন। শুরু থেকেই এলাকাবাসী উন্নতমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানালেও ঠিকাদার তা আমলে না নিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়কে কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করেছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা প্রকৌশলীকে একাধিকবার জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। স্থানীয় বাসিন্দা শামসুদ্দিন জানান, সড়কটি সংস্কারের সঠিকভাবে কাজ না হওয়ায় শুরুতেই ঠিকাদারের নিয়োজিত লোকজনদের বাধা দেওয়া হয়। ওই কাজে তদারকিতে থাকা সহকারী উপসহকারী প্রকৌশলীকে (এসও) জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ঠিকাদার লাভু মিয়া জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভোলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তালুকদার এন্টারপ্রাইজ ও কামাল এন্টারপ্রাইজের কার্যাদেশ পাওয়া দুই প্যাকেজের সড়কের সংস্কারের কাজ তিনি খরিদ করে নেন। গত বছরে বর্ষার কারণে কাজ সমাপ্ত করা যায়নি। এ বছরে ওই সড়কের কাজ শুরু করেছেন। কাজের গুণগতমান ঠিকভাবেই করা হয়েছে।
তবে কি কারণে কার্পেটিং উঠে গেছে তা আমার জানা নেই। দু’এক দিনের মধ্যে কার্পেটিং উঠে যাওয়া স্থানগুলো সংস্কার করে দেওয়া হবে। তবে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. নুর হোসেন জানিয়েছেন, কার্পেটিং উঠে যাওয়া স্থানগুলো কয়েক দিনে মধ্যে সংস্কার করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে কার্পেটিং উঠে যাওয়া স্থানগুলো সংস্কার করা হবে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোশারেফ হোসেন জানান, শনিবারের মধ্যেই উঠে যাওয়া কার্পেটিং তুলে ফেলে ওই সড়ক নতুন করে সংস্কার করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/২রা জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৪:২১