আন্তর্জাতিক ডেক্স : সংবিধান সংশোধন করে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে আজীবন যেকোনো অপরাধ বা প্রশাসনিক অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনগত দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্বখ্যাত ইসলামী স্কলার ও পাকিস্তানের বরেণ্য আলেম মুফতি তাকি উসমানি। তিনি বলেছেন, ইসলামে কোন ব্যক্তি, তার পদ যত বড় হোক না কেন, কোনো সময় বিচারিক কার্যক্রমের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না।
সোমবার রাতে করাচিতে মজলিসে ইত্তেহাদে উম্মাত পাকিস্তানের এক পরামর্শমূলক সভায় মুফতি তাকি উসমানি এসব কথা বলেন। দেশটির সর্বমতের আলেমদের নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিশ্বখ্যাত এই ইসলামী স্কলার বলেন, আরোপিত ২৭তম সংশোধনীতে যেটি কুরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সাংঘর্ষিক- তা হলো রাষ্ট্রপতি এবং সেনাবাহিনীর সম্মানসূচক পদগুলো, যেমন ফিল্ড মার্শাল এবং যে দুটি নতুন পদ তৈরি করা হয়েছে;
সেগুলো যেকোনো ধরনের দণ্ডবিধি আইনের আওতায় ও যেকোনো ফৌজদারি আইনের অধীনে তাদের বিরুদ্ধে আজীবন কোনো মামলা দায়ের করা যাবে না। এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে না। এই সংশোধনী এমন একটি পদক্ষেপ; অন্তত আমার জানা মতে বিশ্বের কোনো সংবিধানে যার কোনো নজির নেই।
মুফতি তাকি উসমানি বলেন, সাধারণত আমরা দেখি যে, পাকিস্তানের ১৯৭৩ সালের সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল, সেটিও আমাদের দৃষ্টিতে আপত্তিকর ছিল এবং আমাদের সেই আপত্তি নথিভুক্ত করা আছে। কিন্তু তাতেও এমন বিধান ছিল যে, রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে যদি কোনো দণ্ডবিধিমূলক মামলা চালু থাকে, তবে রাষ্ট্রপতির মেয়াদকালে তার বিরুদ্ধে সেই মামলা চলত না। কিন্তু সব সাক্ষ্য-প্রমাণ রেকর্ড করে রাখা হতো। যখন তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অব্যাহতি পেতেন, তখন সেই অপরাধ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে মামলা চালানো যেত।
আর গোটা দুনিয়ার নিয়মও এমনই। কিন্তু আমাদের এই ২৭তম সংশোধনীতে তাকে আজীবন দায়মুক্তি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পবিত্র কুরআন, খোলাফায়ে রাশেদীনের আমল, এমনকি নবী করীমের (সা.) আমল, ইসলামী শিক্ষা এবং ন্যায়বিচার; সব দিক থেকেই এই সংশোধনী অত্যন্ত দুঃখজনক। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে গ্রেফতার ও বিচার থেকে আজীবন দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সমালোচকরা বলছে, এই পদক্ষেপের ফলে দেশটিতে স্বৈরতন্ত্রের পথ আরও প্রশস্ত হয়েছে।
কিউএনবি / মহন / ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫,/ সকাল ১১:০০