আলমগীর মানিক,রাঙামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাঙামাটিতে ব্যাপক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকালে জেলা শহরের জিমনেশিয়াম মাঠে আয়োজিত এ সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)-এর কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
সমাবেশের সভাপতি ও জেএসএস রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি ডা. গঙ্গা মানিক চাকমা বলেন, চুক্তির ২৮ বছর পেরিয়ে গেলেও গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। ভূমি কমিশনের কার্যক্রম স্থবির, পাহাড়ে এখনও ভূমি-সংক্রান্ত বিরোধ রয়ে গেছে। সমাবেশের প্রধান অতিথি, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেন, আমরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়, চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের পক্ষে আন্দোলন করছি। পাহাড়কে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। অথচ আমরা শান্তি চাই, রাজনৈতিক সমাধান চাই। তিনি বলেন, চুক্তির দাবি নিয়ে আন্দোলনে চার শতাধিক জেএসএস নেতা-কর্মী প্রাণ দিয়েছেন। এত আত্মত্যাগের পরও চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া পাহাড়িদের প্রতি অবিচার।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি জানান, তফসিল ঘোষণার পর জেএসএস নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং বিজয়ের লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, এমএন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি ভবতোষ দেওয়ান,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি রুমেন চাকমা, জেএসএস রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, “চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি ও উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকারকে দ্রুততম সময়ে উদ্যোগ নিয়ে চুক্তির অনিষ্পন্ন ধারাগুলো কার্যকর করতে হবে।”
প্রসঙ্গত: ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে জেএসএস সভাপতি মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (সন্তু লারমা)-র অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এর লক্ষ্য ছিল পাহাড়ে দীর্ঘদিনের সশস্ত্র সংঘাতের সমাপ্তি, আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা এবং ভূমি সমস্যা সমাধান করা। সমাবেশে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অভিমত ছিল চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নই হতে পারে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।
কিউএনবি/আয়শা/০৩ ডিসেম্বর ২০২৫,/বিকাল ৪:৩৪