ডেস্ক নিউজ : কোভিড মহামারির সময় বাড়তি ওজন কমাতে গিয়ে বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ব্রাজিলের আইনজীবী গ্যাব্রিয়েলা (ছদ্মনাম)। নিয়মিত জিম, কঠোর ডায়েট; সব কিছু করেও কয়েক কেজি ওজন কমছিল না। বন্ধুদের পরামর্শে শেষমেশ তিনি ভরসা করেন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই কেনা ওজন কমানোর ইনজেকশনের ওপর।
গ্যাব্রিয়েলার মতে, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর থেকেই খাদ্যাভ্যাসে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। সামান্য খাবারেই পেট ভরা মনে হতে থাকে। তবে ইনজেকশন বন্ধ করলেই আবার বাড়তে থাকে তার ওজন। এই কারণে প্রায় এক বছর ধরে তিনি প্রয়োজন অনুযায়ী কখনও ইনজেকশন নেন বলে জানান লন্ডনের খাদ্য ব্যবসায়ী অ্যান্ড্রুও (ছদ্মনাম)। তার ওজন স্বাভাবিক মাত্রার কাছাকাছি হলেও অনলাইন ফার্মেসি থেকে সহজেই তিনি ইনজেকশন পেয়ে যান। সামাজিক অনুষ্ঠান বা ছুটির পরিকল্পনার সময় শরীরের গঠন বজায় রাখতে ইনজেকশন নেওয়া বা না নেওয়ার এই বিষয়টি এখন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
ওজন কমানোর এই ইনজেকশনগুলো মূলত ডায়াবেটিস বা স্থূলতা চিকিৎসার জন্য অনুমোদিত। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ছাড়া, বিশেষত যাদের চিকিৎসাগত প্রয়োজন নেই; এমন মানুষদের ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসকরা জানান, অনিয়মিতভাবে ইনজেকশন নেওয়ায় বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বাড়তে পারে। বমি, পেটব্যথা, ডায়রিয়ার মতো সাধারণ প্রতিক্রিয়া ছাড়াও পিত্তথলির জটিলতা বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ হতে পারে। ওজন কমার সঙ্গে সঙ্গে পেশি ক্ষয়ের আশঙ্কা থাকে, যা পাতলা গড়নের মানুষদের ক্ষেত্রে বেশি।
ইনজেকশন বন্ধ করলে দেহের স্বাভাবিক ক্ষুধা সঙ্কেত ফিরে আসে, ফলে দ্রুত ওজন বেড়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, যারা শুধু চেহারার সৌন্দর্য বা সামাজিক চাপে এসব ওষুধ নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতাও বাড়তে দেখা যায়। ওজন ফের বেড়ে গেলে নিজেদের ব্যর্থ মনে করাসহ নানা হতাশা তৈরি হয়।
২০২৫ সালের শুরুতে যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনলাইন ফার্মেসিগুলোর ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ব্রাজিলেও অনুরূপ নিয়ম জোরদার হয়েছে। তবুও গ্যাব্রিয়েলা ও অ্যান্ড্রু দু’জনই জানিয়েছেন, ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তারা এই ইনজেকশন ব্যবহার চালিয়ে যেতে চান।
গ্যাব্রিয়েলা অকপটে বলেন, হয়তো আমি এটার ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছি। অ্যান্ড্রুর মতে, যতদিন প্রয়োজন, ততদিন ব্যবহার করব, এটা আমার কাছে হিসেব করা ঝুঁকি।
সূত্র : বিবিসি
কিউএনবি/অনিমা/ ০১ ডিসেম্বর ২০২৫,/বিকাল ৫:৫৬