বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নওগাঁর পত্নীতলায় র‌্যাব কর্তৃক মাদকদ্রব্য সহ একজন আটক দুর্গাপুরে প্রাথমিক শিক্ষকদের শাটডাউন চলমান,বিপাকে শিক্ষার্থীরা বোচাগঞ্জে পুকুরে ডুবে আড়াই বছরের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু স্বজনদের বুক ফাঁটা আহাজারি  নওগাঁয় জেলা পুলিশের অভিযানে ১শ’ গ্রাম হেরোইনসহ এক ব্যক্তি গ্রেফতার নওগাঁয় সদর-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন জাহিদুল ইসলাম ধলু আটোয়ারী আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা বেনাপোল ও গোগায় বিএনপি’র উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দোয়া মাহফিল ওয়াসিম আকরামের রেকর্ড নিজের দখলে নিলেন স্টার্ক ট্রাম্পকে নিজেদের দেশের জন্য খারাপ মনে করে জাপান-অস্ট্রেলিয়া ও ভারতীয়রা এবার জানা যাবে আহমেদ শরীফের চলচ্চিত্র জীবনের হাজার গল্প

পাঁচ লাখ বিদেশি কর্মী নেবে ইতালি, আবেদন করবেন কীভাবে?

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১০৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০২৬-২০২৮ সালের জন্য অনুমোদিত ইতালি সরকারের এই ফ্লো ডিক্রি বিদেশি কর্মীদের জন্য নিয়মিত অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু দেশটিতে প্রতারণা ও শোষণের ঘটনাও কম নয়। তাই বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ব্যবস্থা এখনও তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ।

ইতালি সরকারের এই ফ্লো ডিক্রিটি বিশ্লেষণ করেছে ইনফোমাইগ্রেন্টস। এই ডিক্রি অনুযায়ী, একজন অভিবাসী কর্মীর কোন কোন বিষয়গুলো জানা দরকার তা তুলে ধরা হলো।

ফ্লো ডিক্রি (ডেক্রেতো ফ্লুসি) হলো ইতালির সরকারের পরিকল্পনা, যা নির্ধারণ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে কত সংখ্যক কর্মী ইতালিতে কাজের জন্য আসার সুযোগ পাবেন এবং কী কী শর্ত আরোপ করা হবে।

২০২৬-২০২৮ সালের ডিক্রিটি চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে মৌসুমি ও অ-মৌসুমি (নন-সিজনাল) কর্মীসহ স্বনির্ভর কর্মীদের জন্য নানা নিয়ম যুক্ত করা হয়েছে।

নির্ধারিত কোটার বাইরেও শরণার্থী, পরিচর্যাকারী, রাষ্ট্রহীন মানুষের জন্য কিছু সুযোগ রাখা হয়েছে এই ডিক্রিতে।

এই তিন বছরে মোট চার লাখ ৯৭ হাজার ৫৫০টি কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। ফলে, বছর প্রতি এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৫০ জন করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দেবে ইতালি।

নিয়মিত অভিবাসনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় ইতালি সরকারের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। তিন বছরের নতুন ফ্লো ডিক্রিকে ‘শুধু উন্নয়ন নয়, এটি জীবনরক্ষাকারী ব্যবস্থা’ বলে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।

এক বিবৃতিতে আইওএম-র মহাপরিচালক অ্যামি পোপ বলেছেন, ‘‘এটি এমন এক সাহসী ও ভবিষ্যতমুখী নীতি, যা আমাদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। যখন দেশগুলো নিয়মিত অভিবাসনের পথ প্রসারিত করে, তারা শুধু শ্রম ঘাটতির সমাধানই করে না, বরং মানুষকে শোষণ ও অনিয়মিত পথের ফাঁদে পড়া থেকে রক্ষা করে। দায়িত্বশীলতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হলে, অভিবাসন হতে পারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম সহায়ক।’’

• যেসব খাতে নন-সিজনাল কর্মীদের নিয়োগ দেয়া হবে

• পরিবহন এবং সরবরাহ
• ধাতব ও যান্ত্রিক কাজ
• পর্যটন
• কৃষি ও কৃষিজ পণ্য
• নির্মাণ
• উৎপাদন

আত্মকর্মসংস্থানকারী ব্যক্তিদের জন্যও অতিরিক্ত পারমিট রয়েছে। উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, শিল্পী এবং স্টার্ট-আপ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ইতিমধ্যে, কিছু কোটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।এগুলোর মধ্যে যারা অগ্রাধিকার পাবেন:

• নিরাপদ অভিবাসনে ইতালির সঙ্গে সহযোগিতাকারী দেশগুলোর কর্মীরা
• ভেনেজুয়েলা বা অন্যান্য তালিকাভুক্ত দেশে ইতালীয় বংশোদ্ভূত কর্মীরা
• রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি এবং শরণার্থী
• পারিবারিক যত্ন এবং সামাজিক-স্বাস্থ্য সহায়তায় নিযুক্ত কর্মীরা

• অভিবাসী কর্মীদের জন্য যা কিছু নতুন

• নিয়োগে নতুন নতুন ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে
• উৎস দেশগুলোতে আরো বেশি প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে
• নিরাপদ এবং নিয়মিত অভিবাসনের সুযোগ তৈরিতে বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে শক্তিশালী সহযোগিতা বৃদ্ধি করা
• উচ্চ দক্ষ কর্মী আনার জন্য প্রণোদনা
• কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ পারমিটকে ওয়ার্ক পারমিটে রূপান্তরের সুযোগ দেয়া
• ডিজিটাল ব্যবস্থায় আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুততর করা

যদি কোনো ইতালীয় নিয়োগকর্তা একজন অভিবাসীকে এই প্রকল্পের অধীনে যোগ্য কর্মী হিসেবে নিয়োগ করতে চান, তাহলে ওই নিয়োগকর্তাকেই কর্মীর পক্ষে আবেদন জমা দিতে হবে। আলজেরিয়া, ভারত, মরক্কো, সেনেগাল, শ্রীলঙ্কা, পেরু, টিউনিশিয়া এবং ইউক্রেনের মতো বেশ কিছু দেশের সঙ্গে ইতালির এ সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে। কোনো অভিবাসী যদি এসব দেশের নাগরিক হন, তাহলে তারা অগ্রাধিকার পাবেন।

• মৌসুমী কর্মীদের যা জানা দরকার

মৌসুমী কর্মী হলেন এমন একজন, যিনি ইতালিতে অস্থায়ী কাজের জন্য আসেন এবং যা নির্দিষ্ট কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেমন:

• কৃষি (ফসল কাটা, রোপণ, খামারের কাজ)
• পর্যটন (হোটেল, রেস্তোরাঁ, গ্রীষ্মকালীন রিসোর্ট)

• সংরক্ষিত কোটা পাবেন যারা

যেসব দেশের সঙ্গে ইতালির অভিবাসন চুক্তি রয়েছে, সেসব দেশের কর্মীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

মূলত গত পাঁচ বছরে ইতালিতে কাজ করেছেন এমন মৌসুমী কর্মী এবং কৃষি বা পর্যটন শিল্পের প্রধান নিয়োগকারী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে আবেদনকারী কর্মীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

যদি কেউ ইতিমধ্যেই ইতালিতে মৌসুমী কাজ করে থাকেন, তাহলে তার নিয়োগের সুযোগ বেশি থাকবে। তাকে কয়েক বছর মেয়াদি মৌসুমী কাজের অনুমতিও দেয়া হতে পারে। নতুন কর্মীদের জন্য একজন নিয়োগকর্তাকেই আবেদন করতে হবে। তবে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে আপনি কোন দেশের নাগরিক, সেটা গুরুত্ব পাবে।

ইতালিতে আছেন এমন অভিবাসীদের জন্যও এবার সুযোগ রাখা হয়েছে। ২০২৬-২০২৮ সালের ডিক্রিতে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য বিশেষ সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে অগ্রাধিকারে থাকবেন:

• রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি এবং শরণার্থীরা, যারা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন
• যারা ইতালিতে পড়াশোনা করেছেন বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তাদের পারমিট পরিবর্তন করতে চান
• পারিবারিক যত্ন, সামাজিক স্বাস্থ্যসেবা, অথবা বয়স্ক/প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তাকারী কর্মী
• ইতালির সঙ্গে প্রত্যাবাসন বা অভিবাসন সহযোগিতা চুক্তি আছে এমন দেশ থেকে আসা মানুষেরা
• যদি কারো কোনো কাগজপত্র না থাকে, কিন্তু ওই ব্যক্তি গৃহস্থালির যত্ন, বয়স্কদের সহায়তা, অথবা সামাজিক-স্বাস্থ্য সহায়তায় কাজ করেন, তাহলে একজন নিয়োগকর্তা তার পক্ষে আবেদন করলে তাকে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। শরণার্থী এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিরাও বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে সুযোগ পেতে পারেন।

• নিয়োগকর্তাদের যা জানা দরকার

• নিয়োগকর্তাদের কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং বিশেষ কিছু দিন সম্পর্কে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।
• প্রতি বছর ২৩ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো প্রস্তুত করতে হবে 
• নির্ধারিত দিনগুলোতে (ক্লিক-ডে) আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
• ১২ জানুয়ারি – কৃষিখাতে মৌসুমী কর্মীদের আবেদন জমা দিতে হবে
• ৯ ফেব্রুয়ারি – পর্যটনখাতে মৌসুমী কর্মীদের আবেদন জমা দিতে হবে
• ১৬ ফেব্রুয়ারি – অ-মৌসুমী কর্মী, ইতালির সঙ্গে যেসব দেশের অভিবাসন সহযোগিতা চুক্তি, সেসব দেশের নাগিরকদের আবেদন জমা দিতে হবে
• ১৮ ফেব্রুয়ারি – অন্যান্য অ-মৌসুমী কর্মীদের আবেদন জমা দিতে হবে

আবেদনের সঙ্গে মজুরি, বাসস্থান এবং বিদেশী কর্মীদের প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ জমা দিতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ এবং শ্রম চুক্তি মেনে চলতে হবে। নিয়োগকর্তারা নিম্নলিখিত শর্ত মেনে আবেদন না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে:

• ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কোটার আবেদন সম্পন্ন না হলে
• ছয় মাসের মধ্যে ভিসা ইস্যু করা না হলে
• প্রয়োজনীয় তথ্য সংযুক্ত না করলে

• প্রতারণা এবং জালিয়াতি

একটি পাচারবিরোধী হটলাইন তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে ২০২৪ সালকে ‘প্রতারণার বছর’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এসব প্রতারণার অনেক ক্ষেত্রে ফ্লো ডিক্রির সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, মধ্যস্থতাকারীরা নিজেদের এজেন্ট বা নিয়োগকর্তা পরিচয় দিয়ে চাকরির আবেদন, কাজের চুক্তি বা ভিসা ইস্যু সংক্রান্ত নানা কারণ দেখিয়ে অভিবাসীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। একবার টাকা পাঠানো হলেই তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায় না।

তিউনিশিয়া, মরক্কো, ভারত এবং মিসর থেকে আসা অন্তত ১৩৯ জন অভিবাসী কর্মী এই ধরণের জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যাটি আরো বেশি হতে পারে। এসব জালিয়াতির কারণে শ্রম শোষণের বেড়েছে। ইনফোমাইগ্রেন্টস।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩০ নভেম্বর ২০২৫,/রাত ১১:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit