ডেস্ক নিউজ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহপাকের। অসংখ্য দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবী মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের ওপর। আল্লাহর ইবাদত করা নারী-পুরুষ সবার জন্য ফরজ। পুরুষের মতো একজন নারীকেও তাঁর আমলের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। যেমন তার ফরজ কাজের হিসাব নেওয়া হবে তেমনি বেশি বেশি নফল আমল এবং সৎকর্মশীল হওয়া একজন নারীর জন্যও প্রযোজ্য। নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী সত্যবাদী পুরুষ ও নারী ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়াম পালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হিফাজতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহর অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান (আহজাব-৩৩-৩৫)। কাজেই পুরুষের মতো নারীদেরও তাদের নিজের আমল করতে হবে এবং তাদেরও আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করতে হবে। তাদের নিজেকে এমন কিছু নিয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে, যা তার জন্য উপকারী এবং ক্ষতিকর কাজ ও কথা থেকে নিজকে দূরে রাখতে হবে। একই সঙ্গে পর্দা মেনে চলার ব্যাপারে আল্লাহর বিধান মেনে চলতে হবে। নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে এজন্য ইসলাম প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে (বুখারি-৪৭৯৫)। তবে বাইরে কীভাবে পর্দা করে যেতে হবে তা সুস্পষ্টভাবে আল্লাহতায়ালা বলে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, হে নবী আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদের বলে দিন তারা যেন তাদের জিলবারের কিছু অংশ নিজেদের ওপর ঝুলিয়ে দেয় (আহযাব-৫৯)। জিলবার হচ্ছে এমন পোশাক যা পুরো শরীরকে আচ্ছাদিত করে। ইবনে আব্বাস (রা) এই আয়াতের ব্যাখ্যা করেছেন অর্থাৎ নারীদের নিজের মুখমণ্ডলসহ সারা শরীর আচ্ছাদিত করতে হবে বিশষ করে সে যদি ঘরের বাইরে এমনকি মসজিদে গেলেও নিজেকে পরিপূর্ণভাবে আচ্ছাদিত রাখতে হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন ‘আল্লাহর মহিলা বান্দাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করেননি যদিও ঘরই তাদের জন্য উত্তম তার জন্য ঘরে সালাত পড়া মসজিদের চেয়ে উত্তম। কারণ ঘরে সালাত পড়লে লোকদের দৃষ্টি থেকে আড়ালে থাকবে। আর তাকে মসজিদে যেতে বাধা দেওয়া যাবে না, তবে অবশ্যই তাকে পর্দানশীল হয়ে নম্রতার সঙ্গে যেতে হবে কারণ মহিলা সাহাবিগণ তোমাদের রসুল (সা.) সঙ্গে সালাত আদায় করতেন এবং তারা এমনভাবে নিজেদের আচ্ছাদিত করতেন যে মনে হতো প্রত্যেকের মাথার ওপর কাক বসে আছে।
তাই একজন মুসলিম নারীর উচিত পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে ঘরের বাইরে বের হওয়া। যদি সে হিজাবের ব্যাপারে অবহেলা করে তাহলে শয়তান তাকে অনুসরণ করবে (তিরমিযি-১১৭৩)। রসুল (সা.) আরও বলেন, ‘সবচেয়ে নিকৃষ্ট নারী তারাই যারা পর্দাহীনভাবে চলাফেরা করে (বায়হাকি-১৩২৫৬)। পর্দাসহকারে চলা নারীর দিকে জিন, শয়তান ও মানুষ শয়তান তাকাতে পারে না- তাই তাকে ক্ষতি করতে পারবে না। সুতরাং বেপর্দা হয়ে চললে সে ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং সে ফাসিকদের কাছে নিজেকে ঝুঁকিয়ে দেবে। আর যারা পর্দানশীল তারা ফাসিকদের দ্বারা হয়রানির স্বীকার হবে না। আল্লাহ বলেন, যখন তোমরা (পুরুষ) নবী-পত্নীদের কাছে কোনো সামগ্রী চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে এটা তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র (আহজাব-৫৩)। এই আয়াতের বিধান সমগ্র মুসলিম উম্মতের জন্য ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য।
তাই মুসলিম নারীদের ওপর আল্লাহ সুবহানুতায়ালার তাকওয়া অর্জন করা আবশ্যক। পর্দা পালন করা মুসলিম নারীদের ওপর ফরজ। তাই আমাদের প্রত্যেকের স্ব-স্ব মা-বোন ও কন্যা সন্তানদের হিজাব পরিধান করে চলার নির্দেশ দেওয়া আবশ্যক নতুবা আমরাও ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে শামিল হয়ে যাব। আল্লাহ আমাদের পরিবারের মহিলাদের আল্লাহর তাকওয়া অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন।
লেখক : ইসলামিক গবেষক
কিউএনবি/অনিমা/২৭ নভেম্বর ২০২৫,/সকাল 8:১০