স্পোর্টস ডেস্ক : বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৮টায় জাতীয় স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামবেন হামজা-শমিতরা। আগের দিন অনুশীলন শেষ করে সংবাদ সম্মেলনে এলেন জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। সেখানে ঘুরেফিরে আসে ভারত ম্যাচের প্রসঙ্গ।
আগামী ১৮ নভেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তারই প্রস্তুতি হিসেবে নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ভারত ও বাংলাদেশ- দুই দলেরই এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে আগেই। এখন অপেক্ষা কেবল শেষটা রাঙানোর। বর্তমানে বাংলাদেশ ২ পয়েন্ট নিয়ে আছে ‘সি’ গ্রুপের তৃতীয় স্থানে। সমান পয়েন্ট নিয়ে ভারতের অবস্থান তলানিতে।
চলতি বছরের মার্চে শিংলয়ে এই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাছাই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। লাল-সবুজের জার্সিতে হামজা চৌধুরীর অভিষেকের সেই ম্যাচটা অবশ্য গোলশুন্য ড্র হয়েছিল। এরপর সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের বিপক্ষে হেরে যায় বাংলাদেশ। চতুর্থ রাউন্ডে হংকংয়ের বিপক্ষে ফিরতি লেগের ড্রয়ে শেষ হয়ে যায় বাছাই পেরুনোর স্বপ্ন।
এখন কেবল শেষটা ভালো করার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। এজন্য নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটি কাবরেরার কাছে পাচ্ছে বাড়তি গুরুত্ব। কেননা নেপালের বিপক্ষে জয় যোগাবে ভারত ম্যাচের আত্মবিশ্বাস। কাবরেরা বলেন, ‘দল ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত দলের সবাইকে ক্যাম্পে একসাথে পেয়েছি। শমিত যোগ দিয়েছে, গতকাল যোগ দিয়েছে হামজা। সবাই প্রস্তুত। চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতির জন্য আমরা কয়েকটা ভালো সেশন পেয়েছি। আগামীকালের (বৃহস্পতিবার-১৩ নভেম্বর) ম্যাচের জন্য ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি নিশ্চিত, আমরা যে ম্যাচটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, ১৮ নভেম্বর ভারত ম্যাচের জন্য এটা খুবই ভালো একটা পরীক্ষা হবে।’
‘আমাদের জয়ের মানসিকতা থাকতে হবে। গত কয়েকটা ম্যাচ আমরা জয়ের খুব কাছাকাছি ছিলাম…(কিন্তু জয় মেলেনি), তবে আমাদের জেতার মানসিকতা থাকতে হবে। এটার শুরু আশা করি আগামীকাল নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে হবে।’ ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে দুদিন দলের সাথে অনুশীলন করেছেন হামজা চৌধুরী। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে কানাডা থেকে ঢাকায় এসে আজ সন্ধ্যায় প্রস্তুতি নিয়েছেন শমিত সোম। ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে বিশেষ করে প্রবাসীদের যতটা সম্ভব ‘ম্যাচ টাইম’ দিতে চেয়েছেন কাবরেরা। পরখ করে নিতে চেয়েছেন, নিজেদের মধ্যে বনিবনা কতটকু হলো, সেটাও।
‘প্রস্তুতির জন্য হামজা তুলনামূলকভাবে বেশি সময় পেয়েছে, শমিত কয়েকদিন আগে ম্যাচ খেলেছে এবং লম্বা ভ্রমণ করে এসেছে। কিন্তু আমি মনে করি, আমরা কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি এবং এরপর তাদের নেপালের বিপক্ষে খেলানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’ প্রীতি ম্যাচটি বাংলাদেশের খেলার কথা ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। নানা জটিলতায় আফগানরা না আসায় খেলতে হচ্ছে নেপালের বিপক্ষে।
দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার ক্লাব দলে (নেপালি ফুটবলার) আছে চার জন। এমনকি ক্লাবেও ওদের সাথে থাকি। আমরা ওদের হালকাভাবে নিচ্ছি না। কঠিন প্রতিপক্ষ। ওদের থাকা বরং আমাদের জন্য সুবিধা।’ ‘এখন তো ম্যাচ ৯০ মিনিটের নয়, আরও পাঁচ-ছয় মিনিট অতিরিক্ত সময় থাকে। আমাদের শেষ মুহূর্তে গোল খাওয়াটা দেখাচ্ছে আমাদের সরাক্ষণই সতর্ক থাকতে হবে। ৯৭ মিনিট খেলা হলে ৯৭ মিনিটই মনোযোগ ধরে রাখতে হবে।’
নেপাল কোচ হরি খাড়কারও আছে বাংলাদেশের বিপক্ষে এবং ঢাকার ক্লাব ফুটবলে খেলার অতীত। অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বললেন, দুই দলের ম্যাচ সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। ‘বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ সবসময় চ্যালেঞ্জিং। এখন হামজা ও অন্যান্য খেলোয়াড় যোগ হয়েছে, তো বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ একটা দল। তবে আমরা তাদের নিয়ে ভীত নই। কেননা, ফুটবল একটা দলীয় খেলা। এখানে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের মূল্য আছে, কিন্তু দিন শেষে এটা দলীয় খেলা। আমরা আগামীকালের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত।’
কিউএনবি/আয়শা/১২ নভেম্বর ২০২৫,/রাত ১১:৩৩