দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় মসজিদের ইমাম দম্পত্তিকে রাতভর নির্যাতন ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক অভিযুক্ত সৈয়দ মিস্ত্রীর ছেলে মো. রুবেলকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- মো. জলিলে ছেলে মো. জহিরুল (২৭) ও আ. সাত্তার মেম্বারের ছেলে মো. পলাশ (২৬)। অভিযুক্ত সকলেই উপজেলার সুতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে এ ঘটনায় মামলা দায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন দুর্গাপুর থানার ওসি মো. মাহামুদুল হাসান। তিনি বলেন, একজনকে গ্রেফতার করে ইতোমধ্যে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি চেষ্টা অব্যাহত আছে। এরআগে গত ১ অক্টোবর দিনগত রাত ২টা থেকে পরের দিন ভোর সাড়ে ৬টার পর্যন্ত ভুক্তভোগী ইমাম দম্পত্তি নির্যাতন ও শ্লীলতাহানীর শিকার হন।
ভুক্তভোগীরা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮) ও তার স্ত্রী (২৬)। আব্দুল্লাহ আল মামুন জেলার পূর্বধলা উপজেলার খারছাইল গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে এবং দুর্গাপুরের সুতিয়াপাড়া নূরানী ও হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক এবং সুতিয়াপাড়া মসজিদের ইমাম ও খতিব। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন পাঁচ মাস পূর্বে সুতিয়াপাড়া নূরানী ও হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক এবং সুতিয়াপাড়া মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন।
গত ছয়-সাত দিন পূর্বে মাদরাসা ও মসজিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির অন্যান্য লোকজনের অনুমতি স্বাপেক্ষে ভুক্তভোগী তার স্ত্রীকে নিয়ে আসার অনুমতি পান এবং মাদরাসার পার্শ্বে পৃথকভাবে টিনসেড ঘর তৈরি করেন। গত ১ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী তার স্ত্রীকে বাড়ি হতে মাদরাসায় নিয়ে আসেন। ক্যাশিয়ার তার নিজ বাড়িতে হতে তাদের জন্য ওই দিন রাতের খাবার পাঠান। রাতের খাবার শেষে ভুক্তভোগী ও তার স্ত্রীকে নিয়ে মাদরাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। দুদিন বন্ধ থাকায় মাদরাসায় শুধুমাত্র দুজন ছাত্র ছিল।
তারা মাদরাসার ফ্লোরে বিছানা পেতে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে রাত অনুমান ২টার দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল যোগে মাদরাসা এসে নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকে। ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে মাদরাসার দরজা খুললে ভুক্তভোগী অভিযুক্ত ব্যক্তিগণকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন এবং দরজা খোলামাত্র অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে অনধিকারভাবে মাদরাসার কক্ষে প্রবেশ করে এবং স্ত্রীকে দেখিয়া ভুক্তভোগীর উপর রাগান্বিত হয়। পনের হাজার টাকা দাবি চাঁদা দাবি করে এবং এলোপাথারী কিল- ঘুষি মেরে ভুক্তভোগীর শরীরের নানাস্থানে ফোলা জখম করে এবং অভিযুক্ত মো. পলাশ ভুক্তভোগীর স্ত্রী’র পড়নের কাপড় ধরে টানা হেঁচড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটায়।
এতে বাধা দিলে অভিযুক্তরা মারপিট করে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায় এবং মোবাইল দিয়ে ভুক্তভোগী দম্পত্তিকে নানা রকম প্রশ্ন ও ভিডিও ধারণ করে। একপর্যায়ে অভিয্ধুসঢ়;ক্ত মো. পলাশ মাদরাসায় ঘুমন্ত দুজন ছাত্রকে ডাক দিয়ে তুলে এবং নাম ও পরিচয় জিজ্ঞাসা করে একজন ছাত্রের গালে চর-থাপ্পর মারে।
অভিযুক্তরা মাদরাসায় অনুমান চার ঘন্টার বেশি অবস্থান করে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ওই দম্পত্তিকে নানা রকম হুমকি দেয় এবং এ বিষয়ে কাহরো কাছে বিচার কিংবা মামলা মোকদ্দমা করলে ভুক্তভোগী ও তার স্ত্রীকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায় অভিযুক্তরা। পরে সকালের দিকে মাদরাসার আশপাশের লোকজন আসলে তাদের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
কিউএনবি/আয়শা/২২ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:২৪