বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন

আশুলিয়ায় ভয়াবহ আগুন; ব্যাবসায়ীদের আহাজারি  

মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি ।
  • Update Time : রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২৬ Time View
মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার আশুলিয়ায় জিরানী বাজারে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে ব্যবসায়ীরা তাদের সর্বস্ব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ব্যাংক ও সমিতি থেকে লোন এনে মুনাফার আশায় সেই টাকা ব্যাবসায় বিনিয়োগ করেন। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে তাদের সেই স্বপ্ন ম্লান হয়ে যায়।
সব হারিয়ে একদিকে পরিবার নিয়ে কিভাবে চলবেন, অন্যদিকে লোনের টাকা পরিশোধ করতে হবে এই নিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আদৌ কি এই ক্ষতি কাটিয়ে আগের মত অবস্থায় ফিরে আসতে পারবেন? তবে ব্যাংক ও সমিতি থেকে তাদের লোনের টাকা মওকুফ করলে কিছুটা হলেও চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়া যাবে বলে এমনটাই  আশাবাদ ব্যাক্ত করেন ব্যাবসায়ীরা। অন্যদিকে সরকার থেকে অনুদান পেলে কিছুটা হলেও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে ভুক্তভোগী ব্যাবসায়ীদের আহাজারি।
দোকান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত ১১ টা সাড়ে ১১ টার দিকে দোকানপাট বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান তারা। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আগুনের খবর পেয়ে ছুঁটে আসেন বাজারে। দোকানীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে এবং ফায়ারসার্ভিসে খবর দেন। পরে খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস থেকে প্রথমে ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দেন।
তবে আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পরে জিরাবো ফায়ার সার্ভিস থেকে আরো ২টি সহ মোট ৫টি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেন। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।  আগুন পুরোপুরি নিভাতে আড়াই ঘন্টার মত সময় লাগে। আগুনের ঘটনায় টিনের লাইব্রেরি, কাপড়ের জুতার ও মুদির দোকান সহ অন্তত ১৭ টি দোকানে থাকা সমস্ত মালামাল পুড়ে যায়। এতে কোটি-কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যাবসায়ীদের দাবী।
সামি লাইব্রেরির মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার দোকানে অন্তত এক কোটি টাকার উপরে মালামাল ছিল বলে দাবী করেন। সাদ্দাম হোসেনের মুদি দোকানে মাস দুয়েক আগে ২২ লাখ টাকা এনজিও থেকে লোন করে মালামাল উঠিয়েছেন, আহাদ নূর আলমের মুদি দোকানে প্রায় ৫০ লাখ, মাহাবুবের মুদি দোকানে ৫০ লাখ, জুম্মান মুন্সী মুদি দোকানে ২০-২২ লাখ, জুবায়েরের মুদি দোকানে ১৮-২০ লাখ, আশরাফ মিয়ার মুদি দোকানে ১৫লাখ, আবুলের মুদি দোকান ও শাহিনের মুদি দোকান সহ অন্তত কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের দাবী।  
এছাড়া বাজারের বাইরে কেরু বেপারী মার্কেটের ইমরুলের কাপড়ের দোকান, লিজু মোল্লার কাপড়ের দোকান, মঞ্জুর কাপরের দোকান, আব্দুস সবুরের জুতার দোকান এবং আরিফের জুতার দোকানে আগুন লাগে।  এতে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।দোকান মালিকদের দাবী, তারা বিভিন্ন ব্যাংক এবং এনজিও থেকে লোনে টাকা নিয়ে দোকানে মালামাল তুলেছিল। এখন তারা নি:স্ব হয়ে গেছে। সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা। 
এবিষয়ে ডি-ইপিজেড ফায়ার-সার্ভিসের সিনিয়র ষ্টেশন অফিসার প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, আগুনের খবর পেয়ে ডিইপিজেড থেকে ৩টি এবং পরে জিরাবো ফায়ার-সার্ভিস থেকে আরো ২টি ইউনিট ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুন নির্বাপণ করতে সময় লাগে প্রায় আড়ায় ঘন্টা। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে বলেও তিনি জানান। 

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১২ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১১:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit