শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে নবীজির অবদান

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪১ Time View

ডেস্ক নিউজ : তিনি এসেই ঘোষণা করেন, মানুষ সবাই আল্লাহর সৃষ্টি, তাই সবাই সমান; কেবল তাকওয়া বা নৈতিকতার ভিত্তিতেই মানুষ মর্যাদাবান। এই নীতি ছিল আদর্শ সমাজ গঠনের ভিত্তি।

আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম মানুষের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার কাজ শুরু করেন। তিনি হৃদয়ে আল্লাহর একত্ববাদের আলো জ্বালিয়ে দেন। এতে ভেঙে যায় ভেদাভেদ, দূর হয় বৈষম্য, প্রতিষ্ঠিত হয় মানবিক মর্যাদা। মদিনায় তিনি যে সমাজ গড়ে তোলেন, তা ইতিহাসের প্রথম সংবিধানভিত্তিক রাষ্ট্র—যেখানে মুসলিম, ইহুদি, খ্রিষ্টান সবাই নাগরিক হিসেবে সমঅধিকার ভোগ ক রত।

নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা

নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন বিপ্লবী। কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়ার মতো নৃশংস প্রথা বিলুপ্ত করেন। তিনি ঘোষণা করেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম।

তিনি নারীর শিক্ষা, উত্তরাধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। ফলে নারী সমাজ অবহেলিত হওয়া তো দূরের কথা, তারা বরং সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।


ন্যায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শোষণমুক্ত একটি সমাজব্যবস্থা কায়েম করেন। সুদ, প্রতারণা ও অবিচারকে নিষিদ্ধ করেন। জাকাত, সদকা ও ওয়াকফের মাধ্যমে সম্পদের সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করেন। তিনি শ্রমের মর্যাদা ঘোষণা করেন এবং বৈধ উপার্জনকে বরকতময় জীবনের চাবিকাঠি বানান।
ন্যায়বিচার ও আইনশৃঙ্খলা

আইন-শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচারে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন আপসহীন। তিনি ঘোষণা করেন,
আমার কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করে, আমি তার হাত কেটে দেব। এর মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দেন, ন্যায়বিচারে পক্ষপাতহীনতাই একটি সভ্য সমাজের মূল ভিত্তি। তার শাসনে ধনী-গরিব, শক্তিশালী-দুর্বল, সবাই ছিল সমান আইনের আওতায়।

কল্যাণকামী আদর্শ সমাজের দৃষ্টান্ত

সংক্ষেপে বলতে গেলে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা ছিল ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার, সমতা ও কল্যাণকামী আদর্শ সমাজ। আজ যখন আমরা বৈষম্য, অবিচার ও নৈতিক অবক্ষয়ে ভুগছি, তখন নবিজীর আনা শিক্ষাই আমাদের পথ দেখাতে পারে। যদি আমরা তার নীতি অনুসরণ করি, তবে আবারও শান্তি ও কল্যাণভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

লেখক: অনুবাদক ও গবেষক, শিক্ষার্থী: ইসলামি আইন বিভাগ, জামিয়া শারইয়্যা মালিবাগ ঢাকা

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /সন্ধ্যা ৭:৫০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit