ডেস্ক নিউজ : নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যারা গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন কিংবা গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে আন্দোলন করেছেন, সবার চাওয়া ছিল একটি— ফ্যাসিবাদের পতন। সেই ফ্যাসিবাদের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। কিন্তু আমরা চাই না, এই সরকারও আগের তিনটি নির্বাচনের মতো আরেকটি তামাশার নির্বাচন উপহার দিক। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য ও গুণগত নির্বাচন চাই।
দৈনিক যুগান্তর আয়োজিত ‘সরকারের এক বছর : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনাসভায় তিনি বলেন, এ নির্বাচন আয়োজনের জন্য যে যে সংস্কার দরকার, তা এখনই করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা যদিও একটি সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, সেটি ইউনিক বা ব্যতিক্রমধর্মী বটে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আজ অবধি একটি সংস্কারও তিনি সম্পূর্ণ করতে পারেননি।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
পুলিশের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করে মান্না বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে বলেননি, যে অন্যায় করেছে, তার বিচার হবে— বাকিদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। বরং কোনো রকম পুনর্গঠনের উদ্যোগ ছাড়াই পুলিশকে রেখে দেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা জানি না, তারা কী করবে। এখন আমরাই নিজেদের রক্ষক, আমরাই প্রতিদ্বন্দ্বী, আমরাই প্রধান খেলোয়াড়।
তিনি আরও বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার গত এক বছরে বড় কিছু করতে পারেনি। আগামী ছয় মাসে পারবে— সেটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না। বরং যদি হঠাৎ করে বলে বসে— এই না হলে নির্বাচন হবে না, তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
সংবিধান ও সংস্কার নিয়ে সংশয়
মান্না বলেন, সংবিধান সংস্কার করতে হলে তা সংসদে পাস করাতে হবে। কিন্তু যেসব দল নির্বাচনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে, তারাই এসব সংস্কারের বিরোধিতা করছে। ১৯টি মৌলিক সংস্কারের মধ্যে তারা ১০টিই মানে না। এখন আপাতত সবাই একসঙ্গে চলার চেষ্টা করছে বলেই কিছুটা সম্মতি মিলছে। কিন্তু নির্বাচনের পর যখন সংসদ গঠিত হবে, তখন এসব সংস্কারের কী হবে?
বিএনপির অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নাগরিক ঐক্য সভাপতি। তিনি বলেন, আমরা কি বিএনপিকে জিজ্ঞেস করেছি, তারা যেসব সংস্কারের বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, ক্ষমতায় গেলে তারা সেগুলো মানবে কিনা? ইয়েস বলবে, নাকি আবারও ‘নো’ বলবে? এই প্রশ্নগুলো এখন থেকেই সামনে আনা জরুরি।
মান্না মনে করেন, কেবল ফ্যাসিবাদের পতন নয়, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়তে হলে এখন থেকেই সুস্পষ্ট সংস্কার এজেন্ডা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।
কিউএনবি/আয়শা/৫ আগস্ট ২০২৫/রাত ১০:০৮