রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার বিমান হামলা তীব্র করেছে। বৃহস্পতিবার রাতভর তারা ৪০০ টিরও বেশি ড্রোন এবং ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে আটটি ব্যালিস্টিক এবং ছয়টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ যখন লোকেদের বোমা আশ্রয়কেন্দ্র এবং বেসমেন্টে লুকিয়ে থাকার আহ্বান জানাচ্ছিল, তখন টোদুরভ এবং তার কর্মীরা কিয়েভের ওখমাতডিত শিশু হাসপাতাল থেকে ১০ মাইল গাড়ি চালিয়ে শহরের হার্ট ইনস্টিটিউটে যান। যখন তাদের চারপাশে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন উড়ছিল।
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী বেশিরভাগ রাশিয়ার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে বা নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হলেও, বৃহস্পতিবারের হামলায় দুইজন নিহত এবং আরও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার কিয়েভে রাশিয়ার হামলা ছিল ভয়াবহ হামলার সর্বশেষ ঘটনা। ঠিক তার আগের দিন, মস্কো এক রাতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ৭০০ টিরও বেশি ড্রোন উৎক্ষেপণ করে – যা একটি নতুন রেকর্ড।
ওই হামলার মধ্যে হার্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক টোদুরভ এবং তার দল দুই রাত অক্লান্ত কাজ করেন। বুধবার ইনস্টিটিউটে অস্ত্রোপচারের পর, তিনি ওখমাতডিত যান এবং সেখানে শিশুটির ডোনারের হার্ট অপারেশন করা হয়। এরপর নিজ দায়িত্বে তিনি সেই অর্গানটি নিয়ে ছুটে আসেন। কিয়েভে হামলার সময় সেতু দিয়ে ডিনিপ্রো পার হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক, তাছাড়া এ সময় ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ান ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ভূপাতিত করার জন্য পাল্টা হামলা চালায়।
এ সময় একটি ভিডিওতে দেখা যায়, টোদুরভ যে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন সেই রাস্তার পাশে একটি বিশাল আগুন জ্বলছে।টোদুরভ শান্তভাবে বলেন, ‘আমরা একটি হৃদয় বহন করছি।’এমনকি রাজধানী কিয়েভের উপর রাশিয়ার আক্রমণ তখনও চলছিল, যখন টোদুরভ হার্ট ইনস্টিটিউটের অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন। একটি বিশাল মেডিকেল টিমের নেতৃত্ব দেন এবং তার রোগীর শরীরে হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেন।
এটি একটি অসাধারণ মুহূর্ত ছিল যা ক্যামেরায় ধারণ করা হয় এবং সিএনএন-এর সাথে শেয়ার করা হয়।
শহরজুড়ে রাশিয়ার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির কয়েক ঘন্টা পরে দেখা যায়, শিশুটির শরীরে একটি নতুন হৃদপিণ্ড স্পন্দিত হচ্ছে।
ডাক্তার বলেন, ‘হৃদপিণ্ড কাজ করছে, এবং প্রেসার স্থিতিশীল আছে। আমরা আশা করি শিশুটি (রোগী) সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং দীর্ঘ জীবন পাবেন।’
পরে ইউক্রেনীয় ট্রান্সপ্লান্ট কোঅর্ডিনেশন সেন্টার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দাতা ছিল চার বছর বয়সী একটি মেয়ে যাকে গুরুতর আঘাতের পর মেডিকেল কাউন্সিল তার মস্তিষ্ক মৃত ঘোষণা করেছিল।
মেয়েটির মা, যিনি নিজে একজন চিকিৎসাকর্মী, তার মেয়ের অঙ্গ দান করতে সম্মত হয়েছিলেন।
সূত্র: সিএনএন