বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৭:০১ অপরাহ্ন

দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা চট্টগ্রাম নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র সবাইকে রুখে দাঁড়াবে হবে

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫
  • ২ Time View
জালাল আহমদ, চট্টগ্রাম থেকে : দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা চট্টগ্রাম নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র সবাইকে রুখে দাঁড়াবে হবে ।ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় অর্থনৈতিক জোনে ভারতের জন্য বরাদ্দকৃত ভূমি বাতিল করতে হবে। আজ ১৮জুন(২০২৫) বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর উদ্যোগে “ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও অর্থনৈতিক জোনে ভারতের জন্য বরাদ্দকৃত ভূমি বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক নাগরিক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

নাগরিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য,চট্টগ্রাম মহানগরীর সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী,মুখ্য আলোচক ছিলেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আশরাফ আলী নিজামপুরী,পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান মুজিব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড.কাজী মোঃ বরকত আলী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি ,এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এড. গোলাম ফারুক, সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায প্রধান সমন্বয়ক,খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ সোহায়েল, জনসংহতি আন্দোলনের সংগঠক অ্যাডভোকেট ফাহিম শরিফ খান প্রমুখ।

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের উপদেষ্টা এডভোকেট পারভেজ তালুকদারের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনায় ছিলেন প্রভাষক এম.শাজাহান সাজু।এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ও স্থানীয় রাজনীতিবিদ,সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আইনজীবী, ছাত্র প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর সাবেক আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “আমরা ইতিহাস ভুলে যাওয়া জাতি।

পলাশী যুদ্ধের ইতিহাস, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার ইতিহাস , ফরায়েজী আন্দোলনের ইতিহাস আমরা ভুলে গেছি।পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সংকট অবস্থা বিরাজ করছে।পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মানুষ কে জিম্মি করে টাকা আদায় করছে।মুক্তিপণ আদায় করছে।পার্বত্য চট্টগ্রামের সংকট সমাধানে লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে ।পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের কল‍্যাণে নাগরিক সভার এই আলোচনা রাজপথে নিয়ে যেতে হবে। সুশীল সমাজের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তরুণদের কাছে নিয়ে যেতে হবে”।

মুখ্য আলোচক হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ এর চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমান বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের ভূখন্ড থেকে আলাদা করার জন্য উপজাতি সন্ত্রাসী জেএসএস ও ইউপিডিএফ এর মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভারত।নতুন করে ষড়যন্ত্রকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রক্সি যুদ্ধ করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সংগঠন দুটি আবারও তাদের পুরনো রূপে ফিরে গিয়ে নতুনভাবে সশস্ত্র প্রস্তুতি শুরু করেছে।

পাহাড়ে নিরীহ বাঙালি ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করছে। গোপন বৈঠক, চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং সশস্ত্র মহড়ার মাধ্যমে এলাকায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে তারা। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও এই বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। সংগঠন দুটি পাহাড়ে আরাকান আর্মির অবাধ বিচরণের সহযোগিতা করছেন এবং আরাকান আর্মির প্রত্যাক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে আদিবাসী আধিপত্য প্রতিষ্ঠার নামে স্বশাসিত অঞ্চল কিংবা স্বাধীনতার দাবিকে সামনে এনে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড কাজী মো: বরকত আলী বলেন ,সন্তু লারমার মেয়ে আমেরিকায় বসে ষড়যন্ত্র করছে।বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তে ইউএনডিপি, ইউনিসেফের সহায়তায় কিছু পাহাড়ি জনগোষ্ঠী কে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীতে পরিণত করেছে।তাদের উদ্দেশ্য পার্বত্য চট্টগ্রামে “জুম্মল‍্যান্ড নামে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তিনি আরো বলেন,চট্টগ্রাম অর্থনীতির প্রাণভোমরা ।তাই এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সবাই মিলে এটা কে রক্ষা করতে হবে।

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাই এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতকে প্রায় ৯৯০ একর জমি বরাদ্দ দেয় আওয়ামী সরকার, যা বাংলাদেশের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ। ভারতের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনার অংশই ছিলো বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক স্থান গুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। বিশেষত, ফেনী থেকে মিরসরাই পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার প্রতি ভারতের গভীর নজর রয়েছে যা বাংলাদেশের জন্য ‘চিকেন নেক’ (Chicken Neck) হিসেবে পরিচিত।

তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল প্রকল্পটির জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হয়, ২০২২ সালের এপ্রিলে বেজা ও আদানি পোর্টস এবং এসইজেড লিমিটেডের মধ্যে ডেভেলমেন্ট এগ্রিমেন্ট বিষয়ক একটি চুক্তি ভারতের মুম্বাইয়ে স্বাক্ষরিত হয়। সম্প্রতি ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার। অথচ ভারতকে দেয়া মিরসরাইয়ের ৯০০ একর ভূমির এই জোনটি বাতিল করা হয়নি।”

ভারতকে দেয়া এই ৯০০ একর জমি বরাদ্দ বাতিল করে সেখানে দেশ রক্ষায় ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দাবি জানান। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতের জন্য বরাদ্দকৃত ১১০ একর জায়গা বাতিল সহ বাংলাদেশে অবস্থানরত ৩৫০টিরও বেশি ভারতীয় কোম্পানির নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানান বক্তারা।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৮ জুন ২০২৫, /সন্ধ্যা ৬:৫০

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit