আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পারমাণবিক আলোচনার মাঝেই চীন থেকে বিপুল পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির উপাদান কিনছে বলে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব উপকরণ দিয়ে প্রায় ৮০০টির মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা সম্ভব।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব চালানের মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়াম পারক্লোরেট নামক একটি রাসায়নিক, যা শক্ত জ্বালানিভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আশা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই উপাদানগুলো ইরানে পৌঁছে যাবে।
সূত্রমতে, এই উপাদানের কিছু অংশ ইরানঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছেও পাঠানো হতে পারে। এর মধ্যে ইয়েমেনের হুতি মিলিশিয়া অন্যতম। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ইরানের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ, যার মাধ্যমে তারা একদিকে নিজস্ব অস্ত্রভাণ্ডার শক্তিশালী করছে, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নিজের প্রভাব আরও বিস্তার করছে।
এদিকে, তেহরান এমন সময় এই উদ্যোগ নিচ্ছে, যখন তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে। এটি যদিও এখনো সরাসরি অস্ত্র-গ্রেডে পৌঁছায়নি, তবুও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে। অন্যদিকে, ইরান একাধিকবার জানিয়েছে, তারা নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর কোনো আন্তর্জাতিক সীমাবদ্ধতা মানতে রাজি নয়।
এই চুক্তির পেছনে রয়েছে ইরানের ‘পিশগামান তেজারত রাফি নভিন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। উপাদান সরবরাহ করছে হংকংভিত্তিক ‘লায়ন কমোডিটিস হোল্ডিংস লিমিটেড’। তবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে জানার কথা অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, চীন সবসময় দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য (সামরিক ও বেসামরিক কাজে ব্যবহারযোগ্য) পণ্যের রপ্তানিতে কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে এবং আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনেই কাজ করে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ ইরানের ‘অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স’ বা প্রতিরোধ বলয় পুনর্গঠনের অংশ। এই বলয়ের আওতায় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে, যারা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে।
কিউএনবি/অনিমা/০৭ জুন ২০২৫, /দুপুর ২:১৯