আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মোহাম্মদ আয়াস নামের ২৫ বছর বয়সি এক রোহিঙ্গা যুবক সংবাদমাধ্যমটিকে সশস্ত্র প্রস্তুতির আদ্যোপান্ত জানিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য, জান্তা বাহিনী ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে প্রতিহত করে নিজেদের ভূমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। তারা দীর্ঘদিন ধরে এ প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারির এক ভোরে ইন্ডিপেনডেন্টের সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন মোহাম্মদ আয়াস। তিনি জানিয়েছেন, যারা তার পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে এবং তাদের এসব দুর্ভোগের জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা।
চার বছর বয়সি মেয়ে সন্তানের বাবা আয়াস, তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশুদের বার্মিজ ভাষা শেখান। ইন্ডিপেন্ডেন্টকে তিনি জানিয়েছেন, তার মতো শত শত যুবক যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী যারা তাদের পথের বাধা হবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তারা সবাই এক।
আয়াস বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। আমি আমার জনগণের জন্য মরতে প্রস্তুত। নিজ মার্তৃভূমিকে পুনরুদ্ধার, মিয়ানমারে আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতার যুদ্ধে আমার কী হবে, এ নিয়ে আমি ভাবি না।’
শরণার্থী সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুসারে, আয়াসের মতো শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী স্বেচ্ছায় সশস্ত্র গোষ্ঠীতে যোগদানের জন্য এগিয়ে আসছেন। তারা কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বছরের পর বছর কাটিয়েছেন, যেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার পর দশ লাখের বেশি নির্যাতিত মুসলিম সংখ্যালঘু সদস্য বসবাস করছেন।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্ট একাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে। যাদের মধ্যে ছিলেন এক গম্ভীর ব্যক্তি, যিনি নিজেকে কমান্ডার হিসেবে দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তারা গোপনে মিয়ানমারে যান। যেখানে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসব্যাপী সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন।
রোহিঙ্গা গোষ্ঠীগুলো বলেছে, ২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি এবং তার দলের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের মধ্যে উভয় পক্ষই তাদের গণহত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে এবং জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে যুক্ত করেছে। একজন রোহিঙ্গা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, তারা আশা করেছিলেন যে সু চি ক্ষমতায় ফিরে আসলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে – কিন্তু তারা আর এ নিয়ে অপেক্ষা করতে চান না।
কিউএনবি/আয়শা/২৭ মার্চ ২০২৫,/রাত ৮:৪০