রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
দৌলতপুরে বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বাচ্চু মোল্লা সভাপতি : বিল্লাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই এই দেশ পুনর্গঠন করতে হবে — নাহিদ ঘরে ঢুকে ছুরিকাঘাত,আ.লীগ নেতার মায়ের মৃত্যু শুধু শেখ হাসিনার পতন নয়, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে- জয়পুরহাটে নাহিদ ইসলাম মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো কেউ জঙ্গি নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরিবারে সুখ ফেরাতে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শার্শার রনি শার্শায় গৃহবধূকে গনধর্ষণের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু মনিরামপুর প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যের বোনের ইন্তিকাল মনিরামপুরে রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা

ভারতের নাগপুরে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতা, কারফিউ জারি

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫
  • ৫৭ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় সোমবার রাত থেকে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। ব্যাপক পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি, দোকান ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।

এ ঘটনার জন্য বলিউডের ছবি ‘ছাভা’কে দায়ী করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীশ। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় তিনি বলেছেন, “ছাভা সিনেমাটাই আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।”

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, নাগপুর শহরের মহাল এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের দিকেও ব্যাপক পাথর ছোঁড়া হয়। প্রাথমিকভাবে ছয় জন বেসামরিক নাগরিক ও তিনজন পুলিশ অফিসার আহত হন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।

ওই সংঘর্ষ কোতোয়ালি আর গণেশপেঠ এলাকাতেও ছড়িয়েছে। হাজার খানেক মানুষ ব্যাপকভাবে পাথর ছোঁড়া, ভাঙচুর চালায়। দোকানপাট আর গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার বেলা দশটা নাগাদ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্র মন্ত্রী যোগেশ কদম সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, “সহিংসতার কারণ এখনও খুঁজে বার করা যায়নি। এখনও পর্যন্ত ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে।”

মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও কারফিউ জারি আছে সেখানে।

যে অঞ্চলে সংঘর্ষ ছড়িয়েছিল, সেই মহাল অঞ্চল ছাড়া শহরের অন্যান্য এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিকই আছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন।

তবে পুলিশ নাগরিকদের প্রতি আবেদন জানিয়েছে যাতে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে না বের হন।

যেসব এলাকায় সোমবার রাত থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে, সেটি হিন্দু পুণরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএসের মূল কার্যালয়ের একেবারেই কাছে। আবার মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশের বাড়িও নাগপুরেই।

ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে
সোমবার দুপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে। ওই বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগর জেলায় অবস্থিত খুলদাবাদ থেকে আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাজ্যের নানা জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীশ বলেছেন, আওরঙ্গজেবের ওপরে মানুষের ক্ষোভের উৎস হলো বলিউডের ছবি ‘ছাভা’। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মি. ফডনবীশ বলেছেন, “ছাভা সিনেমাটাই আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।”

“সহিংসতা আর দাঙ্গা দেখে মনে হচ্ছে এটা পূর্ব পরিকল্পিত। নির্দিষ্ট করে কিছু বাড়ি ও দোকান চিহ্নিত করে হামলা চালিয়েছে মব। তবুও মহারাষ্ট্রকে শান্ত রাখা সবারই কর্তব্য,” বিধানসভায় বলেন ফডনবীশ।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ওই বিক্ষোভ চলাকালে কোরআন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়ায়, যাতে মুসলমান সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়। পরে এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগও পুলিশের কাছে দায়ের করা হয়।

নাগপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অর্চিত চন্দক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন যে একটি গুজবের ফলেই সোমবারের ঘটনার সূত্রপাত।

আবার নাগপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকরিও বলছেন, গুজব থেকেই এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছে।

নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি জানিয়েছেন, “কিছু গুজবের কারণেই নাগপুরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় শান্তি বজায় রাখাটাই শহরের ঐতিহ্য। আমি সবার কাছে আবেদন করব যে কেউ কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না, শান্তি বজায় রাখুন।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বলছেন
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, সোমবার রাতে সব থেকে বেশি সহিংসতা হয়েছে শহরের চিটনিস পার্ক থেকে শুখরাওয়ারি তালাও রোড পর্যন্ত। এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি চার চাকার গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়, আবাসিক ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়।

এই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ একটা মব ঢুকে পড়ে সেখানে। এলাকার বাড়িগুলোর দিকে পাথর ছোঁড়া হতে থাকে, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। চারটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, একটি গাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

এরপরে হনসাপুরি এলাকাতেও সহিংসতা ছড়ায়। ওই অঞ্চলের এক দোকানি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, “রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আমি দোকান বন্ধ করছিলাম। হঠাৎ দেখি একদল লোক গাড়িতে আগুন দিচ্ছে। আমি জল নিয়ে এসে আগুন নেভাতে গেলে ওরা আমার মাথায় পাথর ছোঁড়ে।”

ওই ব্যক্তির দুটি গাড়ি আর কাছাকাছি রাখা আরও কিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ওই দুষ্কৃতিরা।

সূত্র: বিবিসি

কিউএনবি/অনিমা/১৮ মার্চ ২০২৫,/বিকাল ৩:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit