মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০০ অপরাহ্ন

ওমান থেকে আফগান নারী শিক্ষার্থীদের বিতাড়নের আশঙ্কা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫
  • ৬৪ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ওমানের উচ্চশিক্ষার জন্য তালেবান শাসন থেকে পালানো ৮০ জনেরও বেশি আফগান নারী এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি, কারণ তাদের যুক্তরাষ্ট্র-তহবিলপ্রাপ্ত বৃত্তি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে তারা আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানোর হুমকির মুখে পড়েছেন।  

একজন শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেন, এটি হৃদয়বিদারক। সবাই হতবাক ও কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। আমাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

তালেবান শাসনে ফেরার আতঙ্ক 

চার বছর আগে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে তালেবান নারীদের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিষিদ্ধ এবং বেশিরভাগ চাকরি থেকে তাদের বাদ দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। 

ওমানে থাকা আফগান শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা যদি ফিরে যাই, তবে ভয়াবহ পরিণতির শিকার হবো। আমাদের স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যাবে, এমনকি ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঝুঁকিও রয়েছে।”  

এই শিক্ষার্থীরা মূলত এসটিইএম বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছিলেন, যা বর্তমানে তালেবান শাসনে নারীদের জন্য নিষিদ্ধ। তারা ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের আগে বৃত্তি অর্জন করেছিলেন এবং ২০২৪ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে ওমানে স্থানান্তরিত হন।  

বিবিসির কাছে থাকা ইমেইল প্রমাণ অনুযায়ী, তাদের বৃত্তি বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত হতাশাজনক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে।  

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন স্থগিত ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া  

ট্রাম্প প্রশাসনের ইউএসএআইডি তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনি লড়াই চলছে, তবে ইতোমধ্যে এটি হাজারো মানবিক সহায়তা প্রকল্প বন্ধ বা স্থগিত করে দিয়েছে। হোয়াইট হাউস এই সিদ্ধান্তকে সরকারের ব্যয় কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে।  

হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আন্না কেলি এই সংকটের জন্য বাইডেন প্রশাসনের আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকেই দায়ী করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেন, আফগান নারীরা ভোগান্তিতে আছে কারণ জো বাইডেনের বিপর্যয়কর প্রত্যাহার তালেবানকে মধ্যযুগীয় শরিয়া আইন প্রয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে।  

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি, যার নেতৃত্বে আছেন ইলন মাস্ক, এই অর্থায়ন স্থগিতের বিষয়টি বাস্তবায়ন করছে।  

জরুরি আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন  

আফগান নারী শিক্ষার্থীরা এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা নিরাপদ দেশে পুনর্বাসন ও শিক্ষার সুযোগ অব্যাহত রাখার জন্য সহায়তা চাচ্ছেন।  

একজন শিক্ষার্থী বলেন, যখন আমরা এখানে আসি, আমাদের বলা হয়েছিল ২০২৮ সালের আগে আফগানিস্তানে ফিরতে হবে না কারণ এটি নিরাপদ নয়। এখন তারা আমাদের দেশে ফেরত পাঠাতে চাচ্ছে।

অন্যদিকে, তালেবান সরকার শিক্ষা ও চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারী নারীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, তালেবান প্রশাসন নারী কর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হুমকি দিচ্ছে।  

এখন পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি এবং ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটের মিডিয়া কন্টাক্ট পেজও অফলাইনে রয়েছে। দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে নির্বাসনের আশঙ্কা নিয়ে, এই আফগান নারী শিক্ষার্থীরা এক অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক ভবিষ্যতের সম্মুখীন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৮ মার্চ ২০২৫,/বিকাল ৪:৫৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit