আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভেনিজুয়েলায় গত বছরের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাদুরোর বিপরীতে বিরোধী জোটের প্রার্থী ছিলেন এডমান্ডো গঞ্জালেজ।
ওই নির্বাচনে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মাদুরো। নির্বাচনের প্রায় ৫ মাস পর আগামী শুক্রবার ((১০ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন মাদুরো।
বিরোধী দলগুলোর জোট ভোট গণনায় ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে। গঞ্জালেজ বলছেন, জুলাইয়ের নির্বাচনে তিনি নন, পরাজিত হয়েছেন মাদুরো। এরপর গঞ্জালেজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নথি জালিয়াতি অভিযোগে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় সরকার।
গঞ্জালেজ গত সেপ্টেম্বরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। মাদুরোর শপথানুষ্ঠানের প্রাক্কালে যে করেই হোক দেশে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। তার এই দেশে ফেরার খবরে তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে মাদুরোর সরকার।
এ ঘোষণার পর ভেনেজুয়েলার পুলিশ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গঞ্জালেজের একটি ছবি প্রকাশ করে। ছবির নিচে লেখা ‘ওয়ান্টেড’। বিচার বিভাগীয় সূত্রের বরাতে এএফপি জানায়, ছবি সংবলিত পোস্টারটি সারাদেশের বিমানবন্দর এবং পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে পাঠানো হয়েছে।
তবে এরপরও দমছেন না গঞ্জালেজ। পুরস্কার ঘোষণার পরই জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই ল্যাটিন আমেরিকা সফর শুরু করবেন। সেই লক্ষ্যে তিনি এখন আর্জেন্টিনা সফর করছেন। সেখানে দেশটির মাদুরোবিরোধী প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই’র সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
বৃহস্পতিবার এক এক্স (আগের নাম টুইটার) বার্তায় গঞ্জালেজ জানান, শনিবার আর্জেন্টিনার নেতা হাভিয়ের মিলেইর সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। সেই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রবাসীদের প্রতি আর্জেন্টিনার প্লাজা দে মায়ো চত্বরে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ৭৫ বছর বয়সি গঞ্জালেস চাইছেন, দেশে ফিরে মাদুরোর জায়গায় তিনিই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।
গত জুলাইয়ের নির্বাচনে মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদে ছয় বছরের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। তবে বিরোধীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। বিরোধীদের দাবি, তাদের কাছে ভোট কেন্দ্রের বিস্তারিত হিসাব আছে। আর সেই হিসাব অনুযায়ী, গঞ্জালেজ উরুতিয়াই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
এমন অবস্থায় ভোটের ফল প্রকাশের জন্য ভেনেজুয়েলার সরকারের ওপর দেশ-বিদেশ থেকে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব থেকে তীব্র চাপ দেয়া হয়। তবে মাদুরো সরকার সেসব চাপ শক্ত হাতে প্রতিহত করে।
নির্বাচনের পর ভেনেজুয়েলার রাস্তায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে ২৮ জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হয়। গ্রেফতার হয় ২ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ।
যদিও গ্রেফতার হওয়াদের বেশিরভাগেরই মুক্তি দেয়া হয়।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ জানুয়ারী ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:২২