শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম

রংপুরে শীতের দাপটে স্থবির জনজীবন

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের ৫ জেলায় ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডায় জেঁকে বসেছে শীত। প্রতিদিনই বাড়ছে শীতের দাপট। গত তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর ভিড়। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে নদী পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। দিনে রাতে ঘন কুয়াশা এবং হিমেল হাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে রংপুর অঞ্চলের জনজীবন।

এদিকে কুয়াশা ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। জানা গেছে, রংপুর জেলাসহ এ অঞ্চলে প্রায় ৫ লক্ষাধিক হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে। এসব মানুষ প্রতি বছর শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্টে থাকেন। সরকারি বরাদ্দ এসেছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে এগিয়ে আসেনি। সচেতন মহলের দাবি শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলো এখনই এগিয়ে না এলে চরম দুর্ভোগে পড়বেন তারা।

রংপুর আবাহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ডিসেম্বরে রংপুরে শীতের দাপট খুব একটা দেখা না গেলেও গত তিন দিনে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। রংপুরসহ আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা এখন ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। তিন দিন থেকে সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কোথাও বা দেখা গেলে, তাও ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য। বৃহস্পতিবার সকালে রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি চলে আসায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রংপুর নগরীর সাতমাথা বালাটারি এলাকার কৃষক সুজন পাটোয়ারি ও তোফাজ্জল হোসেন বলেন, কুয়াশায় আলুর কিছুটা উপকার হলেও পশ্চিমা বাতাসে আলুর ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চললে আলু লেট ব্লাইটসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়া শীত ও কুয়াশার কারণে বোরোর বীজতলা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পীরগাছা উপজেলার কৃষক ফুল মিয়া ও শহিদুল ইসলাম বলেন, এবার আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। হিম বাতাস ও তীব্র ঠাণ্ডায় মানুষজন ও প্রাণী কাহিল হয়ে পড়েছে।

সেই সঙ্গে আলু ও বোরোর বীজতলা ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে তারা মনে করছেন। এমন পরিস্থিতি থাকলে চাষাবাদে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, শীতজনিত কারণে আগের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বৃদ্ধ। বয়স্করা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে এবং শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

শীতের কারণে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষেরা ঠিকমতো নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পেরে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম কমে গেছে। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো দিনের বেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে।

রংপুর আবহাওয়ার অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জানুয়ারি মাসে এ অঞ্চলে একাধিক শৈতপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। রংপুরসহ এ অঞ্চলের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় জেলায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলছে।

 

কিউএনবি/আয়শা/০২ জানুয়ারী ২০২৫,/রাত ১০:৪২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit