আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছানোর কঠিন মিশনে নেমেছে নাসার একটি মহাকাশযান। অভিনব যানটির নাম পার্কার সোলার প্রোব। ইতোমধ্যেই খুদে মহাকাশযানটি সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছে। সেখানে অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা এবং ভয়াবহ বিকিরণ সহ্য করতে হচ্ছে একে।
পার্কার সোলার প্রোব ২০১৮ সালে সূর্যকেন্দ্রিক যাত্রা শুরু করে। এটি ইতিমধ্যে সূর্যের চারপাশে ২১ বার প্রদক্ষিণ করেছে এবং প্রতিবার আরও কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে বড়দিনের উৎসবের সময়ের এই ভ্রমণটি একটি রেকর্ড। মহাকাশযানটি সূর্যের সর্বনিম্ন ৩৮ লাখ মাইল (৬২ লাখ কিলোমিটার) দূরে পৌঁছেছে। সংখ্যাটি খুব বেশি মনে হলেও নাসার নিকোলা ফক্স বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন, ‘আমরা সূর্য থেকে নয় কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে আছি। যদি আমি সূর্য এবং পৃথিবীকে এক মিটার দূরত্বে রাখি, তবে পার্কার সোলার প্রোব সূর্য থেকে মাত্র চার সেন্টিমিটার দূরে। তাই এটি সত্যিই খুব কাছাকাছি।’
মহাকাশযানটি ১,৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং এমন বিকিরণ সহ্য করবে। তবে ১১.৫ সেন্টিমিটার (৪.৫ ইঞ্চি) পুরু কার্বন-মিশ্রিত একটি ঢাল বা পর্দা একে সুরক্ষা দেবে। এর কৌশল হলো দ্রুত ঢুকে আবার দ্রুত বেরিয়ে আসা। প্রকৃতপক্ষে, এটি যে কোনো মানবসৃষ্ট বস্তু থেকে দ্রুত গতি অর্জন করবে। প্রতি ঘণ্টায় চার লাখ ৩০ হাজার মাইল (৬ লাখ ৯২ হাজার কিলোমিটার) বেগে ছুটবে খুদে যানটি। এই গতির তুলনা করলে লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক পৌঁছাতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড লাগবে।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, মহাকাশযানটি সূর্যের বহিঃবায়ুমণ্ডল অতিক্রম করবে, তখন এটি বহুদিনের একটি রহস্যের সমাধান করতে পারবে। এছাড়াও এই মিশন বিজ্ঞানীদের সৌর বায়ু অর্থাৎ সূর্যের করোনার মধ্য থেকে নির্গত চার্জযুক্ত কণার প্রবাহ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। যখন এই কণাগুলো পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে, তখন আকাশ রঙিন হয়ে ওঠে চমকপ্রদ অরোরার আলোয়।
কিউএনবি/আয়শা/২৪ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ১১:১২