সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
আহত আফগান নারীদের পুরুষদের তুলনায় দেরিতে চিকিৎসা দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস সেনাপ্রধানের আজকের স্বর্ণের দাম: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলো যুক্তরাষ্ট্র চবিতে সংঘর্ষ : হাসপাতালে ভর্তি ১২ শিক্ষার্থী, দুজন লাইফ সাপোর্টে মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশির মৃত্যু খালি পেটে দুধ চা খাচ্ছেন? জেনে নিন পুষ্টিবিদের সতর্কবার্তা নারী বিশ্বকাপে থাকছে ছেলেদের বিশ্বকাপের চেয়েও বেশি প্রাইজমানি দুই ম্যাচ খেলেই চাকরি গেল সাবেক ম্যানইউ কোচের ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে কী হবে জানালেন শিশির মনির

হানাহানি ও বাড়াবাড়ি ইসলাম সমর্থন করে না

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : ইসলাম ধর্ম কোনো ক্ষেত্রেই হানাহানি ও বাড়াবাড়িকে সমর্থন করে না। গ্রহণ করে না কোনো ধরনের চরমপন্থাকে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য কোনো জবরদস্তি করে না। জবরদস্তি করে না হানাহানি, বাড়াবাড়ি করে কোনো ধরনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রতি। ইসলাম সহজসরল একটি সাম্যের ধর্ম। সব ধরনের বিভেদ ভুলে এক হয়ে চলার নাম ইসলাম। ইসলামের স্বার্থে সব ধরনের বাড়াবাড়ি বর্জন করে ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয় এ ধর্ম। রসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবাগণকে এভাবেই প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল, তাঁর সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল।’ (সুরা আল ফাতহ, ২৯)। অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে ব্যক্ত করতে হচ্ছে, সাম্য, মৈত্রী ও সহনশীলতার এ ইসলাম ধর্মে আজ নানা মতের ছড়াছড়ি। সবাই আপন আপন মত ও পথ নিয়ে করছে হানাহানি ও বাড়াবাড়ি। সবাই যেন নিজ নিজ ধারণা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত মনগড়া ধর্ম পালনে ব্যস্ত আছে। কোরআন-হাদিসের কোনো আদেশ-নিষেধের কোনো তোয়াক্কা নেই। অনেকেই বাড়াবাড়ির চরম সীমা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। লিপ্ত হচ্ছে ধর্মের নামে অনেক গর্হিত অপকর্মে। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জেনে রাখ! তোমাদের আগে আহলে কিতাব (ইহুদি, খ্রিস্টান) বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল আর এ ধর্মের লোক অচিরেই তেহাত্তর দলে বিভক্ত হবে। একটি দল হবে জান্নাতি। তারা ওই জামাতভুক্ত যারা আল্লাহর কিতাব ও রসুলের সুন্নতের অনুসারী হবে।’ (আবু দাউদ)।

মহানবী (সা.) এর সাহাবিগণ জানতেন নামাজ সর্বোত্তম ইবাদত। তারা জানতেন রোজা পালন করা ও দান-সদকা করা শ্রেষ্ঠ ফজিলতের কাজ। তাই রসুলুল্লাহ (সা.) তাদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদের নামাজ, রোজা ও দান সদকা অপেক্ষা উচ্চ ফজিলতপূর্ণ মহৎ কাজের সুসংবাদ দেব না?’ তারা বললেন, অবশই! রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘পরস্পর মীমাংসা ও সন্ধিমূলক আচরণ হলো, নামাজ, রোজা, এবং দান-সদকা থেকেও উচ্চ মানের আমল। কেননা ঝগড়াবিবাদ এবং বিচ্ছেদপূর্ণ আচরণ ও কলুষতা ধ্বংস টেনে আনে।’ (আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ)।

বিবাদবিচ্ছেদ ও যুদ্ধবিগ্রহ মূলত একটি শয়তানি চক্র। ইসলাম ঝগড়াবিবাদ ও কলুষতার সমর্থন দেয় না। সাম্য, মানবতা ও উদারতার প্রতীক এ ধর্ম। সুশৃঙ্খল ও সৌভ্রাতৃত্বপূর্ণ আচরণের শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। ঝগড়াবিবাদ ও বিচ্ছেদপূর্ণ নীতি একটি অসামাজিক কাজ। এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক সংহতি এবং ঐক্য সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন হয়। ব্যক্তি, পরিবার ও সামাজিক জীবনে নেমে আসে অশান্তির কালো ছায়া। বাড়াবাড়ির কবলে বিস্তার হয় হানাহানি, খুন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি। ছড়াছড়ি হয় অনৈতিক আচরণ ও অশ্লীল কথাবার্তার মতো জঘন্যতম নানামুখী অপরাধ। অশ্লীল ভাষা ব্যবহারকারীকে রসুলুল্লাহ (সা.) মুনাফিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ন্যায়সংগত কারণেও ঝগড়াবিবাদ, যুদ্ধবিগ্রহ বর্জন করার প্রতি মহানবী (সা.) উৎসাহিত করেছেন। সাহাবি আবু উমামা আল বাহেলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি ওই ব্যক্তির জন্য বেহেশতের প্রাণকেন্দ্রে ঘরের জিম্মাদর, যে ন্যায্য অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও বিবাদ থেকে বিরত থাকে। আমি ওই ব্যক্তির জন্য বেহেশতের মধ্যস্থানে ঘরের জিম্মাদার, যে কৌতূহল অবস্থায়ও মিথ্যা বর্জন করে। আমি ওই ব্যক্তির জন্য বেহেশতের সর্বোচ্চ স্থানে ঘরের জিম্মাদার, যার আচরণ হবে উত্তম।’ (আবু দাউদ-সহিহ)। আমিরুল মুমিনীন আলী (রা.) বলেছেন, ‘তোমাদের উচিত বিবাদ ও মতভেদ পরিহার করা। কেননা তা ভ্রাতৃত্বের অন্তর ব্যাধিগ্রস্ত করে এবং মুনাফিকী ও কপটতার সৃষ্টি করে।’ (উসুলে কাফি)। দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমানে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ ও বিশ্বব্যাপী যুদ্ধংদেহী মনোভাব বিস্তার করছে। যারা শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করবে তারা আজ ব্যস্ত আছে যুদ্ধের সাজে। সবার মধ্যে জয়-পরাজয়ের প্রতিযোগিতা ও হিংসাবিদ্বেষ হানাহানিতে লিপ্ত। যাদের দায়িত্ব ছিল বিপদে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করা, তারাই আজ মানুষ নিধনের ষড়যন্ত্র করছে। মানুষ মারার ষড়যন্ত্র যেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে মানুষ বাঁচানোর চিন্তা সেভাবে কেউ করছে না। ফলে গোটা বিশ্বের মানুষ আজ বহুমুখী সংকটের সম্মুখীন। হিংসাবিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি ও যুদ্ধবিগ্রহের অমানবিকতায় পিষ্ট হচ্ছে গোটা বিশ্ব। ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও নানামুখী সংকটে হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। যুদ্ধপ্রেমিকদের রোষানলে ধুঁকছে অসহায় মানুষ। গোটা পৃথিবী প্রভাবিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুতে জোগান সংকট তীব্র হচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত চাহিদা মুদ্রাস্ফীতিসহ বিভিন্নমুখী দুর্ভোগ তৈরি করছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশে দেশে সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম সংকট, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ভিক্ষ। তাই আমাদের উদার নীতি অবলম্বন করতে হবে। শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। পরিহার করতে হবে সব ধরনের ন্যক্কারজনক বাড়াবাড়ি ও মানুষ হত্যার অমানবিক ষড়যন্ত্র।

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা

কিউএনবি/অনিমা/২০ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ১০:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit