হিংসা একটি ভয়াবহ আত্মিক রোগ। এই রোগ থাকলে কেউ পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে পারে না। উপরন্তু নিজেকেই জ্বলে পুড়ে ছাই হতে হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলে দাও, তোমাদের আক্রোশেই তোমরা মরো।’ (সুরা আলে ইমরান ১১৯)
নবীজি (স.) বলেন, ‘তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা হিংসা নেক আমল এমনভাবে শেষ করে দেয় যেমন আগুন কাঠের টুকরোকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়।’ (আবু দাউদ ৪৯০৩)
অন্যের হিংসা থেকে বেঁচে থাকার দোয়ামানুষের মনে হিংসা হবে এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়। কখনো হিংসার শিকার হলে তা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করতে হবে যেন তিনি হিংসুকের হিংসা থেকে বাঁচিয়ে রাখেন। সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে অন্যের হিংসা থেকে বাঁচা যায়। নিচে সুরা দুটির উচ্চারণ ও অর্থ দেয়া হলো।
সুরা নাস: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল আউজু বিরব্বিন্ নাস। মালিকিন্ নাস। ইলাহিন্ নাস। মিন্ শাররিল ওয়াস্ওয়াসিল খন্নাস। আল্লাজি ইউওয়াস্উয়িসু ফি ছুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্ নাস।
অর্থ: পরম করুণাময় পরম দয়াময় আল্লাহর নামে। বলো, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধীশ্বরের, মানুষের উপাস্যের, তার কুমন্ত্রণার অমঙ্গল থেকে, যে সুযোগমতো আসে ও সুযোগমতো সরে পড়ে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য থেকে বা মানুষের মধ্য থেকে।’ (সুরা নাস)
সুরা ফালাক: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। কুল আউজু বিরব্বিল ফালাক। মিন শাররি মা-খালাক। ওয়া মিন শাররি গ-ছিকিন ইযা-ওয়াকাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা-ছা-তি ফিল উকাদ। ওয়া মিন শাররি হা-ছিদিন ইযা-হাছাদ।
অর্থ: বলো, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি উষার স্রষ্টার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অমঙ্গল থেকে; রাতের অমঙ্গল থেকে, যখন তা গভীর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়। সেসব নারীর অমঙ্গল থেকে যারা গিটে ফুঁ দিয়ে জাদু করে। এবং হিংসুকের অমঙ্গল থেকে, যখন সে হিংসা করে।’ (সুরা ফালাক)
নিজের মনের হিংসা দূর করার দোয়া
পবিত্র কোরআনে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে বেঁচে থাকতে দোয়া আছে। দোয়াটি হলো,
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِىْ قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
উচ্চারণ: রব্বানাগফির লানা- ওয়া লিইখওয়া-নিনাল্লাযীনা সাবাকুনা- বিল ঈমানি ওয়ালা তাজ’আল ফি কুলুবিনা- গিল্লাল লিল্লাযীনা আ-মানূ রব্বানা- ইন্নাকা রঊফুর রহীম।’
অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের পূর্ববর্তী ভাইয়েরা যারা ঈমান এনেছে তাদের ক্ষমা করুন, ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়ালু পরম করুণাময়’। (সুরা হাশর ১০)