রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৮:২৩ অপরাহ্ন

বিয়েতে অভিভাবকের অনুমতি জরুরি যেসব কারণে

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিয়ের ক্ষেত্রে অনেকের সার্বিকভাবে পরিপূর্ণ জ্ঞান হয় না এবং চিন্তা-ভাবনা ত্রুটিযুক্ত হয়ে থাকে। তাই তাদের চিন্তা কখনো কখনো কল্যাণকর পথে তাদের পথপ্রদর্শন করতে না-ও পারে। এ জন্য অভিভাবকদের সম্মতির প্রতিও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বংশীয় মর্যাদা পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। হতে পারে, সে বংশমর্যাদা সংরক্ষণ করবে না।

আবার কখনো ‘কুফু’ ছাড়া বিয়ে উৎসাহী হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও বংশগত বিষয় কম বেশি হয় যা পরবর্তীতে পারিবারিক ঝামেলার সৃষ্টি করে। তাই অভিভাবককে এ ক্ষেত্রে কিছু অধিকার দেয়া হয়েছে।
 
স্মরণ রাখতে হবে, অভিভাবকহীন বিয়ে বা গোপন বিয়ে অসামাজিক, অমানবিক, অকৃতজ্ঞতামূলক ও লজ্জাজনক কাজ। এজন্য বিয়ের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ইসলাম পছন্দ করে না। ইসলামের নির্দেশনা হলো, বিয়ে করবে ঘোষণা দিয়ে। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিব আল-জুমাহি (রা.) বলেন, ‘রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দফ বাজানো ও ঘোষণা দেয়া হচ্ছে (বিয়েতে) হালাল ও হারামের পার্থক্য।’ (ইবনু মাজাহ ১৮৯৬; তিরমিজি ১০৮৮)
 
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বিয়ের ঘোষণা দেবে, বিয়ের কাজ মসজিদে সম্পন্ন করবে এবং এতে ঢোল (ঘোষণার) পিটাবে।’ (তিরমিজি ১০৮৯) মানুষের সাধারণ রীতি হলো, নারীর ওপর পুরুষ দায়িত্বশীল হয়। আর সব ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পুরুষের হাতে ন্যস্ত হয়। সব খরচ পুরুষের ওপর অর্পিত হয়। এ কারণেও নারীর বিবাহের ক্ষেত্রে তার পিতামাতার সম্মতি গুরুত্বপূর্ণ।
 
বিয়ের মধ্যে অভিভাবকের শর্ত নির্ধারণের কারণে অভিভাবকের মর্যাদা ও সম্মান সমুন্নত হয়েছে। এই সম্মান কালক্রমে আজকের বধূও পাবে। তা ছাড়া অভিভাবকহীন বিয়ে নারী অবহেলার শিকার হয় এবং অভিভাবকের বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়। অভিভাবকের মাধ্যমে বিয়ে হলে বিয়ের কথা বেশি প্রচারিত হয়। প্রচারের মাধ্যমে বিয়েকে ব্যভিচার থেকে পার্থক্য করা জরুরি। প্রচারের উত্তম পদ্ধতি হলো, নারীর অভিভাবক বিয়ে উপস্থিত থাকবে। এতে বিয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
 
এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে অভিভাবকহীন বিয়ে ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয় হলেও কেউ অভিভাবককে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করে ফেললে এক্ষেত্রে বিয়ে যেহেতু হয়ে গেছে, এখন এই বন্ধন রক্ষা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। কেননা বিয়ে কোনো ছেলেখেলা নয়; বরং এটি হলো, আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত ও নির্দেশিত নারী-পুরুষের সারা জীবনের একটি চিরস্থায়ী পূত-পবিত্র বন্ধন।
 
ইসলামে তালাকের সুযোগ রাখা হয়েছে খুবই অপছন্দনীয়ভাবে। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক যখন তিক্ত পর্যায়ে চলে যায় এবং সমাধানের কোনো পথ থাকে না, তখনই তালাক দেয়া হয়ে থাকে। তারপরও ইসলামে তালাক একটি জঘন্যতম বৈধ কাজ। রসুলুল্লাহ (সা.) তা চরমভাবে ঘৃণা করতেন। হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত হালাল হলো তালাক।’ (আবু দাউদ ২১৭৭)
 
এজন্য অতীব প্রয়োজন (যা শরিয়তে ওজর বলে গণ্য) ছাড়া স্বামীর জন্য তালাক দেয়া জায়েজ নয়, স্ত্রীর জন্যও তালাক চাওয়া বৈধ নয়। যেহেতু তালাক স্বামীর অধিকার, তাই বিশেষত স্বামী এক্ষেত্রে নিছক মা-বাবার চাপ বা বলপ্রয়োগের কারণেও তা প্রয়োগ করতে পারবে না। কারণ সৃষ্টির আনুগত্যের সীমারেখা বর্ণনা করতে গিয়ে রসুল (সা.) বলেন, ‘অসৎকাজে আনুগত্য নয়; আনুগত্য শুধু সৎকাজের ক্ষেত্রেই হতে হবে।’ (বুখারি ৭১৪৫)
 
সুতরাং কেউ গোপনে বিয়ে করে ফেললে মা-বাবার সঙ্গে এ বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা জরুরি। আপনি তাদের সঙ্গে অকৃতজ্ঞ আচরণ করেছেন, তা তাদের কাছে স্বীকার করে নিন। পাশাপাশি এটাও বুঝিয়ে বলুন যে আপনি তাদের সঙ্গে যে অন্যায় আচরণ করেছেন, এর শাস্তি আপনি পেতে পারেন; আপনার স্ত্রী নয়। এর প্রতিকার হিসেবে তালাকের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে তা হবে আরেকটি অন্যায়।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/রাত ১০:০৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit