আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ইসরাইলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যকার পরিকল্পিত ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’ শুরু হয়েছে যা টিকাদান কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য।
বিবিসির প্রতিবেদন মতে, যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও গাজার মায়েরা এখনও বেশ শঙ্কিত। ভয় ও শঙ্কার মধ্যেই তারা শিশুদের নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে যাচ্ছেন।
মুখে খাওয়ার পোলিও ভ্যাকসিন টাইপ ২ (এনওপিভি২) এর প্রায় ১২ লাখ ৬০ হাজার ডোজ টিকা এরই মধ্যেই গাজায় পৌঁছেছে। অতিরিক্ত আরও ৪ লাখ ডোজ শিগগিরই পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টিকাগুলো মূলত শিশুদের মুখে মুখে খাওয়ানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, টিকা দেওয়া যাচ্ছে এমন কেন্দ্রগুলোর বাইরে মা ও শিশুদের কাতার দিয়ে দাঁড়ানো অব্যাহত রয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ও স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় এই উদ্যোগে গাজার ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে জানানো হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, সুফল পেতে হলে অল্প সময়ের মধ্যে গাজার ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের অন্তত ৯০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনতে হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় সামারিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। দেশটির হানাদার বাহিনীর হামলায় ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৯০ হাজার।
ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজা কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। যার ফলে ভেঙে পড়েছে এর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। ডায়রিয়া, কলেরা, ডেঙ্গুর মতো পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়েছে পোলিওর মতো ভয়ঙ্কর ভাইরাসও।
গাজায় ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম পোলিও আক্রান্ত একটি শিশু শনাক্ত হয় গত সপ্তাহে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করেছে গাজায় একটি শিশু টাইপ ২ পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেন, খুব সম্ভবত আরও শিশু আক্রান্ত হয়েছে এবং এখনই ভাইরাসটিকে প্রতিহত করা না গেলে বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে সেটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন জানান, গাজার প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা দেয়ার জন্য হামাস ও ইসরাইল মানবিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গাজার তিনটি পৃথক অঞ্চলে তিন দিন ধরে এই যুদ্ধবিরতি চলবে। রোববার থেকে টিকা দেয়া কর্মসূচি শুরু হবে।
টিকা প্রদানের জন্য প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ রাখা হবে। একেক ধাপে টানা তিন দিন টিকাদান কার্যক্রম চলবে। যদি প্রয়োজন হয়, তবে সময় একদিন বাড়ানো হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/রাত ৯:৪৫