রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন

নেত্রকোণায় দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে ছাত্রদের অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচী

শান্তা ইসলাম নেত্রকোণা প্রতিনিধি ।
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪
  • ১১৫ Time View

শান্তা ইসলাম নেত্রকোণা প্রতিনিধি : নেত্রকোণায় শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর সাজুর পদত্যাগের দাবিতে সড়কে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছেন বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির চিত্র তোলে ধরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো এ ধরনের কর্মসূচী পালন এবং ওই শিক্ষকের কুশপত্তলিকায় জুতা পেটা করেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার বেলা ১২টায় নেত্রকোণা জেলা শহরে স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে বসে পড়েন শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমীন ও নেত্রকোণা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া তাবাসসুম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বেলা ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান নেন। আজকের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ না দেখে ঘরে ফিরবেন না ও অনশন করবেন বলে ঘোষনা দেন শিক্ষার্থীরা। এরআগে গত ১২ আগস্ট একই দাবীতে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছিল শিক্ষার্থীরা।

পরে মোবাইলে শিক্ষার্থীদের কাছে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করবেন বলে আশ্বস্থ করেছিলেন প্রধান শিক্ষক শাহজাহান কবীর সাজু। দ্বিতীয়বার সড়কে অবস্থানকালে শিক্ষার্থী নাবিহা ইবনাত শায়ান, মায়িশা লাবিবা লিয়া, মরিয়ম কবির, রাজিন, আবীর, উৎসব, তনয়, রফি, রামিম, অর্জনসহ আরও শিক্ষার্থী ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় তোলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।

শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করলে তাদেরকে জামাত-শিবিরের ট্যাগ দিয়ে পুলিশের কাছে তালিকা প্রদান করা হবে বলে ভয় দেখিয়েছিল প্রধান শিক্ষক শাহজাহান কবীর সাজু। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকল শিক্ষকদের তার (প্রধান শিক্ষক) স্ত্রীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করাতে বাধ্য করেছেন। নেত্রকোণা আবু আব্বাছ ডিগ্রী কলেজে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন আড়াইশো টাকা।

কিন্তু দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন পাঁচশো বিশ টাকা কিভাবে নেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের সামনে মার্কেটে দোকান বরাদ্দ বাবদ আট লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। পক্ষান্তরে, দোকান গ্রহিতাদের সাথে সম্পাাদিত চুক্তিতে দুই লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ বাবদ প্রতি মাসে ২০ টাকা নেওয়া হলেও মাল্টিমিডিয়া ক্লাশে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত। বিদ্যালয়ে তিন হাজার ছয়শো শিক্ষার্থী আছে। তাদের কাছ থেকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ বাবদ ২০ টাকা নেওয়া হলে মাসে ৭২ হাজার টাকা কোথায়? কোচিং না করতে চাইলেও স্কুল ছুটি শেষে বাধ্যমূলক নৈশকালীন কোচিংয়ে ফি দিতে হয়।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তোলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক এ.বি.এম. শাহজাহান কবীর সাজুর মোবাইল ফোন করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে প্রথম দফায় গত ১২ আগস্ট আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে মুঠোফোনে বলেছিলেন, যারা ছাত্ররা উপস্থিত আছেন, আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা চাই। আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। দুইবার চেন্নাই ডাক্তার দেখাতে গিয়েছি। আমার হার্টে দুইটা ব্লক। ইন্ডিয়ান কোনো ঔষধ আমার হাতে নাই। ঔযুধ শেষ হয়ে গেছে আনাতে পারছি না। আমি অসুস্থ। শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে স্বেচ্ছায় অবসরে যাবো।

আর বিগত সময়ে যারা চাকুরিচ্যুত হয়েছেন তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাই। তাদেরকে আমি নিজের সিদ্ধান্তে চাকুরিচ্যুত করি নাই। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমীন জানান, প্রধান শিক্ষককে ফোনে ও বাসায় লোক পাঠিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গণস্বাক্ষর চাওয়া হয়েছে। শিক্ষা বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. মজিবুর রহমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক শাহজাহান কবীর সাজুর পদত্যাগের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

কিউএনবি/আয়শা/২০ অগাস্ট ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit