হদিতা, রুহিতা, রোদসী – তিন কন্যা এক ছবি
————————————————-
আমরা ৮ ভাই তিন বোন। এর মধ্যে বড় দুই ভাই ও এক বোন বিগত ৩ বছরে প্রয়াত হলেন। বাকি ৮ ভাইবোন টিকে আছি আমরা আল্লাহর রহমতে।
এত ভাই বোন- সংগত কারনে তাদের নাতি নাতনিরা আমার নাতি নাতনি। আল্লাহর রহমতে প্রতিদিন অসংখ্য নাতি নাতনির দাদু নানু ডাক শুনি ফোনে ও সরাসরি।
আমার মেজো ভাইর বড় মেয়ে শিল্পির ৩ টা মেয়ে। কোন ছেলে নেই। হৃদিতা, রুহিতা ও রোদসী। এরা ৩ জন আমার অন্তর জুড়ে বাস করে সীমাহীন জায়গা দখল করে। এর কারন অনেক-
১. এরা আমার মতই ছোটবেলা থেকে এতিম। এদের বাবা কলেজের ইংরেজির প্রভাষক ছিল। খুবই ভাল, নিরিহ এবং মেধাবী একটা ছেলে। করোনার প্রথম ধাক্কায় আমার এই ভাতিজি জামাই প্রয়াত হলো। মেয়ে ৩ টি অকালেই তাদের বাবাকে হারাল।
২.এই তিন বোন আগুনের গোলা যেন। ক্লাস থ্রি থেকে গভ: স্কুলে ফার্স্ট হত। হৃদিতা এসএসসি ও এইচএসসিতে কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সেরা ফলাফল অর্জন করে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞানের ছাত্রী। ঢাবির প্রাক্তন ছাত্র বিধায় হৃদিতাকে আমি আমার পারিবারিক উত্তরসুরি মনে করি ক্যাম্পাসে।
৩.মেঝ নাতনী রুহিতা আরো এক কাঠি উপরে। ডাবল আগুনের গোলা। লেখাপড়ায় যেমন মেধাবী তেমনি সৃস্টিশীল কর্মকান্ডে। ছবি আঁকা, হস্তশিল্প নির্মান আরও কতকি যে করে সে। এই দফায় সে ঢাকা এসেছে কুড়িগ্রাম জেলার শ্রেসঠ বিজ্ঞানী হয়ে। আগারগাঁও এ জাতিয় বিজ্ঞান মেলায় দলবদ্ধ হয়ে সে ইভেন্ট প্রদর্শন করবে।
এজন্যে দুবোন এসেছে আমার বাসায়। ৩ দিন আগে ইন্ডিয়া থেকে দেশে ফিরেছি। টুকটাক কেনাকাটা করতে যেয়ে দেখি এই তিন বোন আমার মাথায় শুধু ঘুরপাক খায়। ৩ জনের ৩ টা ড্রেস কিনে ফেললাম। বাকি নাতনীরা কি বলে বলুক। নাতিদের বলার সুযোগ নেই। গত ইদুল ফিতরে সব নাতিদের টি শার্ট দিয়েছি।
৪.এবার বলি পিচ্চি রোদসীর কথা। পিচ্চি বললে সে মাইন্ড করতে পারে। কার বিয়েতে যেন সে শাড়ি ব্লাউজ পরেছে গায়ে হলুদ অনুসঠানে।
রোদসী আছে আমার অন্তর জুড়ে। ঠিক এরমত বয়সে আমি আমার মাকে হারিয়েছি। আর রোদসী হারিয়েছে তার বাবাকে।
পাখির মত কথা বলে রোদসী। মাঝে মাঝে রোদসীর সাথে কথা বলি। সুরা ইয়াসিন গড় গড় করে মুখস্ত বলে যায় সে। তখন আমার রোদসীকে মনে হয় – পাখি আমার একলা পাখি—।
ফেসবুকে প্রকাশঃ ১০.০৬.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।
কিউটিভি/ আয়েশা /১২.০৬.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ/ রাত ১২.৪৫