আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সদ্য অনুষ্ঠিত লোক সভা নির্বাচনে আসামে বিজেপি পেয়েছে নয়টি আসন এবং ৩৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস তিনটি আসন পেয়েছে। ভোট পেয়েছে ৩৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর মুসলমান প্রধান দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টে (এআইইউডিএফ) একটিও আসন পায়নি। তাদের ভোট গতবারের ৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এআইইউডিএফ প্রধান মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল ১০ লাখের বেশি ভোটে পশ্চিম আসামের ধুবড়ি আসনে হেরেছেন কংগ্রেস প্রার্থী রকিবুল হুসেনের কাছে। ২০০৫ সালে গঠিত হওয়ার পর এআইইউডিএফের উত্তরোত্তর জনসমর্থন বাড়ছিল। ২০০৯ সালে একটি আসন পাওয়ার পরে ২০১৪ সালে তারা পায় তিনটি আসন এবং প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট।
২০১৯ থেকে আজমলের দলের ফল খারাপ হতে শুরু করে। তারা পায় একটি আসন এবং প্রায় ৮ শতাংশ ভোট। সেখান থেকে এবার তারা নেমে এসেছে ৩ শতাংশে। একটিও আসন পায়নি। অর্থাৎ তাদের ভোট কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ।
এটা স্পষ্ট যে আসামের বাঙালি মুসলমানের একটা বড় অংশ বাঙালি মুসলমানের দল এআইইউডিএফকে ভোট দেয়নি, দিয়েছে কংগ্রেসকে। আর এই কারণেই কংগ্রেসের ভোট বেড়ে গেছে প্রায় ২ শতাংশ।
নির্বাচনে হারের পর আজমল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। আমরা বিষয়টি বিশ্লেষণ করব। দেখার চেষ্টা করব, কোথায় আমাদের ভুল হয়েছে। কারণ, এই আসন (ধুবড়ি) থেকে মানুষ আমায় তিনবার লোকসভায় পাঠিয়েছেন। আমার বিশ্বাস, বিশ্লেষণ করে পরের নির্বাচনে আমরা ভালো ফল করব।’
বাঙালি মুসলমান সমাজের জনপ্রিয় নেতা আজমল ভারতসহ গোটা বিশ্বের বিত্তবান মুসলমানদের একজন। তার প্রধান ব্যবসা আতরের। মুসলমান সমাজের কল্যাণমূলক কাজেও তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন।
গোয়াহাটি থেকে এআইইউডিএফের এক নেতা বলেন, ‘আজমলের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার ঘনিষ্ঠ। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত এবারের নির্বাচনেও সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের পথে হেঁটেছেন। তার ভাষণ ছিল অনেক ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক।
কিছু ক্ষেত্রে সরকারি লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে মনে হয়েছে আসাম সরকারের কাছ থেকে তিনি নানা সুবিধা পাচ্ছেন। এর নেতিবাচক প্রভাব নির্বাচনে পড়েছে।
আসামে মোটামুটি বিষয়টি প্রকাশ্যে আলোচিত হয়, বাঙালি মুসলমানের হয়ে কথা বলা বদরুদ্দীন আজমলের দল থাকার ফলে বিজেপির অনেক সুবিধা হয়েছে। বাঙালি মুসলমানদের ভোট যা আগে পুরোপুরি কংগ্রেসে যেত, তার একটা বড় অংশ এখন যায় এআইইউডিএফে। এই ভোট ভাগের কারণে বারবার হেরে যায় কংগ্রেস। যদিও এই বক্তব্যের বিরুদ্ধ মতও আছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল
কিউএনবি/অনিমা/০৬ জুন ২০২৪,/রাত ১১:০৫