শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু মনিরামপুর প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যের বোনের ইন্তিকাল মনিরামপুরে রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা আটোয়ারীতে কিন্ডারগার্টেনের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ পাঁচদোনা টু ডাঙ্গা চারলেন সড়ক অপরাধীদের অভয়ারণ্যে  চৌগাছায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত দৌলতপুরে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন চৌগাছায় ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি নেতাকে পিটিয়েছে প্রতিবেশী পুলিশ সদস্য সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বাড়ানো নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা সোমবার ১২ দেশের ওপর নতুন শুল্ক ঘোষণা করবেন ট্রাম্প

ভোলাহাটে জয়ীতাদের জীবন‌ জয়

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১১০ Time View

আলি হায়দার (রুমান) ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি : নানা প্রতিবন্ধতকা ও দারিদ্রতার মধ্যেও জীবন সংগ্রামে উদ্যোমী অনেক নারী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করে সমাজ ও দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। যারা কঠিন সংগ্রামে যোগ্যতা অর্জন করে চাকুরী ও স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে নিজেরা হয়েছেন স্বাবলম্বী,এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছেন অন্যদেরও। কিন্তু জীবন সংগ্রামে বিজয়ী এদের প্রতিষ্ঠা লাভের দুর্বিসহ গল্প জানে না অনেকেই।মধ্যবিত্ত পরিবারের নিরক্ষর মা ও অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন পিতা- মাতার কোল জুড়ে পৃথিবীতে আসেন আজকের সফল নারী, স্ত্রী, মা ও শিক্ষক উপজেলার ধরমপুর গ্রামের মোসাঃ রিজিয়া খাতুন। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। গ্রাম অঞ্চলের নানা বাধা ঠেলে পড়া-শুনা করতে হয়েছে। নিজের পড়া-লেখার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে প্রাইভেট পড়িয়েছেন। বাল্যবিয়ের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে হয়েছে বহুবার।

কষ্ট আর সমাজের নানা বাধা অতিক্রম করে আজ তিনি একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ১৯৯৮ সালে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেয়ার পর দু’হাত দিয়ে শুধু কুড়িয়েছেন প্রশংসা আর কর্মদক্ষতার সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট। সেই সাথে এখন পর্যন্ত তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা ছোট বড় অনেক জায়গায় চাকুরি করতে দেখে বুক জুড়িয়ে যাচ্ছে বলে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন। শুধু তাই না। তিনি বিবাহিত জীবনে এক ছেলে এক মেয়ের মা। ছেলে বুয়েটে মেয়ে ৭ম শ্রেনিতে পড়া-শুনা করছে। স্বামী মোঃ নুহু শেখ সরকারি কলেজের শিক্ষক। সমাজের সকল বাধা ঠেলে লেখা-পড়া মানুষের জীবন বদলে দেয়ার চ্যালেঞ্জে সফল হয়েছি বলে জানান রিজিয়া খাতুন।বিয়ের সময় শ^শুর বাড়ীর অবস্থা খুব খারাপ ছিল ঝাউবোনা গ্রামের মোঃ সাবিরুল ইসলামের স্ত্রী মোসাঃ ফাইমা বেগমের। বিয়ের পর পর পৃথক করে দেয় শ^শুর বাড়ী থেকে। বিপাকে পড়তে হয় সংসার চালানো নিয়ে। স্বামী দিনমুজুর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। সংসারে টানা পড়েন লেগেই থাকে। এ সময় হাল ধরতে হয় ফাইমাকে। চরকার চাকা ঘুরিয়ে শুরু করেন রেশম পোকার গুটির ছাঁট দিয়ে সূতা তৈরীর কাজ। স্বামী-স্ত্রীর বিন্দু বিন্দু আয় দিয়ে দিন চলে যায়। এমন সময় কোল জুড়ে আসে পর পর দু’কন্য সন্তান। মেয়েরা বড় হয় কিন্তু তাদের পড়ানোর মত শক্তি ছিল না। এক মেয়েকে ব্র্যাক অপর মেয়েকে প্রশিকা স্কুলে ভর্তি করে পড়া-লেখা করাতে থাকেন। পরে টানা পড়েনের সংসারে পরিশ্রম করে এক মেয়ে ভালো ফলাফল করে আইন বিভাগে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে সহকারী জজ নিয়োগ পায়। অপর মেয়ে এমবিবিএস পাশ করে ইর্ন্টণী করছে। বর্তমানে আমি সংসার জীবনে কঠিন পরিশ্রমের ফসল হিসেবে মেয়ে দু’জনকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি বলে জানান মোসাঃ ফাইমা বেগম।ভোলাহাট উপজেলার পোল্লাডাংগা লম্বাটোলা গ্রামের মোঃ আশাদুলের স্ত্রী মোসাঃ মাহামুদা খাতুন ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত পড়া-লেখা করে বিয়ের পিড়িতে বসেন। দরিদ্র স্বামীর অল্প আয়ে সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে। এ সময় আবার এক কন্যা ও পুত্র সন্তানের মা হয়ে যায়। সংসারে আরো ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়ে না।বাধ্য হয়ে অভাবের সাথে যুদ্ধে নেমে পড়েন মাহামুদা। বিভিন্ন ভাবে অর্থ জোগাড় করে ১০টি গরু ক্রয় করে খামার তৈরী করেন। এ খামার থেকে আয় আসতে থাকলে সংসারের অভাব দূর হতে থাকে। সেই সাথে এলাকায় বেশ পরিচিতি ঘটতে থাকে। ২০২১ সালে দলদলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে অংশগ্রহণ করে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। জনসেবা ও গরুর খামার অব্যহত আছে তাঁর। তিনি বলেন, এখন বেশ ভালো আছি। জনসেবা আর নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্ম মর্যাদা বেশ বেড়েছে।

উপজেলার কানারহাট গ্রামের মোঃ মামুন অর রশিদের স্ত্রীর মোসাঃ মহরমী খাতুন দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবার পরিবারে ৬জন সদস্য থাকায় তিন বেলা খাওয়ার অভাব ছিল। সাথে সাথে বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সকল মৌলিক চাহিদা পূরণ করার মত সমর্থ ছিলনা বাবার সংসারে। কষ্টের সংসারে মনের জোরে এসএসসি পাশ করেন তিনি। এসএসসি পাশের পর আর পড়া-লেখা ভাগ্যে জুটেনি।এর মধ্যে বাবা মারা যান। একমাত্র কর্মক্ষম বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। শুরু হয় জীবন যুদ্ধের লড়াই। ছোট বাচ্চাদের টিউশানি আর এলাকার লোকজনদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া। এখান থেকে কিছু আয় হতোূ। এরি মধ্যে ২০০৩ সালে বিয়ে হয়। স্বামী সংসারে গিয়ে সংসার গোছানোর হাল ধরেন তিনি। এমন সময় কোলে আসে এক পুত্র সন্তান।

ছেলেটি পড়া-লেখা করছে দ্বাদশ শ্রেনিতে। বিভিন্ন সমাজসেবামূল কাজের সাথে জড়িয়ে এলাকায় বেশ পরিচিতি লাভ করেন মহরমী। ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ভোটে অংশ গ্রহণ করে জয় লাভ করেন।তিনি বলেন, বর্তমানে সংসার জীবনে কষ্টের পর স্বচ্ছল ভাবে বেঁচে আছি। সেই সাথে জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেশ সম্মানের সাথে জনগণের পাশে থেকে উন্নয়নমূলক কাজ করছি।

কিউএনবি/অনিমা/১৬ এপ্রিল ২০২৪,/দুপুর ২:৫১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit