ডেস্ক নিউজ : ভাগ্য বদলাতে বিদেশে পাড়ি দিয়ে দালালদের ফাঁদে জিম্মি হয়েছেন চট্টগ্রামের চার যুবক। দালালরা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে যুবকদের তুলে দিয়েছে সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে। এরপর তাদের নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে চাওয়া হচ্ছে মুক্তিপণের টাকার। ঘটনার শিকার চার জনই চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা।
তারা হলেন- আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. ওয়াসিম (২২), একই এলাকার মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৯), আবদুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম (১৯) ও জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (২০)। এ ঘটনায় বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জিম্মি সদস্যদের পরিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, ‘উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার চার যুবককে লিবিয়া নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
অপহৃতদের স্বজনরা জানায়, আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম কাউকে মসজিদ, কাউকে হাসপাতাল আবার কাউকে দোকানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা করে নেন। প্রথমে যুবকদের ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের তুলে দেওয়া হয় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার বাসিন্দা মো. মিজানের হাতে।
মিজান তিন দিন পর তাদের সবার পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে নেন। সাত দিন পর দুবাই থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি মিশর হয়ে তাদের লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে মিজান অন্য দালালের হাতে তুলে দেন চট্টগ্রামের এই চারজনকে। ওই দালালরাই এখন তাদের স্বজনদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করছে। মুক্তিপণ না পেলে অপহৃত যুবকদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন।
জিম্মি যুবক বোরহান উদ্দিনের বড় ভাই সালাউদ্দিন বলেন, ‘২০ অথবা ২১ মার্চ আমার ভাইসহ চারজনকে জিম্মি করে দালালরা। এরপর ২৪ মার্চ সকালে মোবাইলে কল করে আমাদের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না হলে আমার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা পর পর হোয়াটসঅ্যাপে কল করে মুক্তিপণ পাঠানোর জন্য তাগাদা দিচ্ছে। কল করে বলে, আমি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিচ্ছি ওই অ্যাকাউন্টে টাকা দাও। টাকার জন্য প্রতিনিয়ত কল দিচ্ছে। মোবাইল বন্ধ থাকলে তখন ভয়েস মেসেজ পাঠাচ্ছে। টাকা কেন দিতে হবে জানতে চাইলে অপহরণকারীরা আমাদের বলে, তোমার ভাইকে আমাদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তাই এখন ছাড়াতে হলে মুক্তিপণ দিতে হবে।’
সালাউদ্দিন আরও বলেন, ‘মুক্তিপণের জন্য যারা যোগাযোগ করছেন সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলছেন। অপহরণকারীরা সবাই বাংলাদেশেরই লোক। যেসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর জন্য বলা হচ্ছে, সবগুলো চকরিয়া ব্র্যাঞ্চের। তাই আমাদের ধারণা, এই অপহরণের সঙ্গে বাংলাদেশের লোকজনই জড়িত।’
কিউএনবি/আয়শা/২৯ মার্চ ২০২৪,/দুপুর ২:১৪