এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কমলপুর পঞ্চবটি এলাকার বেনু মিয়ার ছেলে রাব্বি মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার জামাল হোসেনের মেয়ে নিঝুম আক্তারের গত ২ মাস ১৭ দিন আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রাব্বি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তার স্ত্রী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না রাব্বি মিয়ার। এ নিয়ে স্ত্রীর নিঝুমের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ঝগড়া করে মাসখানেক আগে স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যায়। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রায়ই কথা কাটাকাটি করত রাব্বি।
স্থানীয়রা আরও জানান, গত বছর ৬ নভেম্বর নিঝুম আর রাব্বির বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও নিঝুমের বয়স ১৪ ও রাব্বির বয়স ১৯ হওয়াতে তখনকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজের উপস্থিতিতে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বর ও কনের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললে দুপক্ষই তাদের ভুল স্বীকার করে এবং সরকারি আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা দেন।
ওই দিন বাল্যবিয়ে দেওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা করে কনে ও বর পক্ষকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। পরে আবার তাদের পরিবার প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু দিন যেতে না যেতেই তাদের বিয়ে দিয়ে দেন।
এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী নিঝুম ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি।
মৃতের বাবা বেনু মিয়া বলেন, রাতে আমার ছেলে হাসিমুখেই ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে তার শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীকে আনতে যায়। সেখান থেকে হঠাৎ ঘরে এসেই দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর গিয়ে আমি ডাকাডাকি করলে সে আর দরজা খোলেনি। পরে দরজা ভেঙে দেখি রাব্বি ফাঁসিতে ঝুলে আছে। পরে তাকে ফাঁসি থেকে নামিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে লাশ হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে আসি। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছিল। বুধবার রাতে ময়নাতদন্ত শেষ হলে বৃহস্পতিবার তার লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
কিউএনবি/অনিমা/২৫ জানুয়ারী ২০২৪/রাত ১০:৩৬