ফুলে শোভিত গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হলো কনস্টেবল মুজিবুলকে
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
Update Time :
বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৪
১৯০
Time View
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : এমন গাড়িতে কখনো সামনে বসার সুযোগ হয়নি। আজ সেই গাড়িটি ফুলে শোভিত মুজিবুল আলম ভুইয়ার জন্য। তাকে ডেকে সামনের সিটেই বসানো হলো। গাড়িতে উঠার আগে কাঁদলেন মুজিবুল, কাঁদালেন। বিষয়টা মনে হলে কয়েকঘন্টা পরও আবার তিনি অঝোরে কাঁদলেন। মুজিবুল আলম ভুইয়া বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল। তার চাকরি জীবনের শেষ দিন গেছে বুধবার। সকালে থানা পুলিশের গাড়ি সাজিয়ে সেটাতে তুলে তাকে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর আগে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দেন সহকর্মীরা।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানায় শেষ কার্যদিবসে দায়িত্ব পালন করেন মুজিবুল আলম ভুইয়া। সকাল নয়টার দিকে থানা পুলিশের গাড়িতে করে কসবা উপজেলার তালতলা গ্রামের বাড়িতে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূরে আলমসহ অন্যান্য সহকর্মীরা তাকে কর্মস্থল থেকে বিদায় দেন। এ সময় মুজিবুল আলম সবার কাছ থেকে দোয়া চান। গাড়িতে উঠার আগে তার চোখ গড়িয়ে পানি পড়তে থাকে।মুজিবুল আলম বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৮৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। প্রথমে কুমিল্লা জেলায় তার পোস্টিং হয়। এরপর একে একে তিনি সিলেট, হবিগঞ্জ, রাঙামাটি, লক্ষীপুর, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ ও সর্বশেষ নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগ দেন। সর্বশেষ কর্মস্থল আখাউড়া থানায় তিনি নয় মাস চাকরি করেন। মুজিবুল আলম কসবার তালতলা গ্রামের হামদু মিয়া ভুইয়ার সন্তান।
কথা হলে মুজিবুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘একদিকে আমার আনন্দ লেগেছে। অন্যদিকে কষ্টও পেয়েছি। আমাকে বিদায় বেলায় গাড়ি সাজানোসহ অন্যান্য আয়োজন দেখে আমার আনন্দ। সাথে থাকা আমার ছেলে ইফতেখার আলম ভ‚ইয়াও এসব দেখে খুশি হয়েছে। আর কষ্ট লেগেছে প্রায় ৪০ বছরের চাকরি জীবনে সমাপ্তি টানতে হতো বলে। এখন আর আমার সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হবে না ভেবেও কষ্ট লাগে। আমার ভেতরটা খুব জ¦লতেছে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘চাকরি হওয়ার পর কোনোভাবেই ছাড়তে চাইছিলেন না মা। বাড়ির বড় ছেলে বিধায় চাকরিটা যেন না করি সে কথা বলতেন। মাকে বুঝাতেন বাবা। চাকরিতে যোগদানের সময় বাবা-মায়ের দোয়া নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। বিদায় বেলায় ওসি স্যারসহ সহকর্মীদের কাছ থেকে দোয়া নিয়েছি। কালকে (বৃহস্পতিবার) বাবা-মায়ের কবরে গিয়েও দোয়া নিবো।’ চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুজিবুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘সবাই মিলে মিশে কাজ করেছি। কখনো কোনো ধরণের সমস্যায় পড়তে হয়নি। সব জায়গার সহকর্মীরাই ছিলেন আন্তরিক। সবাইকে এখন অনেক বেশি মিস করবো।’