মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

কেমন ছিলেন মহানবী (সা.)

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১২৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : আমাদের মুমিন হৃদয়ের একান্ত পরম আশা, যদি সবকিছুর বিনিময়ে হলেও প্রিয় নবীজি (সা.)-কে জীবনে একবার দেখতে পেতাম! তাঁর চেহারা তো পূর্ণিমারাতের চাঁদের মতো, তাঁর চেহারার জ্যোতি সর্বদা ঝলমল করত। তাঁকে শয়নে স্বপনে দেখার স্বপ্ন তো প্রত্যেক ইমানদার নরনারীর জীবনের পরম স্বপ্ন, পরম পাওয়া, তাঁকে দেখলে জাহান্নামের আগুন হারাম। যে নবীকে (ইমানের চোখে) একবার দেখবে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। (তিরমিজি-৫৫৪)।

প্রিয় রসুল (সা.)-এর আকার-আকৃতি কেমন ছিল, এ বিষয়ে সাহাবায়ে কিরাম থেকে বর্ণনা এসেছে। হজরত আলী (রা.) যখনই প্রিয় নবীর দেহের বর্ণনা দিতেন, তখন বলতেন, তিনি অত্যধিক লম্বাও ছিলেন না এবং একেবারে বেঁটেও ছিলেন না; ছিলেন মধ্যমাকৃতির। তাঁর মাথার চুল একেবারে কোঁকড়ানো ছিল না এবং সম্পূর্ণ সোজাও ছিল না; বরং মধ্যম ধরনের কোঁকড়ানো ছিল। তিনি অতি স্থূলদেহী ছিলেন না এবং তাঁর চেহারা একেবারে গোল ছিল না; বরং লম্বাটে গোল ছিল। গায়ের রং ছিল লাল-সাদা মিশ্রিত। চোখের বর্ণ ছিল কালো এবং পলক লম্বা লম্বা। হাড়ের জোড়াগুলো ছিল মোটা। পুরো দেহ ছিল পশমহীন, অবশ্য পশমের চিকন একটি রেখা বুক থেকে নাভি পর্যন্ত লম্বা ছিল। দুই হাত ও দুই পায়ের তালু ছিল গোশতে পরিপূর্ণ। যখন তিনি হাঁটতেন পা পূর্ণভাবে উঠিয়ে মাটিতে রাখতেন, যেন কোনো উঁচু জায়গা থেকে নিচের দিকে নামছেন। যখন তিনি কোনো দিকে তাকাতেন ঘাড় পুরোপুরি ফিরিয়ে তাকাতেন। তাঁর উভয় কাঁধের মাঝখানে ছিল মোহরে নবুয়ত বা নবী হওয়ার অলৌকিক নিদর্শন। তিনি হলেন সর্বশেষ নবী। তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে অধিক দানশীল, সবচেয়ে সত্যভাষী। তিনি ছিলেন সবচেয়ে কোমল স্বভাবের এবং বংশের দিক থেকে সম্ভ্রান্ত ও মর্যাদার অধিকারী। যে ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ দেখত, সে ভয় পেত (গুরুগম্ভীরতার কারণে)। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পরিচিত হয়ে তাঁর সঙ্গে মিশত, সে তাঁকে অনেক ভালোবেসে ফেলত। নবী (সা.)-এর গুণাবলি বর্ণনাকারী এ কথা বলতে বাধ্য হন যে, আমি তাঁর আগে ও পরে তাঁর মতো কাউকে কখনো দেখতে পাইনি। (শামায়েলে তিরমিজি)।

হজরত হাসান বিন আলী বলেন, আমার মামা হিন্দ বিন আবু হালা (রা.)-কে রসুল (সা.)-এর অবয়ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তিনি নবীজির পুরো দেহের বর্ণনা দেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, নবীজির কপাল ছিল বেশ উন্নত। ভুরু সরু ও ঘন পাপড়িবিশিষ্ট। দুই ভুরু আলাদা ছিল। মাঝখানে একটি রগ ছিল। নবীজি (সা.) যখন রাগ হতেন, তখন তা ভেসে উঠত। নাক খাড়া ছিল। ভালোভাবে না দেখলে মনে হতো তিনি প্রকাণ্ড নাকবিশিষ্ট।

নাক থেকে এক ধরনের নুর চমকাত। (শামায়েলে তিরমিজি)। রসুল (সা.)-এর পেট সম্পর্কে হিন্দ বিন আবু হালা বলেন, তাঁর পেট ও বুক সমান ছিল। (তিরমিজি)।

রসুলে করিম (সা.)-এর আকৃতি সম্পর্কে হজরত জাবের ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, একবার আমি চাঁদনি রাতে নবী (সা.)-কে দেখলাম। এরপর একবার তাঁর দিকে তাকালাম আর একবার চাঁদের দিকে তাকালাম। তখন তিনি লাল বর্ণের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। তাঁকে আমার কাছে চাঁদের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর মনে হলো। (তিরমিজি, দারেমি)।

হজরত কা’ব ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রসুল (সা.) যখন কোনো ব্যাপারে আনন্দিত হতেন তাঁর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠত। মনে হতো যেন তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের টুকরো। (বুখারি, মুসলিম)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রসুল (সা.)-এর সামরে দাঁত দুটির মাঝে কিছুটা ফাঁকা ছিল। যখন তিনি কথা বলতেন, মনে হতো ওই দাঁত দুটির মধ্য দিয়ে যেন নুর বিচ্ছুরিত হচ্ছে। (দারেমি)।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে নবীপ্রেমী হিসেবে কবুল করুন, রসুল (সা.)-কে ভালোবেসে দিদারে রসুল জীবনে নসিব করুন।

লেখক : খতিব, মনিপুর বায়তুল আশরাফ (মাইকওয়ালা) জামে মসজিদ, মিরপুর-২, ঢাকা

কিউএনবি/অনিমা/১৭ ডিসেম্বর ২০২৩,/সকাল ১১:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit