রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

স্বাধীনতার সুফল পেতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে: রাষ্ট্রপতি

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৪০ Time View

ডেস্ক নিউজ : রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণু ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। আগামীকাল ৫৩তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সবাইকে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখি, দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই, গড়ে তুলি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’- মহান বিজয় দিবসে এই আমার প্রত্যাশা।

প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের প্রবাসী ভাইবোনেরা তাদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স দেশে প্রেরণের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। জাতি তাদের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। আশা করি, বিশ্বমন্দা ও অর্থনীতির এই ক্রান্তিকালে প্রবাসী ভাইবোনরা রেমিট্যান্স প্রেরণ অব্যাহত এবং দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবেন।

দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে জানাই বিজয়ের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা অর্জন করেছি কাঙ্ক্ষিত বিজয়। আমরা পেয়েছি একটি সার্বভৌম দেশ, স্বাধীন জাতিসত্তা, পবিত্র সংবিধান, নিজস্ব মানচিত্র ও লাল-সবুজ পতাকা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদ, জাতীয় চার নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধু, যুদ্ধাহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণকে, বাংলাদেশের বিজয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রাখা সবার অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। তবে এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনা, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। তারই নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ আজ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘রূপকল্প ২০২১’ সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১’। সরকারের গৃহীত জনকল্যাণমুখী কর্মসূচির ফলে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়নের অনন্য মাইলফলক স্বপ্নের পদ্মাসেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ও ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সংযোগ প্রকল্প, খুলনা-মোংলা ও আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ প্রকল্প, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ৩য় টার্মিনাল, চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানাসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্র্যাজুয়েশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের পারমাণবিক ক্লাবের সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠার আগেই ভূ-রাজনৈতিক সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি দেখা দিচ্ছে। এ সংকট মোকাবিলায় সরকার সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ, বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্রদানসহ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আমরা এ সংকটও কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো- ইনশাল্লাহ। এজন্য সবার সহযোগিতার পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতভিন্নতা যাতে উন্নয়ন ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত না করে সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির কথা উল্লেখ্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ জাতির পিতা ঘোষিত এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে দেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বশান্তিতে বিশ্বাসী। যুদ্ধ কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না। বাংলাদেশ মনে করে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব।

তিনি বলেন, ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নিরীহ-নিরস্ত্র জনগণের ওপর বর্বরোচিত বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনি জনগণের যেকোনো ন্যায্য অধিকার আদায়ে বাংলাদেশ সবসময় তাদের পাশে থাকবে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক সমস্যার মানবিক সমাধানে বাংলাদেশ সর্বদা আন্তরিক। ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ও নির্যাতিত লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাস্তবভিত্তিক কার্যকর অবদান রাখবে- এই প্রত্যাশা করি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৫ ডিসেম্বর ২০২৩,/রাত ১১:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit