শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
স্বামীর মৃত্যুর ১২ মিনিট পর স্ত্রীর মৃত্যু স্বামীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্ত্রীর মৃত্যু যশোর শিক্ষা বোর্ডে এসএসসিতে মেধাবৃত্তি পেল ২৭৮০ শিক্ষার্থী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানে ত্রাণ পাঠালো বাংলাদেশ লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা করলো পুলিশ ভাতিজা তামিমের জন্য ‘মাঠ’ ছাড়লেন চাচা আকরাম ঢাকার তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে উচ্ছ্বাস প্রকাশ শি জিনপিংয়ের লালমনিরহাটে বহুল আলোচিত একাধিক ক্লুলেস ছিনতাই মামলার আসামি রানা গ্রেপ্তার বৃষ্টি হবে কবে জানাল আবহাওয়া অফিস আফগানিস্তানে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প

অহংকার অন্যকে ঘৃণা করার স্বভাব তৈরি করে

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৬৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : আমরা তো পাপীকে দেখলে ঘৃণা করি, নিজের মধ্যে অহংকার আসে। এ রকম একটি অন্যায়ের কারণে বিশ্ববিখ্যাত বুজুর্গ, হজরত আবদুল্লাহ উন্দুলুসি (রহ.)-কে এক বিরাট পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। পাপীকে দেখার পর যদি নিজের ভিতর এই অনুশোচনা আসে যে, আমার কারণেই হয়তো সে পাপ করছে, আমি কেন তাকে পাপ পরিহার করতে দাওয়াত দিইনি? যার মধ্যে এমন অনুভূতি সৃষ্টি হয়, বোঝা যায় যে, তার ইমান তাজা। তার মধ্যে অহংকার নেই। বেনামাজি বা এ ধরনের কোনো গুনাহগার ব্যক্তি দেখলে যাদের মনে ঘৃণা আসে, বুঝতে হবে, তার মাঝে অহংকার আছে। মনে অহংকার থাকলেই অন্যকে ঘৃণা করার স্বভাব তৈরি হয়। তারই দৃষ্টান্ত হজরত উন্দুলুসির ঘটনা।

হজরত আবদুল্লাহ উন্দুলুসি (রহ.)-এর ঘটনা : তিনি একবার তাঁর মুরিদানদের নিয়ে সফরে বের হন। পথিমধ্যে খ্রিস্টানদের একটি উপাসনালয় দেখে তাদের প্রতি মনে ঘৃণার ভাব উদয় হয়। আর ঘৃণা সৃষ্টি হয় অহংকার থেকে, কাজেই আল্লাহ তাঁকে শিক্ষা দিতে চাইলেন। আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহেই তো তিনি এত বড় ওলি হতে পেরেছেন। এখানে দায়িত্ব ছিল, ওই খ্রিস্টানদের দাওয়াত ও বোঝানোর মাধ্যমে কীভাবে ইসলামের ছায়াতলে আনা যায় সেই ফিকির ও কোশেশ করা। কিন্তু তিনি এসব না করে নিজেকে উত্তম মনে করে তাদের ঘৃণিত মনে করলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহপাক শাস্তি দিতে শুরু করলেন। যারা প্রিয় হয় তাদের ছোট ত্রুটিই বড় ত্রুটি হিসেবে ধরা হয়। উন্দুলুসি সাহেব সাথীদের নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছিলেন। হঠাৎ পরমাসুন্দরী এক খ্রিস্টান নারীর প্রতি দৃষ্টি পড়ে গেলে তিনি তার প্রতি আসক্ত হয়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহপাক তার বুজুর্গি উঠিয়ে নিলেন। এখন আর তাঁর সিনায় কোরআন-হাদিসের ইলম নেই। নামাজ রোজার জ্ঞান নেই। ইলমহীন এ মানুষটি শেষ পর্যন্ত খ্রিস্টান হয়ে তিন বছর শূকর চরিয়েছেন খ্রিস্টানের বাড়িতে। শেষমেশ নিজ ভক্ত-মুরিদ ও খলিফাদের তওবা আর কান্নাকাটির দরুন আল্লাহপাক তাঁর বুজুর্গি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

তারা মারাত্মক দুটি আত্মিক ব্যাধিতে আক্রান্ত : অনেকের মনে এ রকম নিন্দনীয় বাসনা জাগ্রত হয় যে, আমিই শুধু বুজুর্গ হতে পারতাম, অন্য কেউ না হতো! মনে রাখবেন যাদের মনে এমন আশা জন্ম নেয়, বুঝতে হবে তারা মারাত্মক দুটি আত্মিক ব্যাধিতে আক্রান্ত; তা হলো- হিংসা ও ঘৃণা। এসব লোক দুনিয়ায় কোনো দিনও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না। আল্লাহপাক যদি দয়া করে আমাদের সবাইকে মুত্তাকি-বুজুর্গ বানিয়ে দেন তাহলে কার কী অসুবিধা?

হজরত হারদুই (রহ.) বলতেন : কামেল বুজুর্গদের এ জন্যই আল্লাহওয়ালাদের সোহবতে থাকতে বলা হয়েছে, যাতে তাদের মধ্যে হিংসা, ঘৃণা, অহংকারসহ অন্যান্য আত্মিক ব্যাধি বাসা বাঁধতে না পারে। হজরত হারদুই (রহ.) বলতেন, হে আমার খলিফারা, তোমরা সর্বদা কোনো সালেহ মুরব্বির নেগরানিতে থাকবে। কারণ কার বেলায়েত কখন উঠে যায় তা তো বলা যায় না। সোহবত হলো আল্লাহ পাকের রশি অর্থাৎ বান্দা ও আল্লাহর মাঝে সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যম। এই রশিকে কোটি মানুষ মিলেও ছিঁড়তে পারবে না। এ আয়াতে বিশেষ করে যারা আলেম, মুফতি, মুহাদ্দিস তাদের বুজুর্গদের সান্নিধ্য অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। বুজুর্গদের সোহবত ছাড়া ইমানের মাঝে পরিপূর্ণতা ও সৌন্দর্য আসে না। আয়না যতই দামি হোক তা ময়লা যুক্ত হলে চেহারা দেখা সম্ভব হবে না। মানুষ যতই শিক্ষিত ও সম্মানিত হোক তার দিল যদি ময়লাযুক্ত হয় তাহলে জীবনের সব লক্ষ্য ভেস্তে যাবে। সাহাবায়ে কেরামের অন্তর পরিশুদ্ধ হওয়ার মাধ্যম ছিল রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সোহবত।

জীবনে সফলতা আসবে না : মোটকথা সোহবত ছাড়া জীবনে সফলতা আসবে না। অনেক সময় দেখা গেছে, সোহবত ছাড়া বড় বড় আলেমও দীনি বিষয়ে আটকে গেছেন। হজরত থানভী (রহ.)-কে আমরা শতাব্দীর সেরা আলেমদের একজন মনে করি কিন্তু অনেক সময় তিনি মাসালায় আটকে গিয়ে হজরত মুহাজেরে মক্কি (রহ.)-এর শরণাপন্ন হতেন। কাসেম নানুতুবি (রহ.)-কে ওই যুগের গাজালি ও রাজী মনে করা হতো, কিন্তু প্রায় সময় তিনি মক্কি (রহ.)-এর দরবারে আসা-যাওয়া করতেন। কেউ তাঁকে প্রশ্ন করেছিল। হজরত, আপনি এত বড় আলেম হওয়ার পরও মুহাজেরে মক্কির দরবারে কেন আসা-যাওয়া করেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, আরও অনেকেই তো আসা-যাওয়া করে, আমি করলে অসুবিধা কোথায়? তবে অনেকে যায় ওলি হওয়ার জন্য, আর আমি যাই ইলম অর্জন করার জন্য।

তাঁর মনে শান্তি ছিল না : এই মুহাজেরে মক্কি (রহ.) একজনের কাছে মুরিদ হয়েছিলেন কিন্তু মুরিদ হওয়ার পরও তাঁর মনে শান্তি ছিল না, কীসের এক পিপাসায় যেন সর্বদা হয়রান থাকতেন। বর্তমানে তো অনেকে মুরিদ হয় শুধু চামচাগিরি করার জন্য, হালুয়া খাওয়ার জন্য। বস্তুত যারা এ রকম মনোভাব নিয়ে মুরিদ হবে তাদের পরিণাম খুবই খারাপ হবে। পীর-মুরিদের সম্পর্ক হলো আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক করার একটি মাধ্যম। এই মাধ্যম যদি হয় স্বার্থ হাসিলের অসিলা, তাহলে এর পরিণতি হবে খুবই দুঃখজনক।

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ

কিউএনবি/অনিমা/০৯ ডিসেম্বর ২০২৩/দুপুর ১২:০৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit