এরপর ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের এক নদী রক্ত আর দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম লাভ করে বাংলাদেশ। দেশের একচ্ছত্র রাজনৈতিক ক্ষমতার মালিক হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর দেশের রাজনীতিতে শুরু হয় টালমাটাল অবস্থা। দিনে রাতে ভয়ঙ্কর সব ঘটনার মধ্য দিয়ে ঘটতে থাকে ক্ষমতার পালাবদল। সুযোগ সন্ধানী আর ক্ষমতালিপ্সুরা গঠন করতে থাকে রাজনৈতিক দল। গঠনের পর আবার ভাঙ্গতে থাকেও দ্রুত। ছোট একটা দেশ কিন্ত রাজনৈতিক দল হয় শতাধিক।এক পর্যায়ে রাজনৈতিক দল গুলোকে হিসেবে আনতে শুরু হয় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কার্যক্রম। সেই নিবন্ধন কার্যক্রমের তালিকায় বর্তমানে ৪৪ টি রাজনৈতিক দলের নাম আছে। যদিও বিভিন্ন সময় খুব যাচাই বাছাই করে নিবন্ধন দেওয়া হয় বলে প্রচার করা হলেও বাস্তবের চিত্র একেবারে়ই ভিন্ন। দেশের বেশির ভাগ উপজেলার মত যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলায়ও নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের অন্তত ৩৮ টি দলের কোন অস্তিত্ব নেই।
অনেক অনুসন্ধান করে মাত্র ৬ টি দলের অস্তিত্ব আবিস্কার করা গেছে। এ ৬টির বাইরে নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান আবার বেশ মজবুত। চৌগাছায় যে সব দলের অবস্থান ভালো তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দলটি ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর নিবন্ধন পায়। নিবন্ধন তালিকায় আওয়ামী লীগের অবস্থান ৬ নম্বরে। এরপর নিবন্ধন তালিকায় ৭ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ দলটিও নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর। একই তারিখে নিবন্ধন পা়য় লাঙ্গল প্রতিকের জাতীয় পার্টি। নিবন্ধন তালিকায় এ দলের অবস্থান ১২ নম্বরে। ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর তারিখে নিবন্ধন পায় জাকের পার্টি। নিবন্ধন তালিকায় এ দলের অবস্থান ১৬ নম্বরে। ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর নিবন্ধন পায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ মই মার্কা)। নিবন্ধন তালিকায় এ দলের অবস্থান ১৭ নম্বরে। এরপর ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর নিবন্ধন পায় ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা)। নিবন্ধন তালিকায় এ দলের অবস্থান ৩৪ নম্বরে। নিবন্ধন পাওয়া এই ৬ টি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বাদে অন্য চার দলের অবস্থান খুব একট মজবুত নয়। এ চারটি দলের কোন প্রার্থী কোন নির্বাচনেই কোন প্রতিনিধি পদে পাশ করতে পারেনি।
যে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কোন অস্তিত্ব চৌগাছা উপজেলায় নেই সেগুলো হলো এলডিপি (ছাতা), জাতীয় পার্টি জেপি (বাইসাইকেল), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল(চাকা),কৃষক শ্রমিক জনতালীগ(গামছা),বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (কাস্তে), গণতন্ত্রীপার্টি (কবুতর),বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি(কুঁড়েঘর), বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি (হাতুড়ি), বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলো),জাসদ (মশাল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি (তারা), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপি (গরুর গাড়ি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা),বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (খেজুর গাছ), গণফোরাম (সূর্য), গণফ্রন্ট (মাছ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ (গাভী), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার),বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি), ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিক্সা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি (কোদাল),খেলাফত মজলিস ( দেওয়াল ঘড়ি), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হাত), বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (টেলিভিশন), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (সিংহ), বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব),তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ (আপেল), বাংলাদেশ জাসদ (মটরগাড়ি),বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (নোঙ্গর) এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (একতারা)। এ ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কোন অফিস,ব্যানার,ফেস্টুন বা কোন ধরনের প্রচার প্রচারণা চৌগাছা উপজেলায় নেই।
কিউএনবি/অনিমা/২৯ নভেম্বর ২০২৩,/দুপুর ২:৩৫