স্পোর্টস ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা গ্রুপসেরা হয়েই ওঠে শেষ ষোলোতে। শেষ ষোলো থেকে ফাইনাল পর্যন্ত আলবিসেলেস্তেদের একের পর এক নকআউট উতরানোর পথচলাটা ছিল রোমাঞ্চকর। যার শেষটা হয় ১৮ ডিসেম্বর ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি জেতার মাধ্যমে।
কাতারে মেক্সিকোর বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জয়ের দিনে ফিফা ট্রেনিং সেন্টার প্রকাশ করেছে লিওনেল স্কালোনির দলের কৌশলগত বিষয়গুলো। ঠিক কোন কৌশল কাজে লাগিয়ে বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল আর্জেন্টিনা। এ ক্ষেত্রে কার্যকর কৌশল হিসেবে উঠে এসেছে সেট পিসের সফল প্রয়োগ।
ফিফা ট্রেনিং সেন্টার আর্জেন্টিনার কৌশলকে দুটি ভাগে ভাগ করেছে। সাধারণ কৌশল আর বিশেষ কৌশল। সাধারণ কৌশলগুলো ছিল এমন-
৫-৬ জন খেলোয়াড় নিয়ে ধাপভিত্তিক ফরমেশন নিয়ে আক্রমণ, একাধিক ফরোয়ার্ড দ্বারা প্লেয়ার টু প্লেয়ার মার্ক করা, সামনের পোস্টে জটলা বাড়ানো, ছোট কর্নারের জন্য তৃতীয় একজনকে ব্যবহার এবং পোস্টের সামনের অংশ বা গোলের মাঝের অংশকে লক্ষ্য হিসেবে ঠিক করা। কোচ স্কালোনির দলের বিশেষ কৌশল ছিল তিনটি। ১. ডিফেন্ডারদের মাধ্যমে লম্বা করে বল বাড়ানো (ক্রসে) খেলা কমিয়ে আনা। ২. বক্সের চারপাশে খেলে এনজোর জন্য মুক্ত জায়গা বাড়ানো। ৩. মেসি এবং ডি মারিয়ার পোস্টের সামনে বল গ্রহণ/গোলে শটের সামর্থ্যকে কাজে লাগানো।
ফিফা ট্রেনিং সেন্টার আর্জেন্টিনার সেট পিসের ব্যবহার নিয়ে চারটি ভিডিও ক্লিপ উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছে। এর প্রথমটি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের। দেখা গেছে, কর্নার নেওয়ার সময় আর্জেন্টিনার তিনজন খেলোয়াড় ডাচ ডি বক্সে দাঁড়ানো। মাঝমাঠ থেকে ধীরে ধীরে ভেতরে ঢোকার মুখে আরও তিনজন। এর মাধ্যমে নেদারল্যান্ডস ডিফেন্ডারদের ধারণা হয়, বল পোস্টের দিকে আসবে। ওই সময় মেসি ছিলেন বক্সের একপাশে, তাঁকে পাহারা দিচ্ছিলেন একজন। দেখা গেছে, কর্নারের বল নেদারল্যান্ডসের ডি বক্সে না গিয়ে দ্রুত বক্সের বাইরে থাকা মেসির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যেই বক্সের বেশ কয়েক গজ দূরে থাকা এনজো দৌড় দেন ভেতরের দিকে। এরপর বক্সের বাইরে থেকে নেন বাঁ পায়ের জোরালো শট। এই শটে অবশ্য গোল হয়নি, বারে লেগে প্রতিহত হয়।
একই ম্যাচের আরেকটি ক্লিপে দেখা যায়, কর্নারের বল নেওয়ার জন্য বক্সের বাইরে চলে গেছেন মেসি। তাঁর পেছনে ছোটেন দুজন পাহারাদার ডিফেন্ডারও। মেসি বল গ্রহণ করতে না করতেই এক আর্জেন্টাইন বক্সের ভেতরে দৌড়ে ঢুকে গেলে সবার মনোযোগ চলে যায় মেসি ও ওই খেলোয়াড়ের দিকে। তবে বল যায় বক্সের বাইরে অরক্ষিত থাকা এনজোর কাছে। এই মিডফিল্ডার আবারও দেখেশুনে জোরালো শটের সুযোগ পেয়ে যান, এটিও অবশ্য পোস্টের উপর দিয়ে যায়।
চারটি ভিডিও ক্লিপের অপর দুটি গ্রুপ পর্বে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের। এর মধ্যে মেক্সিকোর বিপক্ষে গোলটিতে কর্নারের সময় মেসি বক্সের একপাশে এবং বক্সের ভেতরে তিনজন ছিলেন। এ ছাড়া বক্সে ঢোকার মুখে ছিলেন আরও একজন। মেক্সিকোর ডিফেন্ডাররা তিন দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে এনজোকে অরক্ষিত রেখে দেন। মেসির আলতো করে বাড়ানো বল নিয়ে দৌড়ে ডি–বক্সে ঢুকে দ্রুতই বল জালে পাঠান এনজো। এনজোর বলে জোরালো ও লক্ষ্যে শট নিতে পারা এবং দুই পা ব্যবহারের সক্ষমতা কাজে লাগিয়েই সেট পিস–কে ভিন্নভাবে কার্যকর করেছে আর্জেন্টিনা।
কিউএনবি/আয়শা/২৭ নভেম্বর ২০২৩,/রাত ৯:০৫