জালাল আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : দেশব্যাপী বিএনপি এবং জামায়াত সমর্থকদের সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকবে বলে জানান তাঁরা।
আজ ৩১ অক্টোবর (২০২৩) মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে “দেশব্যাপী সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ” এ আয়োজিত এই মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বলেন ,”এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে ফিলিস্তিনে । সেখানে বর্বর হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।এর পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সবসময় মানবিক কল্যাণের পক্ষে দাঁড়ায় ।
আইনের শাসন এবং সাংবিধানিক শাসনের বত্যয় কখনো কাম্য নয়। বিএনপি ও জামায়াতের ষড়যন্ত্র এবং সহিংসতা না হলে দেশ অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো। তিনি বিএনপি এবং জামায়াতের উদ্দেশ্য করে বলেন, “সন্ত্রাসের পথ পরিহার করুন।নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস শুধু নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসই জন্ম দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জাতি কে সবসময় বার্তা দেয়”। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো- ভিসি ( শিক্ষা) অধ্যাপক ডক্টর এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের অন্য কোন পদ্ধতি নেই। ইতিহাস সাক্ষী দেয় যারা জনগণের রাজনীতি করে,
যারা আদর্শের চর্চা করে ,তারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়।আমি বিশ্বাস করি বিএনপি এবং জামায়াত সহ যারা সহিংসতা করছে, তাদের একদিন উপলব্ধি হবে।কুলাঙ্গার খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল , ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে জড়িত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রক্ষা করার জন্য।বাংলাদেশের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে ২৮ অক্টোবর। একজন আমেরিকান ভুয়া লবিস্ট মিয়ান আরেফী বিএনপি অফিসে গিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে স্যাংশন নিয়ে কথা বলেছেন।বাংলাদেশের ইতিহাসে এই রকম ভুয়া কর্মকাণ্ড আর ঘটে নি। টাকা দিয়ে লবিং করে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনি নাকি দশটি এসএমএস পাঠিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা শোনার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা হাত তালি দেয়।
অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন আহমেদ হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,” ২০০৫ সালে ফুলার রোডে বিএনপি দলীয় শিক্ষক আফতাব উদ্দিন আহমেদ কে প্রকৃত ইতিহাস লিখার কারণে খুন করা হয়েছিল।
তিনি শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে বলেন, “একটা জাতিকে বিশ্বের দরবারে মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে সরকার মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে।সাহস এবং প্রজ্ঞার সমান্তরালে শেখ হাসিনা দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে”।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক
মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন , আমরা আগে দেখি নাই প্রধান বিচারপতির বাসায় আক্রমণ করতে,
, সাংবাদিকদের উপর হামলা চালাতে এবং পুলিশকে পিটাতে পিটাতে মৃত্যু নিশ্চিত করতে।
আওয়ামী লীগের উন্নয়ন অনেকের কাছে পছন্দ হয় না। অনেক বিদেশীরা পছন্দ করে না। কারণ তারা চায় না বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াক।
তিনি আরো বলেন,”সভা ডেকে প্রতিবাদ জানালে হবে না। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে ।
নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডক্টর সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, “বিএনপির এক শীর্ষ নেতা মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে ভগবান, অবতার এবং বাবা বলে সম্বোধন করেন। ঘটনার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর কথিত উপদেষ্টা হাজির হয়েছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীল দল তাদের নীল নকশার প্রতিবাদ করছে এবং দেশবাসী কে সতর্ক করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ জ ম শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন , আমরা জানি সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু সন্ত্রাস ও সহিংসতার অধিকার কাউকে দেয় না।২০১৩ সালে বিএনপি এবং জামায়াতের সন্ত্রাস করেছিল। ঘুমন্ত মানুষ কে হত্যা করেছিল।
তাদের বিদেশি প্রভুদের খুশি করতে সহিংসতা করছে। বিএনপি এবং জামায়াত সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাচ্ছে।বিএনপি ও জামায়াতের ষড়যন্ত্র প্রত্যাখান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন ,
“শেখ হাসিনাকে বলতে চাই , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আপনার পাশে আছে। বাংলাদেশর মানুষের স্বার্থে সরকারের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা দরকার।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জন জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুর রহিম , সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ডক্টর একেএম
গোলাম রব্বানী , সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
কিউএনবি/আয়শা/৩১ অক্টোবর ২০২৩,/রাত ৯:৩০