মনিরুল ইসলাম মনি, শার্শা(যশোর)সংবাদদাতা : যশোরের শার্শা উপজেলার যদুনাথপুর (হাড়ীখালী) গ্রামে ৩ ফসলী জমি থেকে ৩০/৩৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটায় পাশের জমি ধসে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতি হচ্ছে জমির ফসল। এখনি প্রতিরোধ না করলে অনেক জমি ধসে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছে সাধারন কৃষকগন। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ সাধারন কৃষকেরা গনস্বাক্ষর করে ক্ষতিপূরন চেয়ে ও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।যদুনাথপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উলাশীর পানবুড়ি ও কুচেমোড়া নামক স্থানে নাভারন- সাতক্ষীরা মহা সড়কের পাশে একাধিক ইটের ভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ভাটায় ইট তৈরীর মুল কাঁচামাল হলো মাটি। যে কারনে ইট তৈরীতে ভাটা মালিকেরা স্থানীয় এক শ্রেনীর প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে মাটি সংগ্রহ করে। মাটি ব্যবসায়ীরা অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে উচুঁ নিচু ৩/২ ফসলি জমি সমান করার কথা বলে জমির উপরি ভাগের উর্বর মাটি আধাফুট বা এক ফুট করে কাটার কথা বলে জোর করে উক্ত জমি থেকে ২/৩ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেয় । যার কারনে মাটি কাটা ঐ জমিতে আর ভালো ফসল ফলে না।
এই সুযোগে ভাটা মালিকেরা ঐ জমি স্বল্প মুল্যে ক্রয় করার প্রস্তাব দেয়। কৃষক উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে মাটি কাটা জমি ভাটা মালিকের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এর পর ভাটা মালিক ক্রয়কৃত জমি থেকে মাটি কাটার এস্কো মিটার দিয়ে ইচ্ছে মতো৩০/৩৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে ট্রাকটারে করে ভাটায় নিয়ে যায়। যে কারনে ক্ষতি হচ্ছে সামাজিক অবকাঠামো গ্রামের কাঁচা পাকা রাস্তা।গভীর ভাবে মাটি কাটার ফলে ক্ষতি হচ্ছে পাশ^বর্তী ফসলী জমি।লিখিত অভিযোগে আরও জানা গেছে, ভাটা মালিকদের মাটি কাটায় বাধা দিলে বা প্রতিবাদ করলে ভাড়া করা স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও সন্ত্রাসীদের দিয়ে প্রতিবাবকারীকে জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয়। যে কারনে সাধারন কৃষকেরা প্রতিবাদ করতে পারেনা। সাধারন কৃষকদের অভিযোগ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বা পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়ে কিছু দিন মাটি কাটা বন্ধ হলেও অজ্ঞাত কারনে তা আবার শুরু হয়।কয়েকদিন মাটি কাটা বন্ধ হলে ভাটা মালিক ক্ষতি পূরন বাবদ যদুনাথপুর গ্রামের প্রবিাদী কৃষক সোহেল রানা সুমনের কাছে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন বলেও জানা যায়।
এ ব্যাপারের যদুনাথপুর (হাড়িখালী) গ্রামের সাধারন কৃষক সোহেল রানা সুমন, সফিকুল ইসলাম, মোঃ মারুফ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ফিজু, ডাক্তার ফারুক হোসেন, সোলাইমান হোসেন সহ একাধিক কৃষক বলেন,তাদের জমির পাশ থেকে ৩০/৩৫ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে তাদের জমি ধসে নষ্ট হচ্ছে। একাধিক বার সেচ দিলেও জমিতে পানি থাকছে না। তারা বলেন তাদের গ্রামের সবুজ মাষ্টার, সুলতান হোসেন, কালাম সরদার, ছাত্তার সরদারসহ কয়েকজন ব্যাক্তি তাদের জমি মাটি কেটে নেওয়ার পর ঐ জমি স্থানীয় প্রভাবশালী পানবুড়ি ভাটার মালিকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। যে কারনে ঐসব জমি থেকে গভীর করে মাটি কেটেনেন ভাটার মালিক। যে কারনে এই বর্ষা মৌসুমে মাটি উত্তোলনকৃত জমির পাশের জমির মাটি ধসে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলী জমি ও রাস্তা।এ ব্যাপারে সাধারন অভিযোগকারী কৃষকেরা তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া তিনি ৩ ফসলী কোন জমি থেকে মাটি না কাটার জন্য সকল ভাটা ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
কিউএনবি/অনিমা/২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৫:০৪