শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

বগুড়ার শেরপুরে মরিচের চারা ব্যবসায়ীর প্রতারনায় ৩ কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৮৭ Time View

আবু জাহের, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় এক জাতের মরিচের চারা ক্রয় করলে অন্য জাতের চারা দিয়ে কৃষকের সঙ্গে প্রতারনা করায় ৩ কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে ফুলবাড়ী রানীনগর এলাকার মেসার্স ভাই বোন নার্সারীর মালিক ফজলুল হকের বিরুদ্ধে। এতে শাহবন্দেগী ইউনিয়নের আয়রা সাতান হিন্দুপাড়া এলাকার তিন কৃষক শামিম হোসেন, সুবাদ চন্দ্র, সুমল চন্দ্র এখন চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে। ভেঙ্গে গেছে তাদের স্বপ্ন ।


সরে জমিনে রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের আয়রা সাতান হিন্দুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জমিতে মরিচের ফলন আসতে শুরু করেছে। কিন্তু গাছগুলো মরে যাচ্ছে। এতে করে কৃষক বড়ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে। এর কারন জানতে চাষী শামীমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, আমি ফুলবাড়ী ভাই ভাই নার্সারী থেকে বিজলী প্লাস মরিচের চারা ক্রয় করে এনে দেড় বিঘা জমিতে চাষ করেছি। ফলন আসছে শুরু করেছে কিন্তু গাছগুলো মরতে শুরু করেছে।

আর এই গাছগুলো মরার কারণ নার্সারী মালিক আমার সাথে প্রতারনা করেছে। আমি বিজলী প্লাস চারা তাদের নিকট থেকে ক্রয় করেছি সেটা না দিয়ে সে আমাকে ষ্টার প্লাস দিয়েছে। আমি বিজলী প্লাস গাছের যে সকল পরিচর্যা ও ঔধষ সেগুলো ব্যবহার করেছি। এতে চারা পরিবর্তন হওয়াতে গাছগুলো মরে যাচ্ছে। আমি এই দেড় বিঘা জমি থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ লক্ষা টাকার মরিচ প্রতি বছর বিক্রয় করি। সেখানে আমার সাথে প্রতারনা করায় খরচ তুলতে পারব কিনা। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

কথা হয় অন্য কৃষক সুবাদ চন্দ্রের সঙ্গে তিনিও জানান, এক বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করেছি। শুরুতে চারার জাত চেনা যায় না। ফলন আসলে চেনা যায় কোন জাত। আমার সাথেও একই প্রতারনা করেছে। আমি ঋণ করে জমি চাষ করেছি। এখন এই ঋনের টাকা আমি পরিশোধ করব কিভাবে। আমারা এই কৃষি আবাদ করেই সংসার চালায়। আমার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এই চারা ব্যবসায়ীদের প্রতারনায় আমরা নি:স্ব হয়ে গেলাম। এর উপযুক্ত বিচার চাই।

সুমল চন্দ্র বলেন, আমি ৩ বছর ধরে বিজলি প্লাস ১৬ শতাংশ জমিতে চাষ করি। এটা দিয়েই আমার সংসার চলে। এবার আমার সাথে চারা ব্যবযায়ী মেসার্স ভাই বোন নার্সারীর মালিক ফজলুল হক প্রতারনা করায় আমার জমির গাছগুলো মারা যাচ্ছে। আমি কিভাবে চলব। আমার সব স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেল। যদি আমাদের পরিচর্ষার কোন সমস্যায় গাছ মারা যায় তাহলে ১জনের যাবে। কিন্ত সেইটা নয়। আমরা একেকটি গাছের একেক ধরনের চিকিৎসা। আমরা চারা ক্রয় করেছি বিজলী প্লাস চিকিৎসা বা পরিচর্যা করেছি বিজলী প্লাস। সেখানে আমাদের দিয়েছি ষ্টার প্লাস। এ কারনে গাছগুলো মারা যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুলবাড়ী রানীনগর এলাকার নার্সারী ব্যবসায়ীরা জানান, একেকটি চারার একেক ধরনের চিকিৎসা বা পরিচর্যা এজন্য গাছ মরতে পারে তারপর এবার খরা চলছে এজন্যও গাছগুলো মারা যেতে পারে। তবে বিজলী প্লাসের দাম বেশি এবং ষ্টার প্লাসের দাম কম। যে চারা তার নিকট থেকে ক্রয় করেছে সেটা না দিয়ে অন্যটা দিয়ে থাকে তাহলে কৃষকের সঙ্গে প্রতারনা করেছে। এটা ঠিক করেনি। আর এতে আমাদের ফুলবাড়ী রানীনগর এলাকার নার্সারী ব্যবসায়ীদের সুনাম খুন্ন হবে। এভাবে প্রতারনা করলে এক সময় চারা ক্রয় করতে চাষীরা আর আসবেনা।

এ বিষয়ে জানতে মেসার্স ভাই বোন নার্সারীর মালিক ফজলুল হকের নার্সারী ও বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে কল করলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা খাতুন জানান, আমি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যদি প্রমান হয় তাহেল নার্সারী মালিকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/রাত ৮:১৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit