শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৭ অপরাহ্ন

মরক্কোর আকাশে ‘রহস্যময়’ আলোই ছিল ভূমিকম্পের ইঙ্গিত!

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৬৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভূমিকম্পটি আঘাত হানার কিছুক্ষণ আগে মরক্কোর আকাশে বিদ্যুতের ঝলকানির মতো অদ্ভুত আলোকছটা দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশটির অনেক বাসিন্দা এই অদ্ভুত আলোকছটার ছবি শেয়ার করেন। দাবি জানান, তারা এই আলোকছটা দেখেছেন। এ নিয়ে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে নেট দুনিয়ায়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ছবির সত্যতা নিরূপণ করা কঠিন হলেও, বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার আগে তা বায়ুমণ্ডলে নানান রকম আলোকছটা তৈরি করতে পারে। এ ধরণের ঘটনা মাটির নিচে বৈদ্যুতিক প্রবাহ পরিবর্তনের কারণেই হয়। 
 
এ বিষয়ে ভূ-পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রিডম্যান ফ্রন্ড বলেছেন, ‘মরক্কোতে রাতের বেলায় ভূমিকম্প হয়েছিল। তাই ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট আলো দেখতে পাওয়া বা সে দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণের ঘটনা স্বাভাবিক।’বিজ্ঞানীরা বলছেন,  ভূমিকম্পের কারণে নানান রকম আলোর বিচ্ছুরণ হতে পারে। এর মধ্যে মেঘের আড়ালে বিজলীর মতো আলোর ঝলকানি দেখতে পাওয়াটাই সবচেয়ে বেশি ঘটে। তবে ঝড়ের সময় আকাশে যেভাবে বজ্রের ঝলকানি দেখা যায়– এটা তেমন নয়।
 
ফ্রিডম্যান জানান, ভূমিকম্পের বিদ্যুৎ তরঙ্গ মাটি থেকে মেঘের দিকে ওঠে। পৃথিবীর অভ্যন্তরের ভূতাত্ত্বিক ক্রিয়াকালাপের ফলেই এসব বৈদ্যুতিক চার্জ সক্রিয় হয়। পৃথিবীর টেকটনিক প্লেটগুলোর নড়াচড়ার ফলেই ভূকম্পনের আলো সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার মতে, এই আলোকছটা অনেক সময় স্থির-উজ্জ্বলভাবে জ্বলতে পারে। কখনো আলো গোলক আকারে, আবার কখনো বিদ্যুৎ চমকানোর মতো হতে পারে।
 
ফ্রিডম্যান এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করে বলেন, আমাদের পৃথিবী বিদ্যুৎ পরিবাহী। ভূমিকম্পের সময় মাটির নিচের শিলাস্তর ও খনিজগুলো অবিন্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন ভূপৃষ্ঠের ফাটল দিয়ে বিদ্যুৎশক্তি বেড়িয়ে আসে। বৈদ্যুতিক চার্জ ভূপৃষ্ঠের কাছে অনেক বেশি পরিমাণে জমা হলে– একপর্যায়ে তার বিচ্ছুরণ ঘটে। কারণ, পৃথিবীর উচ্চ বায়ুমণ্ডলে থাকা নেগেটিভ চার্জের সূক্ষ্মকণা শিলাস্তরের পজিটিভ চার্জকে আকর্ষণ করে। এ দুই ধরনের চার্জ যখন মিলিত হয়, তখনই তা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়।তার মতে, দিনের বেলাতেও ভূমিকম্পের ফলে এ ধরনের আলো তৈরি হয়। কিন্তু সূর্যের আলোর কারণে বেশিরভাগ সময়ই তা দেখা যায়না। কিন্তু রাতে এ আলো ভালোভাবেই দেখা যায়।  এমনকি অদ্ভুত এই আলো নিয়ে তখন সংবাদও প্রচারিত হয়। এই আলোর রং নির্ভর করে বায়ুমণ্ডলে কোন ধরনের কণা ভূপৃষ্ঠের চার্জে আকৃষ্ট হয়েছে তার ওপর। অক্সিজেনের কণা হলে আলোর রঙ লাল বা সবুজাভ হতে পারে। আবার এ দুয়ের সংমিশ্রণে উজ্জ্বল হলুদ আলোর ঝলকানিও দেখা যায়।

 
ফ্রিডম্যান আরও বলেন, ‘ভূপৃষ্ঠ ও আকাশে বৈদ্যুতিক চার্জের পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় মানুষ বা পশুপাখির মাথাব্যথা হতে পারে। এ কারণেই ভূমিকম্পের আগে কিছু প্রাণি অস্বাভাবিক আচরণ করে। বৈদ্যুতিক চার্জের ঘটনা মানুষ অন্যভাবেও অনুভব করে। অনেক সময় এই চার্জের কারণে আমাদের চুল খাড়া হতে পারে, বা ত্বকে সুড়সুড়ির মতো অনুভূতি হতে পারে।’
 
তিন দশক ধরে নাসায় ভূমিকম্প ও তার আলো নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানী ফ্রিডম্যান বলেন, ভূমিকম্পের আলো দেখা গেছে- এ থেকে বুঝতে হবে মাটির নিচে চাপের পরিমাণ বাড়ছে এবং একসময় তা থেকে ভূমিকম্প আঘাত হানবে। তবে আলো দেখার পর ভূমিকম্প যে হবেই– তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৬:০৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit