শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন

ঘরোয়া উপায়ে যেভাবে কমাবেন হাঁপানি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১২৯ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেসক : ফুসফুসের রোগগুলোর মধ্যে একটি রোগ হল অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ। যেকোনো বয়সের মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে হাঁপানি সাধারণত ছোটবেলা থেকেই শুরু হয়।

হাঁপানি কি?

হাঁপানি বা অ্যাজমা শ্বাসনালীর দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ, যার কোনো স্থায়ী চিকিৎসা নেই। যখন শ্বাসনালীতে প্রদাহ হয় বা ফুলে উঠে তখন তারা সংকীর্ণ এবং খুব সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, যার ফলে হাঁপানি নামক দীর্ঘমেয়াদী রোগটি হয়।

এছাড়াও, শ্বাসনালীতে অতিরিক্ত শ্লেষ্মা উৎপাদিত হলে শ্বাসনালী আরও সংকুচিত হয়ে উঠে, এতে করে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

হাঁপানির কারণ

১. শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ

২. অ্যালার্জিজনিত কারণ, যেমন পশুর পশম, অতিরিক্ত ধুলো-বালি ইত্যাদি।

৩. বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারে অনেকের হাঁপানি দেখা দেয়

৪. পরিবেশে রাসায়নিক পদার্থ, নির্দিষ্ট স্প্রে, সিগারেটের ধোঁয়া ইত্যাদির কারণেই অনেক ক্ষেত্রে হাঁপানি হয়ে থাকে।

৫. অতিরিক্ত শারীরিক কার্যকলাপ বা ব্যায়াম।

৬. খাবারে রাসায়নিক পদার্থ, যেমন সালফাইট

৭. এ রোগ জেনেটিক বা বংশগত কারণে হতে পারে। বংশে কারও এ রোগ থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের যে কারও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

হাঁপানির লক্ষণ

১. দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট

২. কাশি, রাতে হলে বাড়তে থাকে।

৩. বুকে আঁটসাঁট ভাব বা চাপ অনুভূত হওয়া।

৪. নাকে-মুখে ধুলাবালু বা পশুর পশম গেলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া

হাঁপানি কমানোর ঘরোয়া উপায়

হাঁপানি রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময়ের উপায় এখনো চিকিৎসাবিজ্ঞানের অজানা। তবে কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়ে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

১. হাঁপানি কমাতে ইউক্যালিপ্টাসের তেল

ইউক্যালিপ্টাসের তেলে থাকা ইউক্যালিপটল উপাদান কফ ভেঙ্গে দিতে সাহায্য করে এবং হাঁপানিতে শ্বাসকষ্ট কমাতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে। একটা তোয়ালেতে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপ্টাস তেল মিশিয়ে, তোয়ালেটা ঘুমানোর সময় এমনভাবে পাশে রাখুন যাতে তেলের সুগন্ধ পাওয়া যায়।

২. হাঁপানি কমাতে ল্যাভেন্ডার তেল

ল্যাভেন্ডার তেল শ্বাসনালীর প্রদাহকে বাধা দেয় এবং শ্লেষ্মা উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। এটি শ্বাসনালী দিয়ে বাতাস চলাচল প্রশমিত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। একটি বাটিতে গরম পানি নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল যোগ করুন এবং ৫-১০ মিনিটের জন্য বাষ্পটি থেকে শ্বাস নিন।

৩. হাঁপানি কমাতে টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েলে বিদ্যমান এক্সপেকটোর‍্যান্ট এবং ডিকনজেস্ট্যান্ট বৈশিষ্ট্য শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং অতিরিক্ত শ্লেষ্মা দূর করতে কাজ করে। এই তেলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, যা শ্বাসনালীতে প্রদাহ কমায় এবং শ্বাসযন্ত্রের যে কোনও সংক্রমণ দূর করে।

একটি ছোট রুমাল বা কাপড় গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে কাপড়টিতে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল যোগ করুন। এরপর কাপড়টি থেকে ঘ্রাণ নিন।

৪. হাঁপানি কমাতে মধু

শ্বাসকষ্টের জন্য মধু হল প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে প্রাকৃতিক প্রতিকার। এটিতে অ্যালকোহল এবং অন্যান্য তেল রয়েছে যা হাঁপানির লক্ষণ কমাতে সহায়তা করে। এটি গলা থেকে কফ অপসারণ করে এবং ভাল ঘুমাতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন তিনবার এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। এ ছাড়া ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক চা চামচ মধুর সাথে অল্প দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে খেয়ে নিন।

৫. হাঁপানি কমাতে হলুদ

হলুদের অন্যতম প্রধান উপাদান কারকিউমিন। এই ফাইটোকেমিক্যাল হাঁপানি কমাতে অ্যাড-অন থেরাপি হিসেবে খুবই উপকারী। এটি শরীরের প্রদাহ রোধ করে এবং শ্বাসনালীর প্রদাহকে উপশম করে। হলুদ একটি কার্যকরি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট।

এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে এক চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে খান। এই মিশ্রণটি ১০-১৪ দিনের জন্য দিনে তিনবার করে পান করুন।

৬. হাঁপানি কমাতে কফি

কফি পান হাঁপানির চিকিৎসার সবচেয়ে সহজ উপায় কারণ এটি দ্রুত শ্বাসনালীকে প্রসারিত করে এবং শ্বাস নিতে সাহায্য করে। কফিতে থাকা ক্যাফেইন ব্রঙ্কোডাইলেটরি হিসেবে কাজ করে এবং সংকুচিত শ্বাসনালী খুলে দেয়। হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে তাৎক্ষণিক প্রতিকার হিসেবে গরম কফি পান করুন।

৭. হাঁপানি কমাতে আদা

প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত একটি ভেষজ আদা। যা শ্বাসযন্ত্রের নালীকে সুস্থ রাখে। আদা শ্বাসনালীর পেশীগুলিকে শিথিল করে এবং ক্যালসিয়াম গ্রহণকে নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে সংকোচন উপশম হয় এবং হাঁপানি থেকে মুক্তি দেয়।

আদা কুঁচি করে কেটে উষ্ণ গরম পানিতে যোগ করুন। পানি ছেঁকে নিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে গরম থাকা অবস্থায় এই ভেষজ পান করুন।

৮. হাঁপানি কমাতে রসুন

রসুন ফুসফুসের ব্লক দূর করতে সাহায্য করে এবং এটি শ্বাসনালীর প্রদাহও হ্রাস করে। এক কাপ দুধের মধ্যে রসুন ও লবঙ্গ ফুটিয়ে পান করুন। এটি হাঁপানির লক্ষণ কমাতে সহায়ক।

৯. হাঁপানি কমাতে ভিটামিন ডি ও সি

ভিটামিন ডি অ্যাজমার উপসর্গ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এই ভিটামিনের প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিক্রিয়া হাঁপানি কমাতে সহায়তা করে। হাঁপানি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি এবং সি এর সাপ্লিমেন্ট সেবন করা যেতে পারে।

কিউএনবি/অনিমা/১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩,/বিকাল ৩:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit