আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিংহভাগ ব্রিটিশ শিক্ষার্থী এখন সন্দিহান। তারা জানেন না আসলে কী বিষয়ে পারদর্শী হওয়া উচিত। কোন পেশার জন্য নিজেকে গড়ে তোলা উচিত, যেটি এআই মানুষের থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
সম্প্রতি সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা ক্যাসপারেস্কির এক গবেষণায় দেখা যায়, ওপেন এআই বাজারে চ্যাটজিপিটি নিয়ে আসার পর এবং এ ধরনের এআই ভিত্তিক সফটওয়্যারের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫৭ শতাংশ চাকরিজীবী এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে মিটিংয়ের সারমর্ম বা প্রেস বিজ্ঞপ্তি লিখতে এআই’র ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ।
থমসন রয়টার্সের বেশ কয়েকটি গবেষণালব্ধ তথ্য বলছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ৬৭ শতাংশ চাকরিতে এআই’র প্রভাব পড়বে। এআই এমন একটি চাকরির বাজার তৈরি করবে যেটি একেবারেই নতুন।
ইংল্যান্ডের সারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এন্ড্রু রোগোস্কি বলেন,এআই কোনদিকে মোড় নিচ্ছে সেটি এখনই হলফ করে কেউ বলতে পারবে না। অনেকেই অনেক কিছু বলছেন। কিন্তু এটি এমন একটি উদ্ভাবন যেখানে পাঁচ বছর পরের চিত্র নিশ্চিত হয়ে কিছুই বলা যায় না। বিজ্ঞান বা প্রকৌশোলের জগতে মানুষ এবং এআই পাশাপাশি বিচরণ করবে। স্বাস্থ্যখাতেও দেখা যাবে এমন চিত্র। এখানে মানুষকে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
রোগোস্কি বলেন, এআইকে প্রতিযোগী ভেবে এড়িয়ে গেলে চলবে না। যদি এআইকে মানুষের শত্রুও ধরে নিই, তাহলে সেখানে বুদ্ধিমান মানুষের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একজন বুদ্ধিমান মানুষ বন্ধুর দিকে নজর রাখুক বা না রাখুক, শত্রুকে ঠিকই নজরদারির মধ্যে রাখে। এআইকে নজরদারিতে রাখতে হবে। এটি ব্যবহারের খুঁটিনাটি জেনে নিতে হবে। আগামীর চাকরির বাজারে তারাই গুরুত্ব পাবে যারা এআইকে চালাতে জানে। এখনই নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যাতে এআই তরুণদের চালনা করার আগে তরুণরা এআই’র ওপর হুকুমদারি করতে পারে।
প্রায় একই কথা বলেন ডাচ ব্যাংকিং গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ জেমস নাইটলি। তিনি বলেন, এমন কোনো পেশা নেই যেখানে এআই’র প্রভাব পড়বে না। এখন নিজেকে গড়ার একটাই রাস্তা এইআই আপনাকে প্রভাবিত করার আগে, আপনি এআইকে প্রভাবিত করবেন।
রোগোস্কি বলেন, এআই’র কারণে মূলত সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন যারা কপিরাইটার বা গ্রাফিক্সের কাজ করেন তারা। এ ধরনের কাজের জন্য এখন মানুষের প্রয়োজনীয়তা দিনকে দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। এদিকে শিক্ষকরা বলছেন, এআই’র দুনিয়ায় বড় রকমের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা যেখানে শিক্ষার্থীদের এআই নিয়ে বিশদ জ্ঞান দেয়া যায়। জ্ঞানের পরিধি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে করে মানুষের বিকল্প কখনই যন্ত্র না হয়। বরং মানুষই যেন যন্ত্রের ওপরে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে পারে।
কিউএনবি/আয়শা/২৯ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ৯:২১