স্পোর্টস ডেস্ক : আর্জেন্টিনার সাফল্যের গল্পে লিওনেল মেসিকে যদি অর্জুন ধরা হয় তবে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া হলেন তার রথের সারথি কৃষ্ণ। ফাইনালে ম্যাচে এই দুজনের রসায়ন আরও জমে ওঠে। আর্জেন্টিনার দীর্ঘ শিরোপাখরা কেটেছিল ২০২১ এর কোপা আমেরিকার ফাইনালে। গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ খেলে মেসি সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন। আর ফাইনালে গোল করে আলবিসেলেস্তেদের তৃষ্ণা মিটিয়েছিলেন ডি মারিয়া।
এরপর লা ফিনালিসিমা থেকে শুরু করে কাতার বিশ্বকাপ; মেসি-মারিয়া জুটির ঔজ্জ্বল্য বেড়েই চলেছে। ফিনালিসিমায়ও গোল করেছিলেন ডি মারিয়া। আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি আসে তার পা থেকে। কাতার বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে বেশির ভাগ ম্যাচেই খেলতে পারেননি ডি মারিয়া। কিন্তু ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে সুযোগ পেয়ে নিজের জাত চেনান। সেদিন যতক্ষণ মাঠে ছিলেন ঔজ্জ্বল্যে মেসিকেও ম্লান করে দিয়েছিলেন। এদিন ফ্রান্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে ফাইনালে জোড়া গোল করেছিলেন মেসি।
অনেকেই বলেন, বড় ম্যাচের খেলোয়াড় ডি মারিয়া ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল ইনজুরির জন্য মিস না করলে সে বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারত আর্জেন্টিনা। ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে মারিও গোৎসে গোল করে জার্মানিকে জয় এনে দিয়েছিলেন। মেসি-ডি মারিয়া জুটির শুরুটা বেশ আগেই। আর্জেন্টিনাকে শিরোপাও এনে দিয়েছিলেন তারা। তবে কাগজেকলমে সেটি অনূর্ধ্ব-২৩ দল হওয়ায় আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের শিরোপা হিসেবে সেটি ধরা হয় না। ২০০৮ সালের অলিম্পিকে মেসি-ডি মারিয়া জুটি প্রথমবার বিশ্বকে নিজেদের ঝলক দেখায়। চীনে অনুষ্ঠিত সেই অলিম্পিকের ফুটবল ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছিল আর্জেন্টিনা।
সেই অলিম্পিকে ‘এ’ গ্রুপ থেকে রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল মেসি-ডি মারিয়ার দল। তারকাসমৃদ্ধ আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস ও সেমিফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। সেখানে ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জয় করে আর্জেন্টিনা। সে অলিম্পিকে মেসি গ্রুপ পর্বে আইভরি কোস্টের বিপক্ষে গোল করেন। গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে গোল না পেলেও কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে গোল করেন তিনি। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো সে ম্যাচে ডি মারিয়া আসরে তার প্রথম গোলটি করেন।
সেমিফাইনালে আগুয়েরোর জোড়া গোল ও রিকুয়েলমের গোলে ৩-০ গোলে ব্রাজিলকে হারায় আর্জেন্টিনা। এরপর ফাইনালে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেন ডি মারিয়া। অলিম্পিকের সেই ফাইনালটি হয়েছিল আগস্টের ২৩ তারিখে। সে হিসেবে আজ মেসি-ডি মারিয়াদের অলিম্পিক জয়ের ১৫ বছর পূর্তি। আর সেই দিনটি স্মরণ করেছেন মেসি-ডি মারিয়া দুজনই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বুধবার (২৩ আগস্ট) অলিম্পিক স্বর্ণ জয়ের ১৫ বছর পূর্তিতে মেসির সঙ্গে নিজের ছবি শেয়ার করেছিলেন ডি মারিয়া। অলিম্পিক স্বর্ণ জয়ের মুহূর্তটির পাশেই কাতার বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তটির ছবি স্টোরিতে দেন তিনি।
বিষয়টি চোখ এড়ায়নি মেসিরও। তাই ডি মারিয়ার স্টোরিটি নিজের ইনস্টাগ্রাম আইডিতে স্টোরি দিয়েছেন মেসিও। সেখানে জুড়ে দিয়েছেন নিজের কথাও। নিজেদের বন্ধুত্বের দিকে ইঙ্গিত করে স্প্যানিশ ভাষায় লিখেছেন, ‘সবকিছু আগের মতোই আছে।’ ১৫ বছর আগের শিরোপা জয়ের মুহূর্তটা থেকে আজকের বিশ্বজয়ী ফুটবলার হয়ে ওঠার যাত্রাপথে দুজনের বন্ধুত্ব যে অটুট আছে তাই হয়ত জানিয়ে দিলেন মেসি।
কিউএনবি/আয়শা/২৩ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১১:৫০