মঙ্গলবার কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে শুরুতে এগিয়ে গেলেও ডিফেন্সের একাধিক ভুলের চড়া মাশুল দিতে হয়েছে আকাশীদের। গত বছরের মতো কালও ৩-১ গোলে হেরে আরেকবার গ্রুপপর্বের আগেই বিদায় নিতে হয়েছে আবাহনীকে। বাগান সহযাত আক্রমনাত্মক ফুটবলে প্রতিপক্ষকে পিস্ট করে পা রেখেছে গ্রুপপর্বে। যেখানে আগে থেকেই আছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস।
অথচ প্রথমার্ধটা আবাহনী শেষ করেছিল ১-১ গোলের সমতায়। স্বাগতিকরা প্রাধান্য বিস্তার করলেও শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল আবাহনী। ১৭ মিনিটে সুযোগ সন্ধানী গোলে দলকে এগিয়ে নেন সেন্ট ভিনসেন্ট ফরোয়ার্ড স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া বাগানকে ৩৪ মিনিটে পেনাল্টি উপহার দেন আবাহনী ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। তা থেকে সমতা এনে দেন দলটির অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপার জ্যাসন কামিন্স। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল হজম করতে হয় আবাহনীকে। দুটি গোলেই দায় আছে আবাহনীর ডিফেন্ডারদের। ৫৮ মিনিটে ইরানি ডিফেন্ডার ইরান শেখ সুলাইমানি আত্মঘাতী গোল করেন। এর দুই মিনিটর পর আবাহনীর ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে ৩-১ করেন বুলগেরিয়ান ফরোয়ার্ড আর্মান্ডো সাদিকু।
প্রথমার্ধে আক্রমণের দিক থেকে বাগান এগিয়ে থাকলেও বলের নিয়ন্ত্রণে একেবারে পিছিয়ে ছিলো না আবাহনী (৪৫ শতাংশ)। গোলের সুযোগে তো এগিয়ে ছিল আবাহনীই। ১৭ মিনিটে আবাহনী গোল পায় বাগান কিপার বিশাল কায়েথের অবিশ্বাস্য ভুলে। নাইজেরিয়ান অ্যাটাকার এমেকা ওগবাহর একটি নির্বিষ শট বাগান বিশাল কাইথের গ্লাভস ফসকালে কর্নেলিয়াস বাঁ পায়ের প্লেসিংয়ে জালে কাঁপিয়ে উল্লাসে মাতেন। তবে আবাহনীর এগিয়ে যাওয়ার স্বস্থি উবে যায় ৩৪ মিনিটে সুশান্ত ভুলে। বক্সের ভেতরে ভারত তারকা লিস্টন কোলাসোকে ফেলে দেন তিনি। পেনাল্টি থেকে বাগানকে ম্যাচে ফেরান ২০২২ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলা ফরোয়ার্ড কামিন্স। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবাহনীকে এগিয়ে যেতে দেয়নি সাইড পোস্ট। এবারই বাগান কিপারের ভুলে বল গড়াতে গড়াতে সাইড পোস্টে লেগে ফিরে আসলে সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতি থেকে ফিরে আবাহনীর রক্ষণভাগে হামলে পড়ে বাগান। একের পর এক চাপ সামলাতে গিয়ে আবাহনীর রক্ষণের মনসংযোগ নড়ে যায় ৫৮ মিনিটে। মিলাদ শেখ সুলাইমানির আত্মঘাতী গোল উপহার দেন স্বাগতিকদের। বাগানের ফরাসি তারকা হুগো ভুমোসের গড়ানো ক্রস গোলমুখ থেকে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন ইরানী ডিফেন্ডার। এর দুই মিনিটর আচমকা এক কর্নারে লিস্টন কোলাসো ভুমোসের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে গোল মুখে আর্মান্দো সাদিকুকে বাড়ান। আবাহনীর ডিফেন্ডারকের চোখ এড়িয়ে আলতো টোকায় বল পোস্টে জমা দেন বুলগেরিয়ান তারকা। এই গোলে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে পড়ে আবাহনী। বরং পিছিয়ে পড়েও দারুণ খেলে ৩-১ এ এগিয়ে গেলেও আক্রমণের গতি কমায়নি বাগান। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের করে আক্রমণাত্মক মেজাজেই খেলেছে তারা। শেষ দিকে বিচ্ছিন্ন কিছু চেষ্টা ছিল আবাহনীর। সেগুলো থেকে গোল না হওয়ায় আরেকবার হারের কষ্ট নিয়ে কলকাতা থেকে দেশে ফিরতে হবে আবাহনীকে।