আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের একটি হাসপাতালের সাত নবজাতককে হত্যার দায়ে এক ব্রিটিশ নার্সকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। নিজেকে ‘ভয়ানক শয়তান ব্যক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করা ওই নার্সকে শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
দোষী সাব্যস্ত ওই নার্সের নাম লুসি লেটবি (৩৩)। তিনি ওই হাসপাতালের নবজাতকদের ইউনিটের আরও ছয় নবজাতককে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সোমবার (২১ আগস্ট) তাকে দীর্ঘ কারাবাসের সাজা দেওয়া হবে। সম্ভবত যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের বিরল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেতে যাচ্ছেন লুসি লেটবি।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লুসি লেটবি ইংল্যান্ডের কাউন্টিস অব চেস্টার হাসপাতালের নবজাতকদের ইউনিটে রাতের শিফটে কাজ করতেন। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালে ওই হাসপাতোলের কাজ করার সময় লুসিকে পাঁচটি ছেলে নবজাতক এবং দুটি মেয়ে নবজাতককে হত্যা এবং অন্য নবজাতকদের ওপর হামলা চালানোর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
নিহত এই শিশুদের মধ্যে যমজ নবজাতক ছিল। আবার দুটি হত্যার ক্ষেত্রে যমজ ভাইবানের একজনকে হত্যা করতে ব্যর্থ হন লুসি। তার হত্যার শিকারদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট নবজাতকের বয়স ছিল একদিন।
এই হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার বাসা থেকে পুলিশের উদ্ধার করা হাতে লেখা একটি নোটে লেখা ছিল-‘আমি তাদের হত্যা করেছি, কারণ আমি তাদের ভালভাবে যত্ন নিতে পারি না। আমি একজন ভয়ানক শয়তান ব্যক্তি। আমি শয়তান আমিই এই ঘটনা (হত্যা) ঘটিয়েছি।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ম্যানচেস্টার ক্রাউন আদালতে ১০ মাস ধরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বিচার চলে। শুক্রবার যন্ত্রণাদায়ক বিচার শেষে দেওয়া রায়ে লুসিকে ব্রিটেনের আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সিরিয়াল শিশু হত্যাকারীতে পরিণত করেছে।
তাকে অপর দুটি খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। এদিনের রায় দেওয়ার আগে জুরিরা ১১০ ঘন্টা ব্যয় করেও অন্য ছয়টি সন্দেহভাজন হামলার বিষয়ে একমত হতে পারেন নি।
এদিকে এ মামলার আইনজীবীরা জুরিকে জানিয়েছেন, হত্যার শিকার নবজাতকদের কাউকে কাউকে লুসি বিষাক্ত ইনসুলিনের ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করেছে। অন্যদেরকে হয় বাতাসের ইনজেকশন দিয়ে নয়তো অতিরিক্ত দুধ পান করিয়ে হত্যা করেছে সে। অনেকক্ষেত্রেই হত্যার শিকার এই নিষ্পাপ শিশুদের মেরে ফেলার আগে একাধিকবার আঘাত করেছে সে।
লুসির ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। আমরা বিধ্বস্ত, ক্ষুব্ধ এবং অসাড় বোধ করছি। সত্যিকার অর্থে আমরা হয়তো কখনোই জানতে পারব না যে, কেন এমনটি ঘটেছে।
কিউএনবি/অনিমা/১৯ অগাস্ট ২০২৩,/দুপুর ১২:৫১