বিনোদন ডেস্ক : ননদের ছেলে মোহিত মারওয়ার বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুবাই গিয়েছিলেন। ফেরা হল না মুম্বাইতে, এসেছিলেন কফিনবন্দি হয়ে ফিরে। ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের জুমেরা হোটেলে নিজের ঘরেই বাথটাবে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন সুপারস্টার শ্রীদেবী।
সেসময় তার মৃত্যু ঘিরে অনেক রহস্য সামনে আসে। শ্রীদেবীর দুবাই সফরের সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্বামী বনি কাপুর। অনেকের ধারণা ছিল, বনি কাপুরের সঙ্গে তার সেসময় বনিবনা হচ্ছিল না। মৃত্যু নিয়ে রহস্য বেড়েই চলছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে তখন হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হলেও দুবাইয়ের পুলিশ ও পাবলিক প্রসিকিউটর বলে ভিন্ন কথা। এটা হত্যা, দুর্ঘটনা নাকি অসুস্থতাজনিত মৃত্যু তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়।
দুবাইয়ের পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ফরেনসিক প্রতিবেদনে শ্রীদেবীর মদ্যপানের আলামত উঠে এসেছে। আর অতিরিক্ত মদ্য পানই কাল হলো বলিউডের জনপ্রিয় ওই অভিনেত্রীর। দুবাইয়ের এক ঊর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে খালিজ নিউজ জানিয়েছেল, অতিরিক্ত মদ্য পানের কারণেই শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রাতে মদ্য পান করে ঘুমাতে যান শ্রীদেবী। তবে ঘুমের ঘোরে বাথরুমে প্রবেশ করেই বাথট্যাবের উপর পড়ে যান শ্রী। বাথট্যাবপূর্ণ পানিতে ডুবেই এই অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
হিন্দি সিনেমার জগতে শ্রীদেবীকেই প্রথম ‘সুপারস্টার’ হিসেবে বিবেচিত করেছিলেন প্রযোজকরা। শুধু হিন্দি নয়, তামিল, তেলুগু, মালয়ালম এবং কন্নড় চলচ্চিত্র মঞ্চেও সদর্পে দক্ষতা প্রমাণ করেছিলেন তিনি। হিন্দি চলচ্চিত্রে যে কজন অভিনেত্রী পুরুষ সহকর্মীর সহায়তা ছাড়াই বক্স অফিসে ঝড় তুলতে পেরেছিলেন, তাদের মধ্যে শ্রীদেবী অন্যতম। একটা সময় তাকে বলা হতো বলিউডের ‘নারী অমিতাভ বচ্চন’। ওই সময় তিনি শাসন করতেন বলিউডের দুনিয়া। সেই নব্বই দশকেই প্রায় ১ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিতেন এই অভিনেত্রী।
১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট তামিলনাড়ুতে জন্মেছিলেন শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়াপ্পন। তবে সবাই তাকে চেনেন শ্রীদেবী নামে। ছোট থেকেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও অসীম সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন। মাত্র চার বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন। আট বছর বয়সে, ১৯৭১ সালে মালায়লাম সিনেমা ‘পুমবাতা’য় অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা শিশু অভিনেত্রীর পুরস্কার পান শ্রীদেবী। এরপর পাঁচ দশকের অভিনয় জীবনে তিনি ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’, ‘চাঁদনি’, ‘চালবাজ’, ‘তোফা’, ‘গুমরাহ’, ‘মাওয়ালি’, ‘নাগিনা’ ও ‘সদমা’ অন্যতম।
১৯৯৭ সালে শ্রীদেবীর ‘জুদাই’ সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর চলচ্চিত্রকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ২০১২ সালে ‘ইংলিশ-ভিংলিশ’ সিনেমার মাধ্যমে আবারও ফিরে আসেন। ১৫ বছর পর সেই নির্বাসন ভেঙে ফিরে এসে পান ‘ভারতের মেরিল স্ট্রিপ’ খেতাব। ২০১৭ সালে সর্বশেষ তাকে ‘মম’ সিনেমায় দেখা গেছে।
কিউএনবি/আয়শা/১৩ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১০:১৯