বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন

অতৃপ্তি নিয়েই ২১ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩
  • ৯৬ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : দুই পায়ে তিনি জাদু দেখিয়েছেন। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে আছে তার অসংখ্য সাফল্য। প্রাপ্তির ভান্ডার সমৃদ্ধ বলে মেয়েদের ফুটবলের কিংবদন্তী মার্তা। শুধু কি তাই! সাফল্যের কারণে তাকে অনেকেই ‘স্কার্ট পরা পেলে’ নামে ডাকেন। কিন্তু আজ শূন্য হাতে এই ফুটবলার বিদায় নিয়েছেন। কারণ প্রত্যাশিত বিশ্বকাপের ট্রফি ছোঁয়া হলো না তার।

২০০২ সালে ক্যারিয়ার শুরু করা মার্তার আক্ষেপ ঘোচানোর শেষ সুযোগ ছিল এবার। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে চলমান নারী বিশ্বকাপ জিতে জীবনের একটি অপূর্ণতা পূরণ করতে পারতেন তিনি। কিন্তু গ্রুপ পর্বে জামাইকার সঙ্গে শেষ ম্যাচে ব্রাজিল করেছে ড্র। তাতে তৃতীয় হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন মার্তারা। আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। ছিটকে যাওয়ায় আজীবন আফসোসের অনলে পুড়তে হবে তাকে। ২১ বছরের ক্যারিয়ারটা শেষ হলো অতৃপ্তি নিয়েই।

অথচ ৩৭ বছর বয়সী মার্তাই বিশ্ব ফুটবলের লিডেন্ড। বিশ্বকাপে তার গোল সংখ্যার কীর্তি গড়তে পারেননি অনেক ছেলে ফুটবলারও।

এবার তিনি ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলেছেন। মার্তার ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলাটা কোনো রেকর্ড নয়। তার চেয়ে বেশি ৭টি বিশ্বকাপ খেলেছেন ব্রাজিলেরই সাবেক খেলোয়াড় ফরমিগা। কিন্তু একটি রেকর্ডে ছেলে ও মেয়েদের বিশ্বকাপ মিলিয়ে সবার ওপরে মার্তা। টুর্নামেন্টে সবমিলিয়ে ১৭টি গোল করেছেন ব্রাজিল নারী দলের ফরোয়ার্ড মার্তা। যেটা ছেলে আর মেয়েদের বিশ্বকাপ মিলিয়েই রেকর্ড। ছেলেদের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের মালিক মিরোস্লোভ ক্লোসা। জার্মানির সাবেক ফরোয়ার্ডের গোলসংখ্যা ১৬টি।

ছেলে ও মেয়েদের বিশ্বকাপ মিলিয়ে এবার আরও একটি রেকর্ড শুধুই নিজের করে নিতে পারতেন মার্তা। চলমান টুর্নামেন্টে একটি গোল পেলেই ছেলে ও মেয়ে মিলিয়ে ছয় বিশ্বকাপে গোল করা একমাত্র ফুটবলার হতেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ আসরে গোল করার রেকর্ডটি এখন যৌথভাবে পর্তুগাল অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্দো ও ব্রাজিলিয়ান তারকা মার্তার।

পর্তুগালের তারকা ফরোয়ার্ড ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে একটি গোল পেয়েছেন। সেই এক গোলেই নিজের নামটি লিখিয়ে নিয়েছেন রেকর্ড বুকে। কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের পাঁচ আসরে গোল করেছেন সি আর সেভেন। ছেলেদের ফুটবলে এই কীর্তি আর কারো নেই। এবার সবমিলিয়ে সি আর সেভেনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল মার্তার। কিন্তু ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত এই ফুটবলার সেই কীর্তি গড়তে পারেননি তিনি।

এবারের দলে মার্তা তার দীর্ঘদিনের দুই অভিজ্ঞ সতীর্থকে পাননি। সতীর্থ আরেক কিংবদন্তি ফোরমিগা সাতটি বিশ্বকাপ খেলার পর ২০২১ সালে অবসর নিয়েছেন। অন্যদিকে ৩৮ বছর বয়সী ক্রিশ্চিয়ানে এবারের দলে জায়গা পননি। হাঁটুর ইনজুরির কারণে মার্তা নিজেও প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে ছিলেন। ২০০৩, ২০১০ ও ২০১৮ সালের তিনবারের কোপা আমেরিকা বিজয়ী মার্তা গত বছর ইনজুরির কারণে এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারেননি। তবে মার্তাকে ছাড়াই ব্রাজিল শিরোপা ধরে রাখে।

তাই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটাও দেখেছিল তাকে সঙ্গে নিয়েই। সেজন্য এই কিংবদন্তীকে নিয়েই দল সাজিয়েছিল। কিন্তু সেটা আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। তবে তিনি এখানেই শেষ করলেও নিজের অপূর্ণতার দায়িত্বটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তুলে রেখেছেন তিনি।

ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে কথা বলা কঠিন। কারণ এটা সেই বিশ্বকাপ, যেটা ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম আমি। কিন্তু আমি সেটা স্পর্শ করতে পারিনি। তবে এটা কেবল শুরু। ব্রাজিল ফুটবল দলে নবজাগরণ হয়েছে। এখানে একমাত্র বুড়ি ছিলাম আমি। বাকিরা সবাই প্রতিভাধর নবীন। যাদের সামনে পড়ে আছে অনেক সময়। তাই আমি থেমে গেলেও তারা খেলাটা চালিয়ে যাবে। যে বিশ্বকাপ আমি ছুঁতে পারিনি, তারা সেটা জয় করে আনবে।’

কিউএনবি/অনিমা/০২ অগাস্ট ২০২৩,/রাত ১১:৫৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit