হুমায়ুন আহমেদ এর বাবা মা ভাইবোন
———————————————–
শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা ফয়েজ নন্দিত লেখক, কথা জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ এর বাবা মা ।হূমায়ুন আহমেদ সহ তাঁর পিতামাতাও এখন প্রয়াত। তাঁর পিতা একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এবং তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন পিরোজপুর মহকুমার উপ-বিভাগীয় পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ হন। এসডিপিও’র পূর্ন ইংরেজি হলো সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার। ৮৩ সালে এরশাদ মহকুমা গুলো জেলায় রূপান্তরিত করলে বাংলাদেশে পুলিশ বিভাগের এই পদটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমান পদানুসারে এসডিপিও পদটি এসপির পদমর্যাদা সম্পন্ন।
হুমায়ূন আহমেদ এর বাবা সাহিত্যনুরাগী মানুষ ছিলেন। তিনি পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। বগুড়া থাকার সময় তিনি একটি গ্রন্থও প্রকাশ করেছিলেন, গ্রন্থের নাম ”দ্বীপ নেভা যার ঘরে”। তার মা’র লেখালেখির অভ্যাস না থাকলেও শেষ জীবনে একটি আত্মজীবনী গ্রন্থ রচনা করেছেন যার নাম ”জীবন যে রকম”।
হুমায়ুন আহমেদরা ৬ ভাইবোন। হুমায়ূন আহমেদ এর অনুজ মুহম্মদ জাফর ইকবাল দেশের একজন শিক্ষাবিদ এবং কথাসাহিত্যিক। সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা আহসান হাবীব রম্য সাহিত্যিক এবং কার্টুনিস্ট। তার তিন বোন হলেন সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহিদ শিখু, ও রোকসানা আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদ এর রচিত আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা থেকে জানা যায় যে ছোটকালে হুমায়ূন আহমেদের নাম রাখা হয়েছিল শামসুর রহমান; তাঁর বাবা ডাকতেন কাজলনামে আর মা ডাকতেন বাচ্চু নামে।
হুমায়ূন আহমেদ হঠাৎ একদিন একটি কবিতা লিখে ফেললেন —
দিতে পারো এক শ ফানুশ এনে?
আজন্ম সলজ্জ সাধ
একদিন আকাশেতে কিছু ফানুশ উড়াই…
সেই কবিতা তাঁর মেজ বোন মমতাজ আহমেদ শিখুর নামে দৈনিক পাকিস্তান-এ ছাপা হলো। ছাপার অক্ষরে তার কবিতা দেখে সবাই উত্তেজিত। কিন্তু কোন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই, তিনি তখন উপন্যাস লিখতে শুরু করেছেন। বরং মেজ বোন শিখু মহা ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেন সে-ই এই কবিতা লিখেছে! বলেও বেড়াচ্ছে তার বান্ধবীদের ওটা তারই লেখা!
এই কবিতার প্রথমাংশ হুমায়ুন আহমেদ তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ”শঙ্খনীল কারাগার” এর প্রথম পাতায় ফ্লপি হিসাবে যুক্ত করেন।
লেখকঃ লুৎফর রহমান একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি নিয়মিত লেখালেখির পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক নিউজ মিডিয়ার সম্পাদক ও প্রকাশক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র লুৎফর রহমান ৮০ এর দশকের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরতে দুটি রাজনৈতিক উপন্যাস লিখেছেন, যা দেশ বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবনের খন্ডচিত্র এঁকে তিনি এখন ব্যাপক পরিচিত।
কিউএনবি/নাহিদা/ ২৩.০৭.২০২৩/ দুপুর ২.০১