স্পোর্টস ডেস্ক : আবহাওয়া বার্তায় আছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। দুপুরে কয়েক পশলা হালকা বৃষ্টি হলেও বৃহস্পতিবার বিকেলটা ছিল মেঘ-রোদের লুকোচুরিতে মনোরম। এই ভরসাতেই টিকিট কাউন্টারে ভিড় জমিয়েছেন হাজারো ক্রিকেটপ্রেমী, শুক্রবারের সন্ধ্যায় সাকিব আল হাসান আর রশিদ খানের দ্বৈরথ দেখতে মুখিয়ে সবাই। প্রকৃতি যদি আক্ষরিক অর্থেই উত্তেজনায় জল ঢেলে না দেয়, তাহলে দারুণ এক ম্যাচই দেখা যেতে পারে সিলেটে। যেখানে আফগানিস্তান ও প্রকৃতিকে সামাল দিতে তৈরি সাকিবের বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কিছুদিন আগেই এখানে তিন ওয়ানডের সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। দুটো ম্যাচে তিনশোর ওপর রান করেছিল বাংলাদেশ, বলা যায় প্রতিপক্ষের বোলিংকে নিয়ে ছেলেখেলাই করেছিল। যদিও আফগানদের বোলিং আক্রমণকে আয়ারল্যান্ডের মতো নির্বিষ মনে করার কোনো কারণ নেই। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদের মতো স্পিনত্রয়ীর সঙ্গে নাভিন-উল-হক, ফজলহক ফারুকির পেস বোলিং।
তাদের বিপক্ষে রান তোলার কাজটা সহজ নয় কোনো প্রতিপক্ষের জন্যই। সাকিব আল হাসান অবশ্য প্রতিপক্ষের চেয়ে নিজেদের নিয়েই বেশি ভাবছেন, ‘লাস্ট দুইটা হোম সিরিজে আমরা ভালো খেলেছি। এটা আমাদের জন্য নতুন একটা চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তান অবশ্যই খুবই ভালো দল। চেষ্টা থাকবে, আমরা যেভাবে আমাদের ক্রিকেটটা খেলছি, যেভাবে উন্নতি করছি, সেভাবে প্রতিটা ম্যাচে পারফর্ম করার জন্য। কোনো পার্টিকুলার ইন্ডিভিজুয়াল কাউকে নিয়ে চিন্তাও করছি না। কিংবা আমাদের টিমও পার্টিকুলার কোনো ব্যাটার কিংবা বোলারের ওপর ভরসা করে না। আমরা চাই, আমরা টিম পারফরম্যান্স করি, যেটার মাধ্যমে আমরা জয়লাভ করতে পারি। বাট আমাদের ইন্টেনশনটা একই রকম রাখার চেষ্টা করব।’
শুধু প্রতিপক্ষ নয়, উইকেট কিংবা কন্ডিশন নিয়ে ভেবেও মাথা ভারী করতে চাইছেন না সাকিব, ‘আমার ধারণা কেউ উইকেট নিয়ে খুব বেশি কথাও বলেনি। আমি আর কোচ হয়তো একটু আলাপ করেছি। এছাড়া আমার ধারণা একজন প্লেয়ারও উইকেটের কাছে গেছে কি না আমি জানি না। আমি যেটা বললাম, আমরা কন্ডিশন নিয়ে চিন্তিত না। অবশ্যই আফগানিস্তান বড় একটা দল। বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এটাই আসলে আমাদের ভালো এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ যদি চিন্তা করি, আমাদের জন্য ভালো একটা সুযোগ ওদের ফেস করার। ওদের সম্পর্কে আরও বেশি জানার।’
প্রকৃতিতে চলছে বর্ষাকাল আর জায়গাটা সিলেট। মেঘালয়ের কাছের এই শহরে বৃষ্টি নামে হুট করেই। তাই দল বাছাই ও কৌশল নির্ধারণেও সতর্ক সাকিব, ‘আমাদের ইনস্ট্রাকশন থাকবে কোচ ও আমার তরফ থেকে সবাইকে প্রস্তুত থাকার জন্য। যেহেতু এমন একটা সিচুয়েশন বৃষ্টি আসতে পারে। শর্টার গেম হতে পারে। পাঁচ ওভার ম্যাচ হতে পারে, ১০ ওভারের হতে পারে, ১৫-১৮ ওভারের হতে পারে। আমাদের আসলে ওপেন থাকতে হবে। টসের আগ মুহূর্তেই আসলে আমরা ডিসাইড করতে পারব, কত ওভারের ম্যাচ হচ্ছে ও সেভাবে টিমটাকে দাঁড় করানোর।’
সিলেটের এই মাঠে অবশ্য এখন পর্যন্ত কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। খেলেছে দুটো ম্যাচ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটো ম্যাচে হেরেছিল ৭৫ রানে আর ৮ উইকেটে। দুটোই ২০১৮ সালে। সাকিব সেই ইতিহাস মুছে জিততে চান দুটো ম্যাচেই, তবে ফেভারিট নিজেদের ভাবছেন না মোটেই, ‘আমাদের দলে অবশ্যই লক্ষ্য দুইটা ম্যাচই যেন জিততে পারি। যদিও খুব একটা সহজ হবে না। আমাদের আশা এটাই থাকবে। ফেভারিট আপনি যাকে করেন (সাংবাদিককে)।’
প্রতিপক্ষ, প্রকৃতি সব বাদ দিয়ে সাকিবের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ আজকের ম্যাচে। নিজেদের পারফরম্যান্সেই বিশ্বাস রাখছেন সাকিব। এতদিন ধরে দেশে-বিদেশে টি-টোয়েন্টি খেলে খেলে একটা ব্যাপার সাকিব ভালো করেই বুঝেছেন, টি-টোয়েন্টিতে বলে কয়ে কিছু হয় না।
কিউএনবি/আয়শা/১৪ জুলাই ২০২৩,/দুপুর ২:০০