এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় এবার শারমিন সুলতানা জিনিয়া খাতুন নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বিধি বহির্ভূত ভাবে মেডিকেল ছুটি নিয়ে চীনে অবস্থান করছেন। মঙ্গবার (২৮ মার্চ) সরেজমিনে মাজালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেননি। গত ২৩ জানুয়ারী শারমিন সুলতানা উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের মাজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারী সর্বশেষ বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন তিনি। পরে চীন দেশে চলে গেছেন বলে আমি জেনেছি। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত ২৩ জানুয়ারী প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষক হিসেবে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন জিনিয়া। একমাস ক্লাশ নেওয়ার পর প্রথমে তিন দিনের নৈমত্তিক ছুটি নেন তিনি। জিনিয়া মেডিকেল ছুটি নিয়ে চীনে যাওয়ার জন্য প্রসেস করছিলেন। এরইমধ্যে চীন থেকে কাগজপত্র পেয়ে তিনি চীনে চলে যান। পরে তার বাবা মেডিকেল ছুটির দরখাস্তে আমার সুপারিশ নিয়ে যান। সে সময় তিনি জানান, এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সব জানেন। তবে ছুটি অনুমোদন হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকারা বলেন, মাস্টার্সের ব্যবহারিক একটি কোর্স করার জন্য তিনি চীনে চলে গেছেন। ওই শিক্ষিকা এভাবে দেশের বাইরে অবস্থান করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষিকারা আরো বলেন, জিনিয়া মাস্টার্সের ব্যবহারিক একটি কোর্স করার জন চিনে যান। এরমধ্যে করোনা শুরু হয়। ফলে কোর্স স¤পন্ন না করেই দেশে ফেরেন তিনি। প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষক পদে চাকরি পেয়ে যোগদান করেন। এখন করোনা শেষ হয়ে যাওয়ায় কোর্স স¤পন্ন করতে চীনে চলে গেছেন।
তবে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষিকার ছুটির কাগজপত্র উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা নেই।
ওই শিক্ষিকার পিতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, জিনিয়া বর্তমানে চীনে অবস্থান করছে। সেখানে সে মাস্টার্সের একটি কোর্স করছে। এরআগে উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বড়খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিশাত মুনাওয়ারা নামে এক সহকারী শিক্ষিকা মেডিকেল ছুটি নিয়ে আমেরিকায় স্বামীর কাছে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠলে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা শিক্ষা অফিসের তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হয়।
দীর্ঘ দিন যাবৎ ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও কিছুই জানেন না ওই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষাকর্মকর্তা নিছার উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যাইনি তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তিনি বলেন, এভাবে কেউ ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যেতে পারেন না। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই শিক্ষিকা মেডিকেল ছুটিতে আছেন। মেডিকেল ছুটি তোঅর্জিত ছুটি।
বিনা বেতনে ছুটি নিতে পারেন। পরে তিনি বলেন, ওই শিক্ষিকার বাবার সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। ওই শিক্ষিকা চাকুরি থেকে অব্যাহতিপত্র জমা দেবেন। যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা (ডিপিও) কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, এভাবে ছুটি নিয়ে চীনে অবস্থান করার কোনো বিধান নেই। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিবেদন পেলেই ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৮ মার্চ ২০২৩,/বিকাল ৫:২৪